পেকুয়ায় স্কুল পরিচালনা কমিটির তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ

কক্সবাজারের পেকুয়ার টৈটং উত্তরপূর্ব সোনাইছড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার (১লা মার্চ) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলা টৈটং ইউপির হাজি বাজার উত্তরপূর্ব সোনাইছড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার টৈটং উত্তরপূর্ব সোনাইছড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসএমসি কমিটির নির্বাচনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম গোপনে তফসিল ঘোষণা করে তাঁর ভাই দিদারুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করার লক্ষ্যে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছিলো। এছাড়াও গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর ৪জন অভিভাবক সদস্যের নাম প্রস্তাব করেন। এমনকি তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছে বলেও সুপারিশ করা হয়। তারা হলেন, শাহজাহান করিম, সরওয়ার আলম, মারুফা বেগম ও মজিদা বেগম। অথচ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তফসিল ঘোষণা এবং অভিভাবক সদস্যদের তালিকা জমা দেওয়ার বিষয়ে দাতা সদস্য ও বর্তমান সভাপতিকে অবগত করা হয়নি।

আরো পড়ুন :
বদলগাছীতে খাস আদায়ের নামে ভান্ডারপুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়
কাহালুতে ভোটার দিবস উপলক্ষে র‍্যালী ও আলোচনা সভা

কিন্তু নিয়ম অনুসারে সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা করতে হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাঁর ভাই দিদারকে গোপনে সভাপতি মনোনীত করার জন্য এসএমসি কমিটির নিয়ম ভঙ্গ করে গোপনে তফসিল দিয়ে কমিটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে। উক্ত বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য এবং বর্তমান সভাপতি সাহাবউদ্দিন সিকদার এমইউপি বিষয়টি জানতে পেরে ওই বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর। শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষককে ফোন করে সভাপতি কে নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করে মিমাংসা করার জন্য বলে। পরে ঘটনার দিন বিকালে সভাপতি শাহাবুদ্দিন ও দাতা পরিবারের বেশ কয়জন সদস্যকে নিয়ে স্কুলে যায়। ওখানে কথা-কাটাকাটি হলে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও তার ভাই দিদার হামলা চালায়। এমনি দিদার প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে সবাইকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও টইটং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তার ভাই দিদারকে সভাপতি মনোনীত করার জন্য আমাদের সকলের অগোচরে গোপনে তফসিল ঘোষণা করে কমিটি গঠনের চেষ্টা করে। যা এসএমসি কমিটির নিয়ম ভঙ্গ করার সামিল। আমরা বিষয়টি তার কাছে ব্যাখ্যা চাইলে উল্টো হামলা করে। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করছি।

এদিকে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান তফসিল অনুযায়ী বর্তমান সভাপতি কোন ভাবে কমিটিতে আসতে পারে না। তিনি ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার।কিন্তু আমার স্কুল ৮ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। তাই ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার কে সদস্য করার বিধান রয়েছে। আমার স্কুলে বর্তমান সভাপতির কোন সন্তান নেই। তিনি কোন অভিভাবক ও নন। অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন অস্ত্র নিয়ে কেউ আসেনি। তারাই লাঠিসোটা নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করতে এসেছে। গোপনে অভিভাবক সদস্য মনোনীত করছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন নিয়ম অনুযায়ী তফসীল প্রকাশ করেছি। অতিরিক্ত কেউ ফরম না নেওয়ায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এখানে আত্মীয় করণের কোন প্রশ্নই আসে না। আমি প্রশাসনের হস্তেক্ষেপ কামনা করছি।এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার এসআই হেবজুল বলেন,খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 মার্চ ০২.২০২২ at ১৩:২১:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দপপক/এমএইচ