মতলব উত্তরে এক অসাধু ব্যক্তির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে গ্রামবাসীর সংবাদ সম্মেলন

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছোট কিনাচক গ্রামের আঃ আজিজ প্রধানের ছেলে মোঃ কামরুল হাসান বাবুলের (৫৩) মিথ্যা মামলা, বিভিন্ন হয়রানি মূলক অপকর্ম ও অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামবাসী। ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে কিনাচক গ্রামের ভূক্তভোগীরা এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
এসময় ওই গ্রামের আঃ কাদের প্রধানের ছেলে মোঃ শাহআলম মিয়া সেন্টু (৪৫) বলেন, কামরুল হাসান বাবুল একজন দুষ্টু প্রকৃতির লোক। তিনি আমার বংশের লোক হলেও আমার ও গ্রামবাসীর উপর চরম অত্যাচার চালিয়ে আসছে। কেউ কোন কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তার এ মিথ্যা মামলার কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি। শাহআলম মিয়া সেন্টু আরো বলেন, বাবুলের বাবাও একজন মামলাবাজ। তার সেই ধারাবাহিকতা তিনি ধরে রেখেছেন। কারো সাথে যেকোন কিছু হলেই মিথ্যা মামলা সাজায়। আমি তার ভাইকে প্রবাসে নিয়েছিলাম। সেখানে তার কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পাই। ওই পাওনা টাকা কেন চাইলাম, তাই সে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। গ্রামের যারা সঠিক কথা বলেছে তাদেরকেও ১০৭ ধারায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। শুধু তাই নয় সাভারে আমাদের দুইটি ফ্ল্যাট রয়েছে, সেই ফ্ল্যাটগুলোতে ক্ষমতা খাটিয়ে তালা দিয়ে রেখেছে, যাতে আমরা ফ্ল্যাটে না যেতে পারি। তার এমন অত্যাচার থেকে আমরা গ্রামবাসী পরিত্রাণ চাই। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে একটাই দাবী জানাই কামরুল হাসান বাবুলকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা হউক।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, ছোট কিনাচক গ্রামের কাবিল মোল্লা, মহসিন মিয়াজী, সাইজ উদ্দিন মোল্লা। তারা বলেন, মোঃ কামরুল হাসান বাবুলের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। উনি ঢাকায় থাকে, আর মাঝে মাঝে গ্রামে এসে কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করে। তার বাবাও এমন প্রকৃতির লোক ছিল। যার জমির জমির সাথে জমি আছে, তাকেও মামলা দিয়ে হয়রানি করে আর জমি নিজের দাবী করে বাবুল। কেউ কিছু বললেই কোর্টে গিয়ে মিথ্যা মামলা সাজায়। কিছুদিন আগেও গত ২৯ জুন একটি ঘটনা দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ছোট কিনাচক গ্রামের নিরীহ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। তার একই এহেন নোংরারি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশপাশি প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ করছি বাবুলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা হোক।
কামরুল হাসান বাবুলের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন এলাকার নারীরাও। তারা বলেন, এলাকার কোন পুরুষ মাঠে কৃষি কাজ করতে গেলেও তাকে হয়রানি করে। যদি শোনে তার জমির পাশ দিয়ে কেউ হেটে গেছে, তাকেও মামলা দিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। আমরা তার এই মিথ্যা মামলাগুলোর কারণে আমরা ঠিকমত দু’মুঠো খেতে পারিছ না।
নুর মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমি শাহআলম মিয়া সেন্টুর সাথে ব্রিকস্ ফিল্ডের ব্যবসা করতাম। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম হল কাদের ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারস। কয়েকদিন চালানোর কিনাচক গ্রামের কামরুল হাসান বাবুলের চাঁদাবাজি ও শ্রমিকদের হয়রানি করার কারণে ব্যবসাটি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে আমাদের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। আমিও চাই এই দুষ্টু প্রকৃতির লোক কামরুল হাসান বাবুলকে আইনের আওতায় আনা হোক।
কামরুল হাসান বাবুল কর্তৃক দায়েরকৃত ১০৭/১১৭ (৩) ধারায় দায়েরকৃত একটি মামলার সাক্ষী শহিদ আলম বেপারী ও আকতার ভুইয়া বলেন, কামরুল হাসান বাবুল গত ২৯ ও ৩০ জুন ঘটনার তারিখ দেখিয়ে মামলা করেছেন ওই তারিখে তিনি গ্রামে ছিলেন না। তিনি ওই সময় ঢাকাতে ছিলেন। ওই তারিখে আমাদের গ্রামের এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি। আমাদের নাম সাক্ষী হিসেবে দিয়েছে আমরা নিজেরাই জানিনা। পরে জেনে বাবুলকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাদের বলেন, মিথ্যা সাক্ষী না দিলে আমাদের বিরুদ্ধেও মামলা দিবে।
সংবাদ সম্মেলনে মতলব উত্তর উপজেলা প্রেসক্লাবের কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ ও ছোট কিনাচক গ্রামের শত শত নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে কামরুল হাসান বাবুল মুঠোফোনে বলেন, সেন্টু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিয়েছে। এছাড়াও জায়গা সম্পত্তি নিয়েও সে আমাকে হয়রানি করছে। তাই তার বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি।
দেশদর্পণ/সুআ/মউপ্র/ইর