গাইবান্ধায় এসএসসি পরীক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে অসহায় পিতার সংবাদ সম্মেলন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের জিরাই গ্রামে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী শাকিল হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাত আচরণের অভিযোগ এনে অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত, হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং বাদির পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে নিহত শাকিলের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত শাকিলের পিতা মীর কাশিম আকন্দ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতিবেশী মৃত বদিউজ্জামান এর পুত্র ফজলুর রহমানের সাথে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২৪ আগষ্ট সকালে ফজলুর রহমান ও তার দুই পুত্র বেলাল, ফারুকসহ আসামী রানা মিয়া, আকতারুজ্জামান, রঞ্জু মিয়া, শাহিন শেখ, শহিদুল ও সান্তনা বেগম শাকিলকে মারপিট করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের সময় গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশকে মোবাইল করা হলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়া হলে হত্যাকান্ড ঘটার কয়েক ঘন্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ নিয়ে যায়।

আরো পড়ুন:
বেড়ায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থিকে নির্বাচন থেকে সরে যাবার হুমকি
নির্বাচন সামনে করে ভিলেজ পলিটিক্স তুঙ্গে, মন্দিরের জমি দখলের অপবাদ দিয়ে সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা

এদিকে গোবিন্দগঞ্জ থানার কম্পিউটারে এজাহার কম্পিউটারে কম্পোজ করার পর হত্যাকান্ডে জড়িত ৪ জন আসামীকে বাদ দিয়ে বাদী মীর কাশিমের স্বাক্ষর নেওয়া হয় বলে সাংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। তাছাড়া হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর আসামীরা পুলিশের সহায়তায় নিহত শাকিলের স্ত্রী কুলসুম বেগমকে ম্যানেজ করে আগের মামলার বাদি ও তার স্ত্রী, পুত্রকে আসামী করে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি আর ৩০১/২১ মামলা করা হয়, যা বর্তমানে স্থগিত আছে।

এদিকে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার না করে উল্টো মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে বাদীকে জেল খাটাবে মর্মে হুমকি দিচ্ছে বলে বাদি অভিযোগ করেন। তাছাড়া ১৮ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার র‌্যাব সদস্যরা আসামি আকতারুজ্জামানকে মহিমাগঞ্জের জিরাই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের কয়েক ঘন্টা পর র‌্যাব গ্রেফতারকৃত আসামী আকতারুজ্জামানকে ছেড়ে দেয় বলেও অভিযোগ করা হয়। আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার পর আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আসামীরা “শাকিলকে মেরেছি তোদেরকেও মারবো, আমাদের কিছুই হবে না” বলে হুমকি দিচ্ছে। মীর কাশিম আরো জানান আসামীদের হুমকি ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় পরিবারের সদস্যদের জীবনহানির আশংকায় শংকিত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে নিহত শাকিলের বড়ভাই শামীম আহম্মেদও উপস্থিত ছিলেন।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, শাকিল আকন্দের হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নভেম্বর ১৭.২০২১ at ১৭:১৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সকব/জআ