গাইবান্ধায় তদন্তে ছাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, তদন্ত প্রত্যাখ্যান অভিভাবকদের

শিক্ষকদের পক্ষে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে উচ্চস্বরে ছাত্রীদের সাথে কথাবার্তা ও কৌশলে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুর কিয়ামত উল্যাহ মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তদন্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন অভিভাবকরা।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে তফশীল গোপন করে পছন্দের লোকজনের কাছে মনোনয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে যোগসাজশ করে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পায়তারার অভিযোগে গঠন হওয়া তদন্ত কমিটিতে স্বাক্ষ্যগ্রহন চলাকালে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। গাইবান্ধা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ আলমগীর হুসেন এই পক্ষপাত করেছেন বলে অভিযোগ অভিভাবক ও ছাত্রীদের।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দারিয়াপুর কিয়ামত উল্যাহ মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য গত ৫ এপ্রিল তফশীল ঘোষনা করা হয়। তফশীলে বলা হয়, ৯ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদান করতে হবে। এতে পাঁচজন মনোনয়নপত্র কেনেন ও চারজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। নিয়ম বহির্ভুতভাবে মনোনয়ন গ্রহন না করে একজনকে জামানতের ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদানের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর তফশীল প্রকাশ করা হয়েছে দাবি তুলে কয়েকজন অভিভাবক জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফুল আলম গত ২০ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হুসেনকে আহবায়ক করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে দেন। রবিবার মোহাম্মদ আলমগীর হুসেন বিদ্যালয়ে তদন্ত সম্পন্ন করেন।

আরো পড়ুন :
ঈদযাত্রা ভোগান্তি মুক্ত রাখতে মানিকগঞ্জে সভা
ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ওপার বাংলার দেবব্রত’র কণ্ঠে “যাচ্ছে তো এভাবেই” এ্যালবামটির গান

তদন্ত প্রসঙ্গে ল²ণ, রতন, স্বপন ও মওলাসহ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর তফশীল প্রকাশ করা হয়। শ্রেণিকক্ষে কোন তফশীল নোটিশ আকারে পড়ে শোনানো হয়নি ছাত্রীদের। বিষয়টি তদন্ত কমিটিকে জানাই। এরপর তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে অভিভাবকদের ও ছাত্রীদের উচ্চস্বরে ধমকের সুরে কথাবার্তা বলেন ও তোমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে উল্লেখ করে কৌশলে ছাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

কেননা পরবর্তীতে এর প্রভাব পড়বে পরীক্ষাসহ শিক্ষকদের বিভিন্ন আচরণে। এতে করে অভিভাবক ও ছাত্রীরা ভীত হয়ে পড়লে আমরা তদন্ত প্রত্যাখ্যান করি। আর মোহাম্মদ আলমগীর হুসেনকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে তিনিই তো ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রিজাইডিং অফিসার। তাহলে তদন্ত নিরপেক্ষ হবে কেমন করে। তাই পুনরায় তফশীল ঘোষনার দাবি জানান বিদ্যালয়টির অভিভাবক ও ছাত্রীরা।

তফশীল দেরীতে প্রকাশ করার অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. তৌহিদুল ইসলাম খসরু দাবি করেন, তফশীলের নোটিশ পাওয়ার পর ৭ এপ্রিল নোটিশটি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে লাগিয়ে দেওয়া হয় ও শ্রেণিকক্ষে নোটিশ আকারে পড়ে শোনানো হয় ছাত্রীদের। সেই সাথে বিদ্যালয়ের গেটের বাহিরের অংশে দেওয়ালে সেঁটে দেওয়া হয় তফশীল।

পক্ষপাতের অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ আলমগীর হুসেন বলেন, গত ২০ এপ্রিল বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক ও আবদুর রশিদ নামের এক অভিভাবক লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। যা তদন্তের স্বার্থে জানানো যাচ্ছে না। এছাড়া অভিভাবক গগণ, রতন, স্বপন ও মওলাসহ ছাত্রীরা মৌখিক বক্তব্যে বলেছেন তারা তপশীল ঘোষণার বিষয়ে কিছু জানেন না। আগামী মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলেও জানান তিনি।

এপ্রিল ২৪,২০২২ at ১৭:৩৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সুকুব/রারি