কমছে চাল-সবজির দাম, চিনিতে অস্বস্তি কাটেনি

ছবি- সংগৃহীত।

ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাজারে আসা শুরু হয় আমন ধানের নতুন চাল। এতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে কিছুটা কমতে থাকে চালের দাম। নতুন বছরে জানুয়ারিতেও দাম কমার এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে সেটা স্বস্তির পর্যায়ে পৌঁছেনি। বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ার পরও কেজিতে দাম কমছে মাত্র দু-তিন টাকা। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে চালের বাজার এখনো অনেক চড়া।

তবে সে তুলনায় পৌষের শুরু থেকে স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। শীতের সবজির ভরপুর সরবরাহ থাকায় দামও অনেক কম। নতুন করে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। অন্যদিকে এখনো কাটেনি চিনির সংকট। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় দুই মাস ধরে বাজারে চিনির সংকট। পাইকারি বাজারে পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা চিনির কেজি ১০২ এবং মোড়কজাত চিনির কেজি ১০৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এরপরও বেশিরভাগ জায়গায় চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও পাওয়া গেলেও ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে। একই দরে বিত্রিক্র হচ্ছে খোলা চিনিও। তবে এর চেয়ে অনেক বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আখের লাল চিনি। মোড়কজাত এ ধরনের চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।

দাম বেড়েছে আটার‌। খোলা আটা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটা ৭০-৭৫ টাকা। চিনির বাজারে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। বেশিরভাগ দোকানে প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না। কিছু দোকানে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার। দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা।

আরো পড়ুন:
>চার দিনব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট শুরু
>মায়ের সম্পত্তি দেখতে খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

মাছ-মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা দরে। সোনালী মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারভেদে ৭০০-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মাছের দামও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে।

বাজারগুলোর বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন প্রচুর শীতের সবজি রয়েছে। প্রায় সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেশ ভালো। ফলে শীতকালীন সবজির দাম এখন কমতির দিকে। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-চিনি-তেলেসহ প্রায় সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে।

রাজধানীর জিগাতলা সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আনিস মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, বাজারে এখন অনেক শীতের সবজি রয়েছে। শীতকালীন সবজির দাম এখন কমতির দিকে। শীতের সবজির দাম কমার কারণে সারা বছর পাওয়া যায় এমন সবজিগুলোর দামও ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে নেমেছে। তিনি আরও বলেন, সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম আরও কমতে পারে।

আরো পড়ুন:
>চার দিনব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট শুরু
>মায়ের সম্পত্তি দেখতে খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা রিকশাচালক রিপন মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, শীত আসার কারণে সবজির দাম কমেছে, সেটা ভালো। কিন্তু মোটা চালের দাম এখনো আকাশছোঁয়া। তেল, চিনি, ডালের দামও বাড়ার পর আর কমছে না। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এখন আমনের ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে আগুন। মোটা চালের দামও নাগালের বাইরে। মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে!

জানুয়ারি ০৬.২০২৩ at ১১:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর