খালেদা জিয়ার সম্মতিতে জামিন নিয়ে এমপিদের দৌড়ঝাঁপ

খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিএনপিদলীয় এমপিরা। আনুকল্য পেতে ধরনা দিচ্ছেন সরকারের কাছেও। আর এতে খালেদা জিয়ার সম্মতি রয়েছে বলেও জানা গেছে। আইনি লড়াই, বিদেশিদের কাছে নালিশ ও আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এখন সমঝোতার পথে হাঁটছেন।

খালেদার অসুস্থতাকে পুঁজি করে এবার প্রধানমন্ত্রীর সহমর্মিতা চান তারা। দলীয় একজন এমপি এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দূতিয়ালি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পা পেলেই খালেদার জামিন সম্ভব এমন বিশ্বাস থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি।

সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে তার জরুরি চিকিৎসা দরকার। যা কারাবন্দি অবস্থায় দেশের কোনো হাসপাতালে সম্ভব নয়। এ জন্য তাকে বিদেশ পাঠানো জরুরি। বিদেশে চিকিৎসা নিলে শারীরিক পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অন্যথায় খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

এমন অবস্থায় খালেদার চিকিৎসাকেই অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। জেদ, খেদ দূরে রেখে আপসের রাস্তা বেছে নিচ্ছেন বিএনপির হাইকমান্ড। দলীয় নেতাদের দিয়ে মধ্যস্ততা করতে না পেরেই বেছে নিয়েছেন দলীয় এমপিদের। দলীয় এমপিরা ইতোমধ্যে তাদের মিশন নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছেন বলে খবর রটেছে।

তাদের তৎপরতা খালেদা জিয়ার জামিনের পথকে ত্বরান্নিত করবে বলেই বিশ্বাস হাইকমান্ডের। তা না হলে জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত প্যারোলের আবেদন করবেন খালেদা জিয়া। আর প্যারোলে জামিন পেলে যাতে বিরূপ প্রচারণা না হয় সেজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবেই সরকারের সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিএনপির এমপিরা।

আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের অতীতের ইতিহাস জানার প্রতি গুরুত্ব দিলেন -ডিসি
শিক্ষার্থীদের সঠিক ভাবে জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষকদের নজর রাখতে হবে- ডিসি

সূত্র জানায়, খালেদাকে বিদেশ পাঠাতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। এজন্য জামিন বা প্যারোল যেকোনো একটি হলেই হলো। সরকারের কারণে আদালত জামিন দেবে না এটা ধরে নিয়েই আগাচ্ছেন এমপিরা। গতকাল বুধবার বিকেলে হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএনপির এমপি জি এম সিরাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাসপাতালে এসে খালেদা জিয়াকে দেখে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তার বিশ্বাস, খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা দেখলে প্রধানমন্ত্রীর মায়া হবে। এই এমপিও বিশ্বাস করেন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া খালেদা জিয়ার জামিন সম্ভব নয়। বিএনপির এমপি মো. মোশাররফ হোসেন, মো. জাহিদুর রহমান জাহিদ এবং রুমিন ফারহানা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। আগের দিন গত মঙ্গলবার মো. হারুন অর রশিদ, উকিল আবদুস সাত্তার এবং আমিনুল ইসলাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির এমপি মো. হারুন অর রশিদ খালেদা জিয়া জামিন পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান বলে জানান। এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন হারুন।

প্রতিটি বিষয় ‘যদির মধ্যে’ আটকে যাচ্ছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামিন পেলে চিকিৎসকরা যদি খালেদাকে বিদেশে নেয়ার পরামর্শ দেন, তখনই সরকার বিষয়টি দেখবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো শত্রু তা নেই। প্রশ্ন হচ্ছে তিনি জামিন পাবেন কিনা সেটা আদালতের বিষয়। সরকার আদালতকে কিভাবে বলবে যে, জামিন দিয়ে দেন? তাহলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সরকারের হস্তক্ষেপ হবে।

এ বিষয়ে বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানা বলেন, ম্যাডাম আমাদের জানিয়েছেন, তিনি প্যারোল নয় জামিন চান। কারণ জামিন তার রাজনৈতিক অধিকার। তিনি দেশেই চিকিৎসা করাতে চান, সেক্ষেত্রে তার শারীরিক অবস্থা বুঝে দরকার হলে তিনি দেশের বাইরে যাবেন।

অক্টোবর ০৩, ২০১৯ at ২০:১৯:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/ভোকা/এএএম