বেদখলে যাচ্ছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় অরক্ষিত ও অবহেলায় বেদখল হয়ে যাচ্ছে সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির নামে রেকর্ডভুক্ত জায়গা।

একদিকে জনবল সংকট আর অন্যদিকে অব্যবস্থাপনার কারণে সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ থেকে পড়ে ভিতরের কক্ষের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। এফডব্লিওভি না থাকায় এতে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহ গ্রামীণ শিশু ও নারীদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

প্রথমদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারি থাকলেও কিছুদিন পরে বদলী হয়ে যাওয়ায় জনবল শূণ্য হয়ে পড়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। বর্তমানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রেশুধুমাত্র একজন পরিদর্শক সহ তিন জন ছাড়া আর কেউ নেই । ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আশপাশ ও দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। ফলে সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

আরও পড়ুন:
দেড় হাজার অনুপ্রবেশকারী কোনো পদ পাবে না
পাপনের ক্যাসিনো ভিডিও নিয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য

বর্তমান গুইমারা উপজেলাধীন সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নটি মহালছড়ি উপজেলাধীন থাকাকালীন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো ‘ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি’।

নতুন গুইমারা উপজেলা হলেও এখনো সমস্ত কার্যক্রম মহালছড়ি উপজেলার আওতাভুক্ত রয়েছে সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি।

এ বিষয়ে উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই) বিনন্দ ত্রিপুরা অভিযোগ করে জানান, এক একর জায়গার উপড় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির ভবণ নির্মিত হয়েছিল কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে লোকবল না থাকায়় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আশপাশের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর (এফডব্লিউভি) না থাকায় গর্ভবতী নারীদের পরিচর্যা ও প্রসব পরবর্তী পরিচর্চার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পুরো ইউনিয়়নের প্রতি মাসে চারটি স্যাটেলাইট ক্লিনিক হওয়ার কথা থাকলেও এখনো একটাও হয়়নি, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও তা নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত ভবনের আশেপাশে গরু, ছাগলের বসবাস, ভবণ ঘেষে লাকরী আর মাকড়শার জাল ভরা। অন্যদিকে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জায়গা বেদখল করতে মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ শুরু করেছে। বসতবাড়ি করে রেখেছে এলাকার লোকজন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সকল আসবাবপত্র ব্যবহার করার মত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দীর্ঘ দিন যাবৎ এই অবস্থা । বাউন্ডারি প্রাচীর না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকা বেদখল করে বসতি স্থাপন করেছে ছয়-সাতটি পরিবার। অনেকেই এ জায়গা বিক্রি করে চলেও গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, এভাবে থাকলে আরো কিছুদিন পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।

এই বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুভাষ বসু চাকমা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কথা স্বীকার করে জানান, উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নভেম্বর ১, ২০১৯ at ১৭:৪৫:৩০ (GMT+ 06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এনএম/এআই