নরসিংদীতে নারী লোভী পুলিশের নায়েক এরশাদুল হক যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, আদালতে মামলা

নরসিংদী জেলার বেলাবো থানার টঙ্গীর টেক এলাকার নারীলোভী প্রথম ও দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য গোপন করে তৃতীয় বিয়ে বিয়ে করা প্রতারক পুলিশের নায়েক এরশাদুল হক ভার্সিটি  পড়ুয়া অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ঝরনা আক্তার তৃতীয় স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে ব্যাপক নির্যাতন ও হামলা করেছে। নির্যাতন ও হামলার শিকার হয়ে অবশেষে স্ত্রী ঝরনা আক্তার বাদী হয়ে নরসিংদীতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে  ৪ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার টঙ্গীর টেক গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে প্রতারক পুলিশের নায়েক এরশাদুল হক। পারিবারিক ভাবে তাদের পরিবারে বহু বিবাহের প্রচলন রক্ষা করতে একের পর এক বিয়ে করে স্ত্রীদের নির্যাতন করে ছেড়ে দেয়।
প্রতারক এরশাদুল হক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নায়েক পদে চাকরি করে নিজেকে ক্ষমতাবান ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে দিনের-পর-দিন এ সকল অপকর্ম  চালিয়ে যাচ্ছে। একের পর এক সংসার ভেঙে অন্যের মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিনের পর দিন নারীঘটিত অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকায়।

> আল ইত্তিহাদে বেনজেমা!
> নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে গাছ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নরসিংদী জেলার মনোরদী থানার চন্দনবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল বাতেনের কন্যা শেফালীকে ৩১-৮-২০১৩ রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে প্রথম বিয়ে করে এরশাদ,  বিয়ের পর যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিয়ে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে ২৭-৩-২০২০ ইং তারিখে নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ভাঙ্গালগাঁও গ্রামের বেনজির মিয়ার কন্যা ফারিয়া আকতার তৃনাকে রেজিস্ট্রি কাবিন বলে দ্বিতীয় বিবাহ করে। বিবাহের পর উক্ত ফারিয়াকেও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করলে ফারিয়া নরসিংদীর বেলা বসি তে সিআর ২০০/২০ একটি মামলা করে। পরবর্তীতে উক্ত দুই বিবাহের কথা গোপন রেখে গত ৩১ ৭ ২০২২ ইং রবিবার ২৮০ জন আত্মীয়-স্বজন নিয়ে রেহেনা আক্তার স্বর্ণা, সাইফুল ইসলাম এবং বিউটি আক্তারের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার রায়েরগাঁও গ্রামের আব্দুস সাত্তারের কন্যা ঝরনা আক্তার (২৭) কে রেজিস্ট্রি কাবিন মুলে সামাজিকভাবে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ করে।
বিয়ের পর থেকেই তার তৃতীয় স্ত্রী ঝরনা আক্তারকে যৌতুকের দাবিতে একই কায়দায় নির্যাতন শুরু করে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে ঝরনাকে  তার শাশুড়ি রেহেনা আক্তার, ননদ বিউটি আক্তার ও ননদের জামাই সাইফুল ইসলাম নির্যাতন করে এবং বলে তার বাবার বাড়ি থেকে ১০ লক্ষ টাকা এনে দিতে। অবশেষে ঝর্ণা তাতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে বেদম মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বামী পুলিশের নায়েক এরশাদসহ অবশিষ্ট বিবাদীগণ হত্যার চেষ্টা করে। বহুকষ্টে ঝর্ণা আক্তার শশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এই ঘটনা সমঝোতার লক্ষ্যে ঝরনার এক আত্মীয়ের বাসায় একাধিক সালিশি বৈঠক বসে। তাতে কোনো সমাধান না পেয়ে গত ২২/৩/২০১৩ তারিখে নরসিংদী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি সি আর ৭/২৩ মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে স্বামী পুলিশের নায়েক এরশাদের প্রতারণা ও হামলায় আহত ঝরণা আক্তার জানান, স্বামী প্রতারণা করে পূর্বের দুটি বিয়ে গোপন রেখে আমাকে তৃতীয় বিয়ে করেছে। এছাড়া তার চারিত্রিক সমস্যাও রয়েছে অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। যৌতুকের জন্য এরশাদ ও তার পরিবারের লোকজন বেশ কয়েকবার নির্যাতন, হামলা ও আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে । তাদের নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই প্রতারক নির্যাতনকারী স্বামীর হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশের নায়েক এরশাদুল হক জানান, পারিবারিকভাবে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হাওয়ায় ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়। তারা আমার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেনা। প্রশাসনে আমার অনেক উর্দ্ধতন লোকজন রয়েছে। যদি তারা সমাধান করতে চায় তাহলে ঢাকায় আসুক আমি তাদের দেখে নেব ?

জুন ০৬, ২০২৩ at ১৫:১৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোমুহো/ইর