বান্দরবানে সড়ক উন্নয়ন কাজের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সোনাইছড়ি ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গ্রামীন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মে অভিযোগ উঠেছে।

নি¤œমানের রড দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ ও বালু বদলে পাহাড়ে লাল মাটি ব্যবহার করে নির্মাণ করা হচ্ছে এসড়কটি। তাছাড়া অদক্ষ মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করায় ওয়াল নির্মাণ কাজেও অনিয়ম চলছে।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোনাইছড়ি ইউনিয়নে জনগনের নির্বিঘেœ চলাচলের জন্য ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের গ্রামী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১কোটি ২০লাখ টাকার বরাদ্ধ দিয়ে ১০০মিটার কার্পেটিং রান্তাকাজটি হাতে নেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বান্দরবান পার্বত্য জেলা। গত জানুয়ারি থেকে ওয়াল ও রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুইতে সড়কে বালুর বদলে পাহাড়ের লাল মাটি দিয়ে উন্নয়ন সড়ক কাজ চলছে বলে অভিযোগ তোলছেন স্থানীয়বাসিন্দরা।

অন্যদিকে শিডিউলে উন্নতমানের ইট, পাথর, রড ও সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার নিয়ম থাকলেও ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্মমানে রড ও পাহাড়ে লাল মাটি। এসব অনিয়ম যেন দেখার কেউ নেই। স্থানীদের অভিযোগ, এলজিইডির কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছেমতো নি¤œমানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সড়ক দূর্ঘটনা ও প্রতিকার

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের সোনাইছড়ি ইউপি অফিস কাওয়ারকোপ বাজার রান্তা মাথা হইতে নন্নকাটা (চিংথোয়াই পাড়া) সড়কটি উন্নয়ন কাজ চলছে। সে কাজে বালু বদলে পাহাড় কেটে লাল মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সড়কে ৫০ফুট লম্বা একটি গাইডওয়াল নির্মাণেও নিম্মমানের রড ব্যবহার করে কাজ চলমান রেখেছে। এলজিইডির তালিকাভুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আনন্তবিকাশ ত্রিপুরা কনস্ট্রাকশন লাইসেন্সে রাস্তাটি নির্মাণ কাজ করছেন বান্দরবান জেলার ঠিকাদার মহিউদ্দিন। এ কাজ পাইয়ে দেওয়া বড় অংকের অর্থ লেনদেনের তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। কাজটি বিষয়ে ঠিকাদার মহিউদ্দিন সাথে মোবাইল ফোনে বার বার কল দিয়েও রিসিভ করেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল রহিম অভিযোগ করে বলেন, জেলা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাথে যোগসাজশে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ের কাজটি করে যাচ্ছে ঠিকাদার মহিউদ্দিন। ওইনি তো কাজ শুরু সময়ের এবার এসেছিল। এসুযোগের কাজে শ্রমীকরা ইচ্ছামতো ভাল মানের রড না দিয়ে নিম্মমানের ব্যবহার করে গাইডওয়ালটি নির্মাণ করে চলছে।আর রাস্তা কাজে ও একই দুর্নীতি করেছে। পাহাড় কেটে বালুর বদলে পাহাড়ে লাল মাটি ব্যবহার করে সাথে সাথে রোলার দিয়ে মিশে দিচ্ছে। একই গ্রামের বাসিন্দা মোজাফর, মংক্যনু মারমা জানান, রাস্তা নির্মাণে অনিয়মে প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদারের লোকজন তা আমলে না নিয়ে রান্তাটির নির্মাণ কাজ দ্রæতগতিতে চলছে।
আরও পড়ুন: যবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে র‍্যাগ ডে

এবিষয়ে এলজিইডির তদারকি দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মহম্ম রেজাউল করিম (এসও) অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিম্মমানের রড ও লাল মাটি ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। আর আমি বলে দিচ্ছি ঠিকাদার আপনাদের সাথে দেখা করবেন। ভাই আমরা দুর্গম অ লে কাজ করি ভুলক্রুটি থাকতে পারে।

এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মফোজল হোসেন ভুয়ার বলেন, অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়। শিডিউল অনুযায়ী কাজ চলছে। জনবল সংকটে কারণে ঠিকমত তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু কাজে মান নিম্মমানের থাকতে পারে। তবে নিম্মমানে রড ও লাল মাটি ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। কাজের গুণগত মান দেখেই বিল পরিশোধ করা হবে।

অনিয়ম এবং নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা ও গাইডওয়াল নির্মাণ করায় স্থানীয় সচেতন মহলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দ্রæত তদন্ত করে শিডিউল অনুযায়ী কাজ বাস্তাবায়ন করার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।

দেশদর্পণ/এমএম/এসজে