মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক জীব হিসেবে আমাদের পরিচিতি সর্বত্র। কিন্তু, এই সামাজিকতার ভেতর যখন ধীরে ধীরে অসামাজিকতা, অনিয়ম, পশুত্ব দানা বাঁধতে থাকে তখন এক্ষেত্রে ‘সামাজিক জীব’ কথাটি প্রশ্নবিদ্ধ!
ঠিক যেমন স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচয় পেয়েও আমাদের ভেতর ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি আজ প্রশ্নবিদ্ধ!
আজকে প্রতিবাদ শব্দটি উচ্চারণ করতে গেলেও সেখানে আমাদের জীবনের নিশ্চয়তাও প্রশ্নবিদ্ধ!
আজকে আমরা খুঁজে বেড়াই এমন কিছু নিশ্চয়তা, যে নিশ্চয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই আমাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মানুষ নামটা আজ আমাদের কাছে কলঙ্কিত।
আমরা এক অবলা জাতি!
চুপ থেকে লোকের তামাশা দেখা আমাদের কাজ। ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা মুখ ফুটে অন্যায়কে অন্যায় বলতে পারিনা,যতক্ষণ না আমাদের সাথেও ঠিক একই রকম অন্যায় হয়।
আমরা এমন এক জাতি যারা রাস্তায় মানুষকে লাশ হতে দেখে তার ভিডিও করি, সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে, লাইক,কমেন্ট শেয়ার করি সেলিব্রিটি হওয়ার বাসনায়।
তবে সল্পসংখ্যক কিছু মানুষ আছেন যারা মানবতা, নীতি-নৈতিকতা কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন বারবার। দেখাতে চেয়েছেন জাতি হিসেবে আমরা ঠিক কোন কোন বিষয়ে দূষিত, কলুষিত। আর ঠিক সেই মানুষগুলোকেই দিনশেষে লাশ হয়ে ফিরতে হয়।
আবার এই দূর্ভাগা লাশগুলোও কিছু মানুষের সেলিব্রিটি হওয়ার মাল-মশলা হয়ে ওঠে।
আমাদের পরিবেশ যখন দূষিত হয় আমরা তাকে পরিবেশ দূষণ বলি। বায়ু দূষিত হলে বলি বায়ু দূষণ। যখন মানুষের ভেতর নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটতে শুরু করে, যখন মানুষের মানসিকতা দূষিত হয়, যখন সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কন্ঠ উঠাতে ভয় পায়, তখন সেটাকে দূষিত মানবিকতা বলাটা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক কিছু নয়।
লেখক: সাদিয়া ফারজানা
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
অক্টোবর ২০, ২০১৯ at ০৮:৫৮:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/সাফা/এএএম/ওমি