বে -ওয়ারিশের ওয়ারিশ আমরা !!

এক রুমে কমপক্ষে ৫ জন। অল্প কয়েক একর জায়গা তে জটর জ্বালা, যন্ত্রণা, চিন্তা নিয়ে রাত কাটাচ্ছে নয় লাখ রোহিংগা। সেখানেই ডিউটি সুবাদে যাতায়াত। করোনা এখনও করুনা করছে ,হয়ত করবেই শেষ পর্যন্ত। তাছাড়া দেশের করোনা আক্রান্ত মৃত্যু লাশের খাটিয়া ধরা র লোক নেই ,আর তারা দেশের নাগরিক ,তাদের ই ওয়ারিশ নেই লাশ নেওয়ায়। রোহিংগা দের এমন হলে তো তার তালাশ করতে হবে এই পুলিশের।

পুলিশের বিভাগীয় পরীক্ষা য় নিয়মিত প্রশ্ন আসে ,অজ্ঞাত লাশ বা বে-ওয়ারিশ লাশ পাওয়া গেলে থানা র ওসি হিসাবে/ডিউটি অফিসার হিসেবে আপনার দায়িত্ব কি?

আশা করি সামনের দিনে এই প্রশ্ন আরো বেশী আসবে।সেক্ষেত্রে পুলিশ তো লিখে দিবে তার পরিবার কে পাওয়া যাবে না,আশে পাশের বাড়ি লক ডাউন, নিজেই কবর খুঁড়তে হবে,জানাজা পড়াতে হবে,অথবা ধর্ম অনুযায়ী পুলিশ ই তাদের সৎকারের ব্যবস্থা করবে বা নিজেই করবে।সর্বোপরি নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ প্রেরন করতে হবে।উপসংহারে লিখবে মহামারী আক্রান্ত লাশ এমনকি আক্রান্ত কোন বৃদ্ধ মানুষ জীবিত থাকলে ,বা বনে ,রাস্তায় পাওয়া গেলে তার ও ওয়ারিশ থানার দারোগা কে হতে হবে।

হাইতি মিশন থেকে সহকর্মী বলেছেন মিশনের অনেক দেশের পুলিশ নাকি বাংলাদেশের পুলিশ কে সকালে একবার বিকেলে এক বার salute দিচ্ছে শুধু মাত্র লাশের উওরাধীকার হওয়ার জন্য।

 

আরও পড়ুন:
লকডাউনের বিকল্প নাই, দরিদ্রের ঘরে খাবার চাই
মাগুরার শালিখায় বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা
করোনা : যুক্তরাষ্ট্রে আরো ৬ বাংলাদেশির মৃত্যু

এক পুত্র বিদেশে, আর দুজন দেশে ,একজন কোয়ারেন্টাইনে, আরেক জন স্ত্রী সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বাবা মারা গেছে ।পূর্ব হতে শ্বাসকষ্ট ছিল। মারা যাওয়ার আগে কেউ আসেনি ।এসেছিল বাসার দারোয়ান ।ভদ্রলোক দারোয়ানের প্রতি খুশি হয়ে লিখে দিছে বাড়ী ।মারা যাওয়ার পর দারোয়ান ও আক্রান্ত। এবার দারোয়ানের নিকট ঠিকই ঐ পুত্র বাড়ী ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য উপস্থিত। মজার ব্যাপার দারোয়ানের কাছে পুলিশের যেতে হচ্ছে না।

আপনার আপন ভাই যদি আপনার ডান হাত কেটে গলায় ঝুলিয়ে দেয়।আপনি কিন্তু ঝুলন্ত হাত নিয়ে সরাসরি থানার ওসির কাছে আসবেন মামলা দিতে।তাহলে পুলিশ আপনার আপনের ও আপন ভাই।
পুলিশ এটা মাথায় নিয়ে ই চাকুরি তে শপথ করে।পুলিশের এই মহৎ গুন অনেক আগেই প্রকাশ করতে চেয়েছে। কিন্তু আজ প্রয়োজন হয়েছে সেটি দৃশ্যমান করেছে।

আর যেহেতু বসুন্ধরা র এই আসমান জমিনে রক্তের কেউ আপনার মৃত দেহ ধরছে না।আর তার অভিভাবক হতে হচ্ছে পুলিশ কে,তাই পুলিশের অনুরোধে ঘরে থাকুন। নিজের লাশের অসহায়ত্ব
থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।

অযথাই মরিয়া প্রমাণ করার দরকার নেই যে আমাদের লাশের কোন ওয়ারিশ নেই।আর সত্যিই “আমরা মানে পুলিশ বে ওয়ারিশের ওয়ারিশ “

 

লেখক- ইমাউল হক, পিপিএম
পুলিশ পরিদর্শক ।

লেখকের আরও লেখা:
লাঠির হাতে লাশের খাটনি, এ যেন মেঘে ঢাকা তারার সন্ধ্যা !
আকাশের ঠিকানায় চিঠি
ঝোলায় ঝুলছে জীবাধার, মরনের হাট বাজারে যাযাবর
আমি কি বলি আমার তানপুরা কি তা বাজায়?
ইতালির চিঠি

এপ্রিল ১৪, ২০২০ at ২০:৪৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইহ/তআ