কলা চাষে সফলতার মুখ দেখছে বিদেশ ফেরত মহসিন

বহুদিন ছিলেন প্রবাসে। দেশে এসে বেকার হয়ে যান। তাই মনে মনে ভাবছেন কি করা যায়। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলেন কলা চাষের। তার কলা বাগান দেখে আশেপাশের মানুষ ঝুকছে কলা চাষের দিকে। প্রায় প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে বাগান দেখতে ও তথ্য নিতে। বলছিলাম মতলব উত্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মহসিন মোল্লার কথা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহসিন মোল্লার নিজস্ব ৫০ শতক জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো ৪শ’ কলা গাছ শোভা পাচ্ছে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্যে। কথা হয় তার সাথে। কেন আপনি কলা চাষে আগ্রহী হলেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পুষ্টিকর ফল, যা সারা বছরই চাষ করা যায়। কলায় রয়েছে আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলাতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকে। একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়।

এছাড়াও কলাতে রয়েছে হজমযোগ্য শর্করা এর আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্‍পাদনে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করতে কলার জুড়ি নেই। একটি কলায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। আর মানবদেহে প্রতিদিন পটাশিয়ামের যোগান দেয়। কলা গেলে স্ট্রোকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

তনি আরো বলেন, জনপ্রিয় ফল কলা সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পন্ন দেশের সব জায়গায়ই কম বেশি কলা চাষ হয়। তাই দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকারপরও দেশে এসে শুরু করেছি কলা চাষ।

আমার হাত ধরেই এই এলাকায় বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে কলা চাষ। ৪’শ পিছ চাড়া এনে শুরু করেন কলা চাষ। ৫০ শতক জমিতে কলার চাড়া রোপণ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা।

চারা লাগানোর ১০ মাস থেকেই শুরু হয় কলা বিক্রি। মাটি শক্তিশালী ও নতুন হওয়ায় বেশ বড় বড় ছড়া হয় গাছ গুলোতে। আর এলাকায় তেমন কলা বাগান না থাকায় স্থানীয় বাজারেই খুব সহজে ভালো দামে বিক্রি করা যায় কলা গুলো। এক একটি ছড়া চার’শ থেকে পাঁচ’শ টাকায় বিক্রি করি।

আরো পড়ুন :
স্ত্রী-ছেলেসহ ডিবি কার্যালয়ে ধনকুবের মুসা বিন শমসের
রাণীশংকৈল পুকুরে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

প্রথম ফলনেই মূলধন চলে আসে। আশা করছি এবার দ্বিতীয় মৌসুমে ১ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে। তখন লাভবান হওয়া যাবে। তেমন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়না। কীটনাশক তেমন লাগেনা। কিছু জৈব সার প্রয়োগ করলেই চলে। আমি কলা চাষে সফল হয়েছি, তাই যারা বেকার আছেম তাদেরকেও বলবো কলা চাষে আগ্রহী হতে। আমি কলার পাশাপাশি চারা বিক্রি করি। কেউ আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে আমি শতভাগ সহযোগিতা করবো।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, উপজেলায় কলা চাষের জন্য উপযোগী স্থান। এখানকার জায়গাগুলো উচু ও ধোঁয়াশা হওয়ায় কলার ভালো সম্ভাবনা আছে। কলা চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল সারা বছরই দেশের প্রায় সব অঞ্চলের উঁচু জমিতেই এর চাষ করা যায়।

অক্টোবর ১৩.২০২১ at ১৬:১০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মই/রারি