কোরআনের প্রতি যেভাবে সম্মান দেখাবেন

ছবি সংগৃহীত

মানব জাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। কোরআনের প্রতিটি কালাম বা বাণী আল্লাহ তায়ালা। এতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে মিশ্রিত মনগড়া কোনও বাণী নেই। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না, তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরিত হয়, তাকে শিক্ষা দান করেছেন প্ৰচণ্ড শক্তিশালী।’ (সুরা নাজম, আয়াত, ৩-৫)

পবিত্র কোরআনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য অবশ্য কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে এই কোরআন মহাসম্মানিত। কিতাব আকারে (লিখিত) সংরক্ষিত। পবিত্রগণ ছাড়া আর কেউ এটি স্পর্শ করে না। বিশ্বজাহানের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। (সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত, ৭৭-৮০)

হেদায়েতের বাণী কোরআন মাজীদের অনেক হক রয়েছে, তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হলো কোরআনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা, শুদ্ধভাবে কোরআন পড়তে শেখা, কোরআন অনুযায়ী আমল করা, অধিক পরিমাণ তেলাওয়াত করা, অনুধাবন ও উপলব্ধির চেষ্টা করা এবং কোরআনকে যথাযথ সম্মান দেয়া।

হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী (রহ.) পবিত্র কোরআনের সম্মান ও অধিকার আলোচনায় ৩টি অধিকারের কথা বলেছেন। সেগুলো হলো-

এক. বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করা,
দুই. কোরআনের অর্থ ও মর্ম অনুধাবন করা ও
তিন. জীবনের সর্বস্তরে কোরআনের অনুসরণ করা।

আরো পড়ুন :
>> মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ষে নিহত ২
>> অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পোস্টগ্রাজুয়েট চিকিৎসকরা

আলেমরা বলেন, কোরআনকে যথাযথ সম্মান প্রদানের অর্থ হলো, কোরআন, কোরআনের সূরা ও আয়াতসমূহ, কোরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ, এক কথায় কোরআন সংশ্লিষ্ট গ্রন্থাবলীকে এমন স্থানে না রাখা যাতে অসম্মান হয়। সেই সঙ্গে কোরআনের বিধি-বিধানকে উপেক্ষা না করা, কোরআনের ধারক ও বাহকদের সম্মান প্রদান করা ইত্যাদি।

এর পাশাপাশি কোরআনের বিধি-বিধান ও বর্ণনাসমূহের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং তা নিয়ে উপহাস না করা উচিত। কারণ, কোরআনের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন ও কোনওভাবে উপহাস করা ঈমানবিধ্বংসী কাজ। আল্লাহ তায়ালা কোরআন নিয়ে উপহাস করতে নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর আয়াতসমূহকে উপহাসের পাত্র হিসেবে গ্রহণ করো না। ’ -(সূরা বাকারা : ২৩১)

কোরআন অবমাননাকারীদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে চরম দুর্ভোগ ও ভয়াবহ শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। বর্ণিত হয়েছে, ‘দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী মহাপাপীর, যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে অথচ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে (নিজ মতবাদে) অটল থাকে। যেন সে তা শোনেইনি। সুতরাং ওকে মর্মন্তুদ শাস্তির সুসংবাদ দাও।’ (সুরা : জাসিয়া, আয়াত : ৭-৮)

কেউ কোরআনের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ নিয়ে অন্য বা কোনোভাবে কোরআন অবমাননা কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলে সে ইসলামের গণ্ডির বাইরে চলে যাবে এবং তাকে ইসলামী শরিয়তের ভাষায় মুরতাদ বলা হবে। এজন্য কোনও মুসলিমের জন্য কোরআন অবমাননার মতো জঘন্য অপরাধের কোনও সুযোগ নেই।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,

إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلَافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ

যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে দুশমনিতে লিপ্ত হয় এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির পাঁয়তারা করে, তাদের শাস্তি কেবল মৃত্যুদন্ড, শূলিবিদ্ধ করে হত্যা কিংবা হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা অথবা নির্বাসিত করা (কারাগারে নিক্ষেপ করা)। এ তো হল তাদের পার্থিব অপমান। আর পরকালেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (সূরা মায়েদা ৩৩)

জুলাই  ০৩, ২০২৩ at ১৪:১৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/শাস