সাব-রেজিস্টার শাহেদুলের দুর্নীতির ফলে অসহায় এক হিন্দু পরিবার

বাগেরহাটের চিতলমারী ‘সাব-রেজিস্টার এস এম শাহেদুল ইসলামের দুর্নীতির কারণে তাদের মাছের ঘের ও ফসলি জমি দখলবাজরা রাতের আধারে দখল করে নিচ্ছে। নিঃস্ব হতে চলেছে এক হিন্দু পরিবার। এখন সুবিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে ও পরিবারের সদস্যরা। পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য গত বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারী) বিকাল ৫টায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ সব তথ্য তুলে ধরেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কুরমনি গ্রামের মৃত প্রতুল বড়ালের (অব: পুলিশ সদস্য) ছেলে লিটন বড়াল।

সংবাদ সম্মেলনে লিটন বড়াল বলেন, উপজেলার কুরমনি মৌজার জেলএল নং-০৮, সিএস খতিয়ান-০৯, এসএস খতিয়ান-৩৬, বিআরএস খতিয়ান-৫৪২, এসএসদাগ নং-৫৬, ৫৭, ৬৩, বিআরএস দাগ নং-৫৬৩, জমির পরিমান-১০৮ শতক। তফসিল বর্নিত সম্পত্তি আমি ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত। আমার পূর্ব পুরুষগণ ওয়ারিশ ও ক্রয় সূত্রে মালিক। আমি উক্ত জমির সর্বশেষ ১৪২৮ সালের সরকারি সকল কর খাজনা পরিশোধ পূর্বক ভোগ দখলে আছি। কিন্তু গত ২২-০৫-২০১৯ ইং তারিখ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার এস এম শাহেদুল ইসলাম ৯৩২/১৯ ও ৯৩৩/১৯ নং দুটি দলিলে আমার উক্ত তফশীলিয় জায়গা পাওয়ার (আমমোক্তারনামা) দলিল করে দেন। দলিল দুটিতে যে ডিপি খতিয়ান ৪৪৩ পর্চা দেওয়া হযেছে তার মালিক খলিশাখালী গ্রামের মৃত সুকলাল বিশ্বাসের ছেলে রুহিদাস বিশ্বাস। কিন্তু দলিলে দাতা হিসাবে পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মৃত শরৎ চন্দ্র গুহের ছেলে ননী গোপাল গুহ, পরানপুর গ্রামের মৃত চিত্ত রঞ্চন রায়ের ছেলে শেখর রায় ও পার্থ প্রতিম রায়কে দেখানো হয়েছে।

তাছাড়া যে ওয়ারিশ কায়েম সদনপত্র দেয়া হয়েছে তাও ভূয়া। তাতে চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের কোন স্মারক নাই। সাব-রেজিষ্ট্রার এস এম শাহেদুল ইসলামের করা ওই তঞ্জকিয় ওই দলিল নেওয়ার পর গ্রহিতা নাসিমা বেগম ও আব্দুল লতিফ খান উক্ত জমিতে গত ১৫ জানুয়ারী রাতের আধাঁরে ঘর তুলে দখলে নিয়েছে। যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও জবর দখলের শামিল। জমি দখলের পর থেকেই ওই প্রভাবশালীরা আমাকে দেখে নেবে বলে বিভিন্ন স্থানে বসে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। আমার হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু পরিবারের লোক। বর্তমানে আমি খুবই অসহায় ও ভীতসন্ত্রস্থ। তারা এতটা হিংস্র্য যে কোন সময় আমার উপর আক্রমন চালিয়ে আমাকে খুন জখম করতে পারে। এর পূর্বে ওই সাব-রেজিষ্ট্রার সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত জমিসহ আরো অনেক ত্রুটিপূর্ণ জমির দলিল রেজিষ্ট্রি করেছেন।

আরো পড়ুন :
রতিটি গ্রাম শহরে রুপান্তরিত হচ্ছে- এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল
রাজশাহীতে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে ছিনতাই, স্বামী-স্ত্রীসহ গ্রেফতার ৪

লিটন বড়াল আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ সাব-রেজিষ্ট্রার এস এম শাহেদুল ইসলামের জন্য আজ আমরা গোটা পরিবার সর্বশান্ত হতে চলেছি। আমি ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করি। সেই সাথে উক্ত তঞ্জকীয় দলিল দুটি বাতিলের দাবি জানাই। এই দলিলের কারনে আমার জান-মালের কোন ক্ষতি হলে এর জন্য ওই দুর্নীতিবাজ সাব রেজিষ্টার এস এম শাদেুল ইসলাম দায়ি থাকবে।

এ ব্যপারে কিভাবে ওই দলিল করা হলো তার সন্তোষজনক কোন উত্তর দিতে না পারলেও সাব-রেজিস্টার এস এম শাহেদুল ইসলাম বলেন, কোন দলিল করার সময় দাতা ও গ্রহীতা উভয় পক্ষই উপস্থিত থাকেন। দাতার হলফনামা ও দলিল লেখকদের তথ্যের ভিত্তিতে দলিল করা হয়। এখানে যদি কোন পক্ষ ভুল তথ্য দিয়ে দলিল করায় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

জানুয়ারী ২৩.২০২২ at১৬ :২০ :০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএস/এমএস