প্রায় ৫০ বছর পর রাশিয়ার চন্দ্রাভিযান

ছবি- সংগৃহীত।

চাঁদে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে বহুদিন ধরেই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা কাজ করে আসছে। তবে শুধু নাসা নয়, এবার রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা রসকসমসও হাঁটছে একই পথে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে (শুক্রবার) সংস্থাটি চাঁদে পাঠানোর জন্য নিজস্ব মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করবে।

তবে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের কথা ছিল আরও আগে। বেশ কয়েকবার বিলম্বের পর নিজেদের এককভাবে তৈরী মহাকাশযান ব্যবহার করে চাঁদে অভিযান পরিচালনা করছে দেশটি।

আরো পড়ুন :

> দুই বছরে ঝরে পড়ল সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী
> কক্সবাজারে বন্যায় ক্ষতি ১৪ কোটি টাকা, ২০ জনের মৃত্যু

গত ৫০ বছরের ইতিহাসে এটিই হবে রাশিয়ায় প্রথম চন্দ্র অভিযান। সর্বশেষ ১৯৭৬ সালের চাঁদে অভিযান পরিচালনা করেছিল দেশটি।

রসকসমসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “লুনা-২৫ নামের মহাকাশযানটি আগামী ১১ আগস্ট উৎক্ষেপণ করা হবে। চাঁদে মহাকাশযানটি মাটি পরীক্ষা থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় ধরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করবে।”

দীর্ঘ সময় পর উৎক্ষেপণের ব্যাপারটি ছাড়াও রাশিয়ার চাঁদে এই অভিযানটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পূর্বে মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে দেশটির ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সহযোগিতা গ্রহণের সুযোগ ছিল।

কিন্তু এবারের অভিযানে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির কোনো সহযোগিতা কিংবা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেনি রাশিয়া। কেননা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রসকসমসের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ইউরোপীয় সংস্থাটি।

সম্পর্ক ছিন্নের পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, দেশটি ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। তারা ইউরোপীয় সংস্থাটির যন্ত্রপাতির জায়গায় নিজেদের তৈরি যন্ত্রপাতি ব্যবহার শুরু করবে।

চাঁদে অভিযানের জন্য তৈরি লুনা-২৫ যেন তারই প্রমাণ। এটিতে রাশিয়ার তৈরি সব যন্ত্রপাতিই ব্যবহার করা হয়েছে। মহাকাশযানটির ওজন প্রায় ৮০০ কেজি।

চাঁদে অভিযানের ক্ষেত্রে মহাকাশযানগুলো সাধারণত উপগ্রহটির অতি পরিচিত স্থান বিষুবরেখায় অবতরণ করে। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে রাশিয়ার লুনা-২৫। মহাকাশযানটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে।

রসকসমসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, মহাকাশযানটি মস্কো থেকে ৫ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ভস্টকনি কসমোড্রোম স্পেস পোর্ট থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।

স্পেস পোর্টটি থেকে গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নই ছিল প্রথম রাষ্ট্র যারা ১৯৬১ সালে মহাকাশে মানুষ পাঠিয়েছিল। যদিও তখন চারদিক থেকে অনেক নিষেধাজ্ঞা ছিল।”

তখন পুতিন এও জানান, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মাঝেই মস্কো নিজেদের চন্দ্র অভিযান এগিয়ে নেবে।

পুতিন আরও বলেন, “আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইতিহাস থেকে অনুপ্রাণিত হই। যেকোনো প্রতিকূলতার মাঝে এবং বাইরে থেকে বাধা প্রদানের প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাবো।”

রাশিয়া এমন এক সময়ে এই মহাকাশযান পাঠাল, যা ভারতের চন্দ্রযান-৩ পাঠানোর সময়ের কাছাকাছি। তবে রসকসমস জানিয়েছে, রাশিয়া ও ভারতের মহাকাশযান একই এলাকায় অবস্থান করলেও তারা পরস্পরের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

আগস্ট ১০, ২০২৩ at ১১:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর