যে সূরা পাঠ করলে গোনাহ মাফ করে দেবেন আল্লাহ্

সূরা আল ইখলাস (আরবি ভাষায়: الإخلاص‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১২ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১টি। আল ইখলাস সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটিকে ইসলামের শেষ পয়গম্বর মুহাম্মদ (সা:) বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাৎপর্যের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই আয়াতে আল্লাহ্‌র সবচেয়ে সুন্দর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এটি কুরআনের অন্যতম ছোট একটি সূরা হিসেবেও বিবেচিত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন :
ভিভোর বাটনবিহীন ৫জি ফোন নেক্স ৩
শরীরের যেসব স্থানে হাত দিলে অসুখ হতে পারে

মুশরিকরা মুহাম্মদ (সা:)-কে আল্লাহ্‌ তাআলার বংশপরিচয় জিজ্ঞেস করেছিল, যার জওয়াবে এই সূরা নাযিল হয়। অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে যে, মদীনার ইহুদিরা এ প্রশ্ন করেছিল। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে, তারা আরও প্রশ্ন করেছিলঃ আল্লাহ্‌ তাআলা কিসের তৈরি, স্বর্ণ-রৌপ্য অথবা অন্য কিছুর? এর জওয়াবে সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে ৷
আরবিঃ-

قُلۡ هُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ
اَللّٰہُ الصَّمَدُ
لَمۡ یَلِدۡۙ وَ لَمۡ یُوۡلَدۡ
وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّہٗ کُفُوًا اَحَدٌ

বাংলাঃ-
কু’ল হুয়া ল্লা-হু আহাদ ৷
আল্লা-হু স্‌সামাদ ৷
লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইয়ুলাদ ৷
ওয়া লাম ইয়াকু ল-লাহু কুফুওয়ান আহাদ!

অর্থঃ-
বলো, তিনিই আল্লাহ্‌, অদ্বিতীয়!
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি।
তাঁর সমকক্ষ আর কিছুই নেই!

প্রতিদিন অজুর সঙ্গে ২শ’ বার সুরা ইখলাস পাঠ করলে ০৯টি উপকার পাওয়া যাবে।
১.আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত অসুন্তুষ্টির ৩০০ টি দরজা বন্ধ করে দেবেন। যেমন: শত্রতা, দূর্ভিক্ষ, ফিতনা ইত্যাদি।
২. রহমতের ৩০০ টি দরজা খুলে দেবেন।
৩. রিজিকের ১০০০ টি দরজা খুলে দেবেন। আল্লাহ তায়ালা পরিশ্রম ছাড়া তাকে গায়েব থেকে রিজিক দেবেন।
৪. আল্লাহ পাক নিজস্ব ইলম থেকে তাকে ইলম দেবেন, নিজের ধৈর্য্য থেকে ধৈর্য্য এবং নিজের বুঝ থেকে বুঝ দেবেন।
৫. ৬৬ বার কুরআন শরীফ খতম করার সাওয়াব দান করবেন।
৬. তার পঞ্চাশ বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
৭. আল্লাহ পাক জান্নাতে ২০টি মহল দান করবেন। যেগুলো ইয়াকুত, মারজান,জমরুদ দ্বারা নির্মিত হবে এবং প্রত্যেকটি মহলে ৭০,০০০ দরজা হবে।
৮.২০০০ রাকাত নফল পড়ার সাওয়াব অর্জিত হবে।
৯.যখন ‍মৃত্যু বরন করবে তখন তার জানাযায় এক লক্ষ দশ হাজার ফেরেশতা অংশগ্রহন করবেন।

হযরত আবু হোরায়ারা (রাঃ) বর্ণনা করেন, একবার রসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে কোরআনের এক তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল তারা একত্রিত হয়ে গেল এবং তিনি সূরা এখলাস পাঠ করে শুনালেন। তিনি আরও বললেনঃ এই সূরাটি কোরানের এক তৃতীয়াংশের সমান। – (মুসলিম, তিরমিযী)

আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ রেওয়ায়েতে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মিসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে যথেষ্ট হয়। – (ইবনে-কাসীর)

ওকবা ইবনে আমের (রাঃ)-এর রেওয়ায়েতে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সূরা বলছি, যা তওরাত, ইঞ্জীল, যবুর ও কোরআনসহ সব কিতাবেই রয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততক্ষণ নিদ্রা যেয়োনা, যতক্ষণ সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। ওকবা (রাঃ) বলেনঃ সেদিন থেকে আমি কখনও এই আমল ছাড়িনি। – (ইবনে কাসরী)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হাবীব (রাঃ) বর্ণনা করেন, এক রাত্রিতে বৃষ্টি ও ভীষণ অন্ধকার ছিল। আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে খুঁজতে বের হলাম। যখন তাঁকে পেলাম, তখন প্রথমেই তিনি বললেনঃ বল। আমি আরয করলাম, কী বলব? তিনি বললেনঃ সূরা এখলাস ও কূল আউযু সূরাদ্বয়। সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো তিন বার পাঠ করলে মনের যত কষ্ট আছে তা থেকে মুক্তি পাবে।

সেপ্টেম্বর১৭, ২০১৯ at ০৯:১০:৩১(GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/ আক/আস/ইআ