আমি কি বলি আমার তানপুরা কি তা বাজায়?

লেখক- ইমাউল হক, পিপিএম
পুলিশ পরিদর্শক ।

বিদেশ থেকে যারা আসলো তাদেরকে বলা হলো কোরেন্টাইন থাকতে। হজ ক্যাম্পের অবস্থা খারাপ দেখে যে যার মতো চলে গেলেন। নিজেকে নিজের পরিবারকে নিজের সমাজ কে নিজে যাদের সাথে ওঠাবসা করেন সবাইকে ফাঁকি দিলেন। নিজের স্বজনদের মধ্যে মরণ রোগ করোনা ছড়িয়ে দিলেন।

নিয়মিত হাত ধোয়া, হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার লাগানো মুখে মাস্ক পড়া র নির্দেশনাকে কেউ কেউ মানলেন না।উপরন্ত কোনটা পড়া জরুরী কোনটা পড়ান জরুরী না তা নিয়ে তর্ক বিতর্ক ব্যাখ্যা শুরু হয়ে গেল। তাতে কি হল মা আক্রান্ত হয়ে মারা গেল পরবর্তীতে ছেলে-মেয়ের সেই রোগে আক্রান্ত হল। মাতৃ কোলে সন্তান সবচেয়ে নিরাপদ। এই নির্দেশ না মানায় সেটি অনিরাপদ হল।

যাদের সাধারণ সর্দি কাশি জ্বর শ্বাসকষ্ট গলা ব্যথা তারা হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গেলেন। ডাক্তার না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। সবার মধ্যে ভয় ধরিয়ে গেল। ১০০ বছর পর পর মহামারী ইতিহাসে এসেছে। বর্তমান ১০০ বছরের চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ডাক্তার মহোদয়দের সাহস সেবার মান মেধা ও মহত্ব বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন করে তুললেন।

মানুষ মানুষের হাত মিলানো অফিসে একসাথে কাজ করা বাজারে জনসমাগম সবকিছুর প্রতিরোধে পরিকল্পনা নিয়ে সরকার যখন জনস্বার্থে ছুটি দিলেন। এমনসময় স্ত্রী-সন্তান আত্মীয়-স্বজনসহ সবাই সমুদ্র সৈকত ও নিজ নিজ বাড়িতে বেড়াতে গেলেন। স্বজনদের মধ্যে নিজের কোনো সংক্রামক থাকলে সেটি দিয়ে আসলেন।

জনস্বার্থ চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনসমাগম রাধে লকডাউন শহর চলাচল সীমিত করতে বললেন। সেখানেও অমান্য করার লোকের অভাব নেই। প্রতিটি জন জীবন গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বড় বড় অনুষ্ঠান স্থগিত করলেন সেই বৃহৎ চিন্তা কেউ কেউ আমলে নিলেন না।

পিপি ই অজুহাতে এখনো সকল ডাক্তারগণ নিয়মিত হাসপাতালে আসেন না। বেসরকারি সকল ক্লিনিক ও চিকিৎসা কেন্দ্র এখনো খোলা নেই। এগুলো যারা করছেন তারাও আমাদের জনগণের বাইরের কেউ নয়। নিজ নিজ চিন্তার ফলাফলে অনেকেই চলাচল করছেন।

বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসা বিজ্ঞান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা, সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে চললে সংক্রামক রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারত। অতীত ইতিহাস তাই বলে।

গান গাইতে গেলে তানপুরার সঙ্গে গলা মেলাতে হয়। তাছাড়া যত বড় শিল্পী হোক না কেন সে গান হয় না কেউ তো শুনেও না। রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় একটি দেশের জনগণ যদি নির্দেশনা না মানে সেখানে শুধু করোনা নয় সব ধরনের রোগ ই সংক্রামক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

আসলে আমরা যেটা করা উচিত বলে মনে করি সেটা বাস্তবে করি না। যা মনে ধারন করি তা বাস্তবে পালন করতে পারি না। মনের সুর আর বাহ্যিক তান একসাথে লয় হয় না। শুধু অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে জানি। কেউ ভেবে দেখি না

“”‘আমি কি বলি আমার তানপুরা কিতা বাজায়”‘

লেখক-
ইমাউল হক, পিপিএম