আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন করিম বেনজেমা

ছবি: সংগৃহীত

র্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালের হারের শোক এখনও কাটেনি ফ্রান্সের। গত রাতেই তো স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের। শিরোপা হারানোর ব্যথায় ফরাসীরা যখন কাতর, তখন এলো আরকটি মন খারাপের খবর। আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন করিম বেনজেমা। নিজের ৩৫তম জন্মদিনের দিন এক টুইট বার্তা অবসরের বিষয়টি নিশ্চত করেছেন ফরাসী এই তারকা ফরোয়ার্ড। এবারের বিশ্বকাপে ফ্রান্সের অন্যতম ভরসার জায়গা ছিলেন বেনজেমা। কিন্তু চোটের কারণে বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় তার। মাঝে গুঞ্জন ওঠে, ফিট হয়ে ওঠায় ফ্রান্সের বিশ্বকাপ মিশনে যোগ দিচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা ফরোয়ার্ড। সেটা গুঞ্জই থেকে যায়। একইভাবে ফাইনালের আগে তার ফেরার খবরও বাস্তবে রূপ নেয়নি।

আরো পড়ুন:
> যশোরে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে হারালো বাংলাদেশ
> ভূমি অধিগ্রহণ ও যন্ত্রপাতি কেনা স্থগিত করলো সরকার

উল্টো রহস্যময় এক পোস্ট দিয়ে বেনজেমা লেখেন, ‘আমি আগ্রহী নই।’ পরে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খর আসে, রিয়াল মাদ্রিদে নিয়মিত অনুশীলন করে ফিট হয়ে ওঠা বেনজেমা আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশমের অনিচ্ছার কারণে সেটা হয়নি। তবে কি সেই ক্ষোভ থেকেই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে নিলেন বেনজেমা? এই প্রশ্নটি উঠেই যাচ্ছে।  জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণায় বর্তমান ব্যালন ডি’অর জয়ী লিখেছেন, ‘আমার চেষ্টা, ভুল মিলিয়েই আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে। এবং এসবের জন্য আমি গর্বিত। আমি আমার গল্প লিখেছি এবং আমাদের গল্প শেষ হচ্ছে।’ নিজের একটি ছবি পোস্ট করে এসব লেখেন বেনেজমা। ২০১৪ বিশ্বকাপ মিশনে ফ্রান্স দলের সদস্য ছিলেন বেনজেমা।

ছবি: সংগৃহীত

পরের বছর সেক্সটেপ কাণ্ডে সতীর্থকে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। সাড়ে পাঁচ বছর গত বছরের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়শিপের স্কোয়াড দিয়ে ফ্রান্স দলে ফেলেন বেনজেমা। এরপর দারুণ পারফরম্যান্সে হয়ে ওঠেন দলের কাণ্ডারী। দারুণ ছন্দে থেকে যখনই বিশ্বকাপ রাঙানোর স্বপ্ন দেখছিলেন, তখনই এক ঝটকায় সব শেষ হয়ে তার। গত কয়েক বছরে অসাধারণ পারফরম্যান্সে রিয়াল মাদ্রিদের ত্রাতা হয়ে উঠেছেন ফরাসী এই ফরোয়ার্ড। গত মৌসুমে রিয়ালের রেকর্ড ১৪তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বেনজেমার। দলের দুঃসময়ে তিনি ছিলেন কাণ্ডারীর ভূমিকায়। যখনই দল বিপদে, তখনই আলোক বর্তিকা হাতে ছুটে এসেছেন তিনি। ১৫ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন বেনজেমা। এর মধ্যে ১০টি গোলই করেন নকআউট পর্বে। ইউরোপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার-ফাইনালে বেনজেমার হ্যাটট্রিকেই পিএসজি ও চেলসিকে হারায় রিয়াল। সেমি-ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ভাগ্য নির্ধারণী গোলটিও করেন তিনি। একইভাবে লা লিগায়ও দুর্বার ছিলেন বেনজেমা।

ছবি: সংগৃহীত

 

রিয়ালের শিরোপা জয়ের মিশনে ৩২ ম্যাচে ২৭ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন তিনি। ফ্রান্সের নেশন্স লিগ জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বেনজেমা। চার দলের ফাইনালসের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে একটি করে গোল করেন তিনি। ২০০৭ সালে ফ্রান্স জাতীয় দলে অভিষেক হয় বেনজেমার। এরপর ফরাসীদের হয়ে ৯৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি, যেখানে তার গোল ৩৭টি। ক্লাবের মতো জাতীয় দলেও তার উজ্জ্বল রেকর্ড থাকতে পারতো, কিন্তু সাড়ে পাঁচ বছরের জন্য দলের বাইরে থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি।

ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ at ২১:৫২:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/ইমস