চবিতে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে মারধর, অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা মিটছেই না। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া আর মারামারি পর আজ রোববার আরও দুই নেতাকে মারধর করা হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটায় হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় তাঁদের মারধর করা হয়। এই ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসি।

মারধরের শিকার ছাত্রলীগের কর্মীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সুমন নাছির ও আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান। তাঁরা দুজনই ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ (সিএফসি) কেয়ারের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আর মারধরকারীরা সবাই ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) অনুসারী।

এর আগে গত শুক্রবার মধ্যরাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিএফসি ও ভিএক্সের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের সাত কর্মী আহত হন। সিএফসি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও ভিএক্স সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, মারামারির এসব ঘটনা তিন দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার জেরে সুমন নাছির ও আবদুল্লাহ আল নাহিয়ানকে একা পেয়ে মারধর করে ভিএক্স। বিষয়টি জানাজানি হলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেয় সিএফসি।

এ সময় হলের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখে। পাশাপাশি গোলচত্বরে পুলিশ বক্স, প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি ও পুলিশের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে অন্তত এক শ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে শান্তি চুক্তি মেলা
ভেজাল গুড় তৈরীর অপরাধে ব্যবসায়ীকে জরিমানা

মারামারির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, তাপস সরকার হত্যা মামলার আসামি মিজানুর রহমান ও প্রদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়েছে। রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানোয় দুজনই গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে আহত অবস্থায় দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যারা মারধর করেছে তাঁদের আটক না করা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ চলবে।

এদিকে এই ঘটনার দায়ভার রেজাউল হককেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ভিএক্স পক্ষের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, তাঁদের কর্মীদের ওপর হামলায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ। এতে জুনিয়রদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ফলে সম্পূর্ণ দায়ভার সভাপতিকেই নিতে হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান বলেন, মারামারির এসব ঘটনায় কর্তৃপক্ষ অনেক ধৈর্য ধরেছে। ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র তাপস সরকার খুন হন। আহত হন আরও পাঁচ ছাত্র। এ ঘটনায় ১৭ ডিসেম্বর তাপসের সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে আদালতে মামলাটি বিচারাধীন আছে।

ডিসেম্বর ০১, ২০১৯ at ২২:৫৬:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম