থানচিতে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির

বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের সড়ক যোগাযোগের বন্ধের নৌ-পথে যাতায়াতের বাজারে মালামাল আনতে পরিবহনের অনেক খরচে অজুহাতে বান্দরবানে থানচিতে বাজার নিত্যপণ্যের দ্রব্যগুলো দাম বৃদ্ধি করে চড়াও দামের বিক্রি করেছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। চাল–তেলের মতো আটা, চিনি, ডাল, ব্রয়লার মুরগি, গুঁড়া দুধ, রসুন, গ্যাস সিলিন্ডার, ঢেউ টিনসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে চাপে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের মতো নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিরতার দুর্যোগে চরমভাবে দুর্ভোগে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ জনজীবন।

এবছরে চলতি বর্ষার মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের দুর্যোগ সময়ে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনিভাবে দুর্যোগের পরবর্তিতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে জনসাধারণ মানুষের। দুর্যোগের আগে যেসব পণ্যের গুদামের স্টপ রেখে দুর্যোগ পরবর্তিতে আনার নিত্যপণ্যের মালামাল, শহর থেকে আনতে পরিবহনের অনেক খরচ হচ্ছে এমন অজুহাতে দেখিয়ে সকল নিত্যপণ্যের বৃদ্ধির কারণে বাজার অস্থিরতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার উপায় কী? সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে প্রস্তুতিই–বা কেমন? এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে জনসাধারণ মানুষের অনেকেই।

শনিবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিত্যপণ্যের বাজারে ডাল প্রতি কেজি ১৪০টাকা, ডিম ১৩টাকা, চাল প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ১৭০-৮০টাকা, ঢেউ টিনের ৪০০-৫০০ টাকা বাড়তি বিক্রি করছেন। আলু প্রতি কেজি ৫০-৬০টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০-৮০টাকা, কচু-ওল প্রতি কেজি ৮০-৯০টাকার এবং শাক-সবজিগুলো চড়াও দামের বিক্রি করেছে ব্যবসায়ীরা। মাছ- মাংস ও শুঁটকি মাছের বাজারেও একই চিত্র।

চাল-তেলের মতো আটা, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, মাছ-মাংস, গুঁড়া দুধ, রসুন, আদা-হলুদ গুঁড়া, শুঁটকি মাছ, শাক-সবজি ও বিভিন্ন ধরনে মশলা’সহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে স্বল্প আয়ের মানুষ চাপে পড়েছে। শহরে সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার সাথে সাথে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বেশি। এমনিতেই পাহাড়ের জুমচাষীদের আমের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত সম্মুখীন হচ্ছে, সেখানেই আবার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে সব মিলিয়ে কঠিন সময় পার করছে স্বল্প আয়ের মানুষ বলে জানিয়েছেন- সচেতন মহল।

আরো পড়ুন :
>> ভারতে ট্রেনের বগিতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১০
>> প্রেসক্লাব চৌগাছা ও রিপোর্টার্স ক্লাবের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময়

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, নিত্যপণ্যের বাড়তি মূল্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নৌ-পথে পরিবহনের ভাড়া। বান্দরবান শহরে সাথে সড়ক যোগাযোগের বন্ধ থাকার কারণে নৌ-পথে ট্রলার মাধ্যমে বাজারে নিত্যপণ্যের মালামাল আনতে হচ্ছে, পরিবহনের খরচে বিপাকে পড়ে কিছুতা বাড়তে হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। তবে সড়ক যোগাযোগের বিচ্ছিন্ন না ঘটার আগে কিছু নিত্যপণ্যের মালামালের পূর্বে দামেই বিক্রি করা হয়েছে। এদুর্যোগের যেমন স্বল্প আয়ের মানুষের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে প্রচুর খরচে মালামালের আনার এবং কঠিন সময়ে কষ্টের দিন পার করছি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাজার করতে আসার ক্রেতারা বলেন, ডিম, ডাল, পেঁয়াজ-রসুন, ব্রয়লার মুরগি, ঢেউ টিন, চাল’সহ নিত্যপণ্যগুলো নৌ-পথে পরিবহনের অনেক খরচের অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে চড়াও দামের বিক্রি করেছেন। কাঁচামাল বাজারে লেবু, শসা, আলু, বরবটি সীম, ওল-কচু ও বিভিন্ন শাক-সবজি, মাছ’সহ শুটকি মাছের বাজারেও একই অবস্থা।

ক্রেতারা আরো বলেন, সপ্তাহিক বাজারে পাহাড়ি ফলমূল, মরিচ, আদা-রসুন, লেবু, মার্ফা’সহ শাক-সবজি হাত বদলে দাম বৃদ্ধি করে চড়াও দামের বিক্রি করেছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। এতে চরম বিপাকে দুর্ভোগে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ জনজীবন।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাঃ আবুল মনসুর বলেন, বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের বান্দরবানে সাথে থানচির অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগের বিচ্ছিন্ন ঘটে। তবে নৌ-পথে যোগাযোগের সচল। সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে সংস্কারে কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী দল।

তিনি আরো বলেন, এ দুর্যোগের নানান অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে বিক্রির করার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনানুগ ব্যবস্থা জরিমানা করা হয়েছে, বাজারে অস্থিরতার অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান চলমান, যতদিন স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, ততদিনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আগস্ট  ২৬ , ২০২৩ at ১৩ : ২৬ : ০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/চিঅমা/শাস