রাঙ্গুনিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম তালুকদারের মৃত্যুতে তথ্যমন্ত্রীর শোক

চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৫নং লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ সদস্য নুরুল আলম তালুকদারের ছোট ভাই এম. শাহ আলম তালুকদার (৬০)। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় নগরীর পার্কভিউ হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর।

আরো পড়ুন:

জাল জন্ম নিবন্ধনকারী প্রতারক ২রোহিঙ্গা নারীসহ আটক
> লালপুরে যুবলীগ কর্মী হত্যার মূল পরকিল্পনাকারী গ্রেফতার

আজ শুক্রবার বিকাল ৫ টায় ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডেস্থ ওয়াহেদ আকবর সিকদার পাড়া জামে মসজিদ মাঠে জানাজা নামাজ শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ৫ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।

এম শাহ আলম তালুকদারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

সমাজ হিতৈষি এম শাহ আলম তালুকদারের মৃত্যুর সংবাদে যুক্তরাজ্যে সফররত শোকাহত তথ্যমন্ত্রী প্রয়াতের আত্মার শান্তিকামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

তথ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় বলেন, এলাকাবাসীর সেবায় আত্মনিয়োগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সাবেক চেয়ারম্যান এম শাহ আলম তালুকদার জনহিতকর কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছিলেন এবং এলাকাবাসীর সেবায় আত্মনিয়োগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন।

মৃত্যুর বিষয়ে তাঁর ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, মৃত্যুর দুইদিন আগে তাঁর ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়েছিল আর আজ সকাল ৬ টার দিকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপিতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তিনি আরও বলেন, ২০০১১ সালে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত লালানগর ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। লালানগর বাসীর জন্য তিনি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন।

এম শাহ আলম তালুকদার ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী একজন সত্যিকারের মানুষ ও নতুন সৃজনশীল চিন্তার উদ্ভাবক। তরুণ হৃদয়ে দ্রোহের চেতনা জাগানোর অনিঃশেষ ক্ষমতা ছিল তাঁর। সমাজে ঘাপটি মেরে থাকা বিষবৃক্ষদের উপড়ে ফেলার দুরন্ত এক সাহসের নাম। যেখানেই অন্যায় অবিচার মাথাচাড়া দিত, প্রয়োজনে তিনি একাই দাঁড়িয়ে যেতেন। সব সময় সাহস নিয়ে সত্যিটা বলে দিতেন। কখনো মিথ্যার সঙ্গে আপস করেননি। আপাদমস্তক সৃজনশীল তুখোড় প্রতিভাবান এই মানুষটি তাঁর জীবনের সম্ভাবনাময় সময়টুকু বড় অবহেলায় শুধু মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন। দিন নেই, রাত নেই মানুষের কাছাকাছি থাকার প্রবল আকুতি তাঁর। অর্থের পেছনে ছুটা ও পরিবারের জন্য কিছু করার চিন্তা তাঁর চিন্তা-ভাবনায় কখনো ছিল না। দুঃখি মানুষের যে কথা কেউ শুনতো না, সেখানে তিনি ছিলেন ভরসাস্থল। অত্যাচারীর বুক তাকে দেখে দুরুদুরু কাঁপত। তিনি সবসময় দেশের মানুষ নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন, স্বপ্ন দেখতেন একটি সুখী-সমৃদ্ধ, শোষণ-বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক সমাজের।

এছাড়াও তিনি ছিলেন শিক্ষার আলো ছড়ানোর দ্যুতি। শিক্ষাকতা পেশাকে বেছে নিয়ে তিনি প্রথমে যোগ দেন রাঙ্গুনিয়া আলমশাহ পাড়া কামিল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে। এরপর রাঙ্গুনিয়া খিলমোগল রসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বার বার নির্বাচিত সভাপতি ও লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের সফল চেয়ারম্যান। একই সাথে তিনি ছিলেন উত্তর রাঙ্গুনিয়া তথা রাঙ্গুনিয়ার সমস্ত প্রগতিশীল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের পুরোধা ব্যক্তি এবং লালানগর উন্নয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

সেপ্টেম্বর ০১,২০২৩ at ২০:৩৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এম/ইর