আহত বাস হেলপার গোলাম রসুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশন

যশোরের চৌগাছায় সড়ক দূর্ঘটনায় প্রায় পঙ্গুত্ববরণকারী বাসের হেলপার গোলাম রসুলের চিকিৎসার সকল প্রকার দায়িত্ব নিলেন মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও রানা বিল্ডার্স এর প্রজেক্টর ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান। ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের মাশিলা গ্রামের কৃতি সন্তান।

গত ১৫ মে গোলাম রসুলের নিয়ে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল দেশদর্পণ ও দৈনিক নওয়াপাড়া পত্রিকায় খুব গুরুপ্ত সহকারে ”একটি সড়ক দূর্ঘটনায় গোলাম রসুলের সব স্বপ্ন ভঙ্গ, অপারেশনের জন্য প্রয়োজন দুই লক্ষ টাকা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পরেই তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক শামীম রেজাকে আহত গোলাম রসুলের পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে বলেন। ছাত্রলীগ নেতা শামীম রেজা পরিবারটির খোঁজ-খরব নিলে চিকিৎসার সকল খরচ মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ বহন করার মত প্রকাশ করেন। এই খবর আহত বাস হেলপার গোলাম রসুলের পরিবারকে জানালে তার পরিবার মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের মহানুভবতায় মুগ্ধ হন।

আরো পড়ুন :
আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান, খুলনা দিয়ে ঢুকতে পারে দেশে
করোনায় রাজশাহীর আম রফতানি নিয়ে অনিশ্চয়তা
পিকআপ ভ্যানের চাপায় পিতা নিহত, পুত্র আহত

মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান বলেন, আমি জানতে পারলাম আহত গোলাম রসুল সড়ক দূর্ঘটনায় প্রায় পঙ্গুত্ববরণ করেছে, বেশ কিছু টাকা হলে সে চিকিৎসা নিয়ে স্বাভবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। তাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক শামীম রেজাকে আহত গোলাম রসুলের পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে বলি। সে জানায় আহত গোলাম রসুলের পরিবার তাকে নিয়ে বড় বিপাকে আছে।এই শুনে আমি আমার দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য হিসাবে তার পাশে দাঁড়ানো চেষ্ঠা করেছি।

মনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশন একটি সমাজসেবক মূলক প্রতিষ্ঠান। করোনা ভাইরাসে কর্মহীন ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী প্রদান, হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফদের মাঝে পিইপিসহ বিভিন্ন উপকরণ এই প্রতিষ্ঠান হতে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলায় বিভিন্ন উন্নায়নমূলক কাজে অবদান রেখেছে এই স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানটি।

উল্লেখ্য, গোলাম রসুল উপজেলার সদর ইউনিয়নরে মন্মতপুর গ্রামের আঃ সালামের ছেলে গোলাম রসুল। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সে পড়ালেখা বাদ দিয়ে রোজগারে নেমে পড়ে। অভাবের সংসারে পিতা মাতাকে কিছুট স্বস্তি দেয়ার জন্যই সে কাজ নেয় বাসের হেলপারের। এখান থেকে যা রোজগার হত তার পুরোটাই তুলে দিত পিতার হাতে। কিন্তু একটি দূর্ঘটনা তার সব কিছুকেই তছনাছ করে দিয়েছে। টিনের ঝুপড়ি ঘরের বারান্দায় শুয়ে শুয়ে তার দিন যাচ্ছে আর রাত আসছে। এ ভাবেই কেটে গেছে প্রায় ৫ মাস।

মর্মান্তিক সেই দূর্ঘটনার স্মৃতিচারন করতে যেয়ে আতকে উঠে গোলাম রসুল। তিনি জানান, যশোর ব-১৪২ নং বাসে সে হেলপারের কাজ করতেন। সেদিন ছিল ১৬ জানুয়ারী ২০২০ বৃহস্পতিবার। সকালে চৌগাছা থেকে যশোরের উদ্যেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে সানতলা তেল পাম্পের সামনে পৌছালে চালক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়, সামনের গেটের হেলপার গোলাম রসুলসহ বেশ কিছু যাত্রী আহত হয়। গোলাম রসুলের জ্ঞান ফেরার পর সে দেখে যশোর সদর হাপাতালের মেঝেই সে শুয়ে আছে। বাম পায়ের তিন জায়গায় ভেঙ্গে গেছে, পা নাড়াতে পারে না, মুখের দু’পাটি থেকেই দাঁত গুলো সব খুলে গেছে। অসহনীয় কষ্ট আর যন্ত্রনায় সে ছটফট করছে। সেখানে বশে কিছু দিন চিকিৎসা শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

মে ১৬, ২০২০ at ২০:১০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমই/এএডি