পেকুয়ায় দখলবাজদের কবল থেকে জায়গা রক্ষা করতে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিজের ক্রয়কৃত জায়গা দখলবাজদের কবল থেকে রক্ষা করতে সংবাদ সম্মেলন করছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

২৯ ডিসেম্বর রাত ৮ টায় পেকুয়া উপজেলা অনলাইন প্রেস ক্লাব হলরুমে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পেকুয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও পপুলার ফার্মেসীর মালিক মোস্তাক আহমদ ও তার পুত্র আজমাউল ফাহিম পিয়াস।

ভুক্তভোগী পরিবার মোস্তাক আহমদের পুত্র আসমাউল ফাহিম পিয়াস লিখিত বক্তব্য এ বলেন বিগত ২৩/০৫/১৯৯৯ ইং তারিখে ১৮৯০ নং রেজিস্ট্রি কবলামূলে পেকুয়া মৌজার বি এস ১১০৮ নং খতিয়ানের বি এস ১৯৮৫ দাগের আন্দর ১৬ শতক জমি ক্রয় করেন আমার পিতা মোস্তাক আহমদ।

একই সময়ে কামাল হোছাইন ১৮৮৯ নং রেজিস্ট্রি কবলামূলে একই খতিয়ানের একই দাগের আন্দর ২৪ শতক জমি ক্রয় করেন।

সেই সময় কামাল হোছাইন তার পছন্দমত ২৪ শতক নাল জামি সড়ক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় তা বেঁচে নিয়ে পেকুয়া আদর্শ মহিলা মাদ্রাসা তৈরিসহ বাকি জায়গা ভোগদখল আসছেন। আমাদের ১৬ শতক জায়গাটি পরিত্যক্ত ও জলাবদ্ধতা থাকায় আমাদের বুঝিয়ে দেন। পিতা সহজ সরল হিসেবে তার কোন ধরণের প্রতিবাদ করেনি। যার নামজারী খতিয়ান নং ৩১৮৪।

সর্বশেষ আমাদের জায়গার পাশ দিয়ে ডিসি রুট নামে একটি সড়ক হলে গত এক বছর আগে আমরা জায়গা সংস্কার করতে গেলে কামাল হোছাইন বাধা প্রদান করেন। তিনি আমাদের কাছ থেকে অনৈতিক ও জোরপূর্বকভাবে ৪ শতক জমি দাবী করেন। তিনি একেক সময় একেক দাবী উত্থাপন করেন।

এ নিয়ে তিনি বাদী হয়ে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে আমার পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। গ্রাম আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে আমার পিতার ক্রয়কৃত ১৬ শতক জায়গা প্রাপ্ত বলে রায় প্রদান করেন। কামাল হোছাইন অবৈধভাবে আমাদের জমি জবর দখল চেষ্টা করতেছেন বলে রায়ে উল্লেখ করেন।

এই রায়ের পর তিনি আমাদেরকে হয়রানি করতে সস্ত্রাসী ভাড়া করে আমাদের ঘেরাও ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন। সেই সময় কামাল হোছাইনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভিডিও ভাইরাল হয়।

এরপর কামাল হোছাইন বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে থানা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন। ওই সময় দুই পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে কামাল হোছাইনসহ আমরা সরাসরি উপস্থিত হয়ে জায়গা পরিমাপ করে আমাদেরকে ১৬ শতক আর কামাল হোছাইনের দখলে মাদ্রাসার অবকাঠামোসহ ২৪ শতক জায়গা বুঝিয়ে দেন।

বিষয়টি দুই পক্ষ মেনে নিয়ে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার কে অবগত করার পর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের সীমানায় পাঁকা দেয়াল নির্মাণ করি।

এরপর শান্তিতে চললেও কিছুদিন আগে কামাল হোছাইন বাদী হয়ে মাননীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালত চকরিয়ায় একটি অপর মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৯১৩/২০২১ ইং। একই সাথে তিনি আমাদের ভোগদখলীয় জায়গায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর আমরা বিজ্ঞ আদালতে বিজ্ঞ আইনজীবী দিয়ে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করলে তৎমতে বিগত ১০/১০/২০২১ এ দেয়া অন্তবর্তীকালীন আদেশ বিজ্ঞ আদালত বয়কট করেন।

আরো পড়ুন :
চৌগাছায় ২টি চোরাই গরু, পিকাআপসহ চোর আটক
জনতার উত্তাল ঢেউয়ে হাসিনার পতন অত্যাসন্ন- ঝিনাইদহে নিতাই রায় চৌধুরী

আর কোন কৌশল না পেয়ে তিনি আবারো অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি প্রদান শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি তার কৌশল বদল করে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাদ্রাসার সড়ক জবর দখল করেছি আমরা এই মর্মে সাংবাদিক ভাইদের নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন কামাল হোছাইন। তিনি সেখানে সাংবাদিক ভাইদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন।

আমাদের বুঝিয়ে দেয়া পরিত্যক্ত জায়গা দিয়ে কখনো সড়ক ছিলনা। এমনকি আমাদের ১৬ শতক জায়গার মধ্যে আমরা পেয়েছি ১৫ শতক জায়গা। বর্তমানে সেই জায়গায় কোন ধরণের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা নাই। এই ক্ষেত্রে তিনি আবারো পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিক ভাইদের ভুল বুঝিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোট পর্যন্ত আমাদের জায়গায় কাজটির বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন। আমরা সেই অনুরোধ রক্ষা করেছি। আমাদের জায়গায় কোন ধরণের নিষেধাজ্ঞা নাই এবং মাদ্রাসার কোন ধরণের সড়কও ছিলনা। মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার জন্য দীর্ঘবছর ধরে পৃথক সড়ক ব্যবহার হচ্ছে।

আমি আপনাদের মাধ্যমে মহিলা মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলতে চাই, তিনি আমার পিতার ক্রয়কৃত জমি জবর দখল চেষ্টা চালাচ্ছেন মাদ্রাসার নাম করে। আগে জোরপূর্বক জায়গা দাবী করলেও এখন আমাদের জায়গার উপর দিয়ে মাদ্রাসার নাম দিয়ে সড়ক দাবী করতেছে শুধু শত্রুতা বজায় রাখার জন্য। প্রশাসন ও সাংবাদিক ভাইয়েরা চারপাশে অবস্থিত বসতির লোকজনের কাছ থেকে গোপনে তদন্ত করলে এই জায়গার উপর কোন ধরণের সড়ক ছিল কিনা তার তথ্য অবশ্যই বের হয়ে আসবে।

আমরা এই মামলাবাজ, মিথ্যা অপপ্রচারকারী ও আমাদের জায়গা জবরদখল চেষ্টাকারীর কামাল হোছাইনের নির্যাতন আর অত্যাচার থেকে বাঁচতে চাই। আমরা নিরহ অসহায় মানুষ। পেকুয়া বাজারে ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সেখানেই আমাদেরকে হয়রানি করে যাচ্ছে।

তিনি অহরহ অভিযোগ দিলেও আমরা শুধু আমাদের জায়গার কাগজপত্র নিয়ে হাজির হয়ে শুনানি করে রায় নিয়েছি। কিন্তু কখনো তার বিরুদ্ধে মামলা করার চিন্তা করি নাই। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তার চাঁদাবাজি ও জবরদখল চেষ্টা অব্যাহত রাখলে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।

আমি সকল সাংবাদিক ভাইদের কাছে অনুরোধ করছি আপনারা সঠিক কাগজপত্র বিশ্লেষন করে সঠিক তথ্যটা তুলে ধরলে আমরা উপকৃত হবো। আপনাদের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকাবাসী, সুশীল সমাজ, শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থী, স্থানীয় প্রশাসন ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ডিসেম্বর ২৯.২০২১ at ২২:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমজু/রারি