কোরবানির হাট কাঁপাতে আসছে ‘হিরো আলম’!

হিরো আলম সারা দেশের একটি আলোচিত-সমালোচিত নাম। তাই টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বটতলা গ্রামের প্রবাসী কামরুজ্জামানের স্ত্রী জয়নব বেগমের খামারের ফ্রিজিয়ান জাতের ৩১ মণ ওজনের ষাঁড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘হিরো আলম’। ষাঁড়টির বয়স প্রায় ৪ বছর, লম্বায় সাড়ে ৮ ফুট। উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। গরুটি দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা জয়নব বেগমের খামারে ভিড় করছেন।

গরুটির মালিক জয়নব বেগম জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে গরুর খামার করেছেন। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আজহার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য তিনটি গরু প্রস্তুত করেছেন। তিনটির মধ্যে সব চেয়ে বড় ষাঁড়টির নাম ‘হিরো আলম’। এর ওজন প্রায় ৩১ মণ। ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি তিনি প্রায় দেড় বছর আগে পাবনা থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন।

এরপর ষাঁড়টির নামকরণ করা হয় আলোচনার শীর্ষে থাকা হিরো আলমের নামে। হিরো আলমের নামে নামকরণ আর এটি অনেক বড় আকৃতির হওয়ায় স্থানীয় লোকজন প্রতিদিনই বাড়িতে ষাঁড়টি দেখতে আসেন।

তিনি জানান, হিরো আলমকে এবার ঢাকার গাবতলীর হাটে বিক্রির জন্য ওঠানো হবে। এই ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। গরুটিকে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পরম যত্নে লালন-পালন করা হয়েছে।

গরুর নামকরণ সম্পর্কে জয়নব বলেন, অনেকেই গরুর নাম রাখে শাকিব খান, ডিপজল, সুলতান, সিনবাদ, মানিক, রতন, রাজা-বাদশা, খোকাবাবু ইত্যাদি। তাই আমিও তাদের মতো আমার গরুর নাম রেখেছি হিরো আলম। হিরো আলম এখন অনেক জনপ্রিয় নাম। তাই তার নামেই নামকরণ করেছি। হিরো আলম উপজেলার সবচেয়ে বড় গরু বলেও দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় মোস্তফা কামাল জানান, এত বড় গরু দেখে আমরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরাও চেষ্টা করব গরুর ফার্ম করে বড় গরু পালতে।

ডলার মিয়া নামে অপর এক ব্যক্তি জানান, ‘হিরো আলমের’ মতো এত বড় গরু আমার জীবনে দেখি নাই। আমি এই গরু দেখে খুবই উৎসাহিত হচ্ছি। আমি নিজেও গরুর খামার করার কথা ভাবছি।

জয়নব বেগমের স্বামী কামরুজ্জামান বলেন, গরু লালন-পালন করতে আমার খুব ভালো লাগে। প্রবাসে যাওয়ার আগে আমি নিজেই গরুর খামার করেছিলাম। আমি প্রবাসে থাকায় স্ত্রীকে দিয়ে প্রতি বছর কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য একাধিক গরু পালন করি। গত বছর বিক্রি করা ষাঁড়টির নাম ছিল ‘সোনা বাবু’। সেটির ওজন ছিল প্রায় ৩৫ মণ।

ঢাকার গাবতলী হাটে সোনা বাবুর দাম ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেতারা বলেছিল। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে বাড়িতে ফেরত আনতে গিয়ে গাড়ি থেকে নামানোর সময় ওই ষাঁড়টির পা ভেঙে যায়। এরপর ষাঁড়টি তিন লাখ টাকায় বিক্রি করে লোকসান গুনতে হয়েছিল। এবার তিনটি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। তারমধ্যে হিরো আলম সবচেয়ে বড়। আমরা ষাঁড়টির দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এনায়েত করিম বলেন, ‘নিয়মিত ষাঁড়টিকে দেখাশোনা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে ষাঁড়টি লালন-পালন করছেন জয়নব বেগম। তার ষাঁড়টিই উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড়। তবে লকডাউনের কারণে কোরবানির পশু বিক্রি ও ন্যায্যমূল্য নিয়ে খামারিরা চিন্তিত রয়েছেন।

আরো পড়ুন:
রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: নিহতের প্রত্যেক পরিবার পাবে ২ লাখ টাকা
থানচিতে কাঁদামাটি রাস্তায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে হেডম্যান পাড়াবাসীর

আমরা অনলাইনে পশু বিক্রির জন্য অ্যাপস তৈরি করেছি। ওই অ্যাপসের মাধ্যমে যে কেউ কোরবানির পশু বিক্রি করতে পারবেন। তবে এখন পর্যন্ত অ্যাপসে হিরো আলমের দরদাম হয়নি। হিরো আলম বিক্রিতে আমরাও জয়নব বেগমকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব।’

জুলাই,১০.২০২১ at ১১:৪৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমটি/এসআর