কক্সবাজারে স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ

প্রতিকি ছবি

স্বামী-সন্তানকে আটকে রেখে রহস্যঘেরা গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই কক্সবাজার পর্যটন নগরীর আরেকটি হোটেলে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। তবে, ঘটনার দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও অভিযুক্তরা গ্রেফতার হননি। উল্টো মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কিশোরী ও তার পরিবার।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) তুলে নিয়ে শহরের কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনের একটি হোটেলে আটকে রেখে তাকে দুদিন ধর্ষণ করে বখাটে এক যুবক। এ ঘটনায় রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) কক্সবাজার সদর থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। তবে মামলার প্রায় ১০ দিন হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা পলাতক।

আসামিরা হলেন-কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মো. আশিক (২৭) ও তার মা রাজিয়া বেগম (৫৫), বাবা নজরুল ইসলাম (৬০), ভাই মো. কামরুল (৩৪) এবং শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকার মো. হায়দার ওরফে হায়দার মেম্বারের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৪০)। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী (১৪) কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই কিশোরী এক প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত আশিকসহ তিন-চার যুবক জোর করে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। পরে তাকে শহরের হোটেল-মোটেল জোনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে মমস গেস্ট হাউজে নিয়ে তাকে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।

তবে কিশোরীর অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে স্কুলে ও প্রাইভেটে পড়তে আসা-যাওয়ার পথে প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন আশিক। এতে রাজি না হওয়ায় আশিক ও তার সহযোগীরা মিলে ১৩ ডিসেম্বর তাকে তুলে নিয়ে হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। ১৫ ডিসেম্বর রাত ৮টায় আমাকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে কৌশলে সটকে পড়েন।

আরো পড়ুন:
লঞ্চে আগুন: ভেসে উঠছে মরদেহ
রহস্যঘেরা গৃহবধূ ধর্ষণ, ২ মাসে ৩ বার কক্সবাজার: একেক হোটেলে একেক নাম!

এ বিষয়ে কিশোরীর বাবা বলেন, ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হয় আমার মেয়ে। রাতেও না আসায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। ঘটনার দুদিন পর ১৫ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয়রা আমার মেয়েকে আশিকের বাড়ির সামনে দেখতে পেয়ে খবর দেন। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসি। আশিকের বাবা-মা উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ঘটনার ব্যাপারে মামলা করলে বা আইনের আশ্রয় নিলে আমার মেয়েকে পুনরায় অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলবে।

আশিকের মা ও মামলার ২ নম্বর আসামি রাজিয়া বেগমের মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ করেন তার পুত্রবধূ শাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আশিকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, তার দেবর আশিক ও ওই স্কুলছাত্রীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। মেয়েটিকে বউ করে আনতে তারা (শাহেনা) রাজি। কিন্তু মেয়ের পরিবার রাজি নয়।

কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম জানান, রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে মামলাটি করেন। মামলার তদন্তকাজ অব্যাহত রয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামি গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডিসেম্বর ২৭.২০২১ at ১৭:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জানি/জআ