ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে অধ্যাপক শরীফকে চায় না ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’

ছবি- সংগৃহীত।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানিয়েছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর প্ল্যাটফর্মের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বিবৃতিতে ৮১ জন সন্ত্রাস বিরোধী প্রাক্তন শিক্ষার্থী সই করেছেন।

আরো পড়ুন :

> অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদি’সহ বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র’সহ ডাকাত প্রধান ফয়সাল আটক
> শার্শায় ওয়ান শুটার গান ও গুলিসহ গ্রেফতার সন্ত্রাসী গ্রেফতার

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের মুখে উপাচার্য নামের যে “গডফাদার” প্রায় এক যুগ আগে উপাচার্যের “মসনদ” থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই শরীফ এনামুল কবিরকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইমেরিটাস অধ্যাপক’ পদে সম্মানিত করার দুরভিসন্ধিমূলক পাঁয়তারা দেখে আমরা যারপরনাই বিস্মিত, লজ্জিত, বিব্রত ও আহতবোধ করছি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাড়ের ওপর সিন্দাবাদের ভূত হয়ে চেপে বসা তুমুল সমালোচিত ও বিতর্কিত ‘গডফাদার’ শরীফ এনামুল কবিরের খপ্পরে বারবার পা দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারকরা। সেটারই সর্বশেষ সংযোজন হলো: বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অধ্যাপক কবিরের নিজস্ব গোষ্ঠীবাদী রাজনীতির শক্তি প্রদর্শন করে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদটি বগলদাবা করে নেয়ার অপপ্রয়াস।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় ‘ইমেরিটাস অধ্যাপক’ হিসেবে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারিগর হিসেবে পরিচিত সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে এমন একটি অত্যন্ত সম্মানজনক পদে নিয়োগের সুপারিশ করার অনৈতিক, হঠকারী ও লেজুড়বৃত্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে জাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধবাদী হওয়ার মূল কারণ, তার অতীত রেকর্ড — যেগুলো মাত্র এক যুগের ব্যবধানে সচেতন কারও বিস্মৃত হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অন্ধকার অধ্যায়ের খলনায়ক শরীফ এনামুল কবিরের কুকীর্তির গতিপথ মাত্রা ছাড়িয়ে এমন পর্যায়ে গিয়েছিল এবং তার তাঁবেদার লাঠিয়ালবাহিনি ‘ভিসিলীগ’টির দৌরাত্ম ক্যাম্পাসে এতোটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে, সেই সময়ে ছাত্র হত্যাকাণ্ড, শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের প্রতি যৌন নিপীড়ন, সান্ধ্যআইন, বিদ্যুৎবিভ্রাট থেকে বৃক্ষকর্তন, ছাত্রীদের লাইব্রেরি যাওয়ার স্বাধীনতা থেকে ছাত্রদের ক্ষুধা লাগলে রাতে খাওয়ার অধিকার, কোটি কোটি টাকার টেন্ডার, জাবির চিরায়ত নান্দনিকতা, হলের রুম থেকে শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস জীবন কোনও কিছুই রেহাই পায়নি। পরবর্তী সময়ে তীব্র গণরোষ, আন্দোলন, অনশন, মিডিয়ার সরব ভূমিকা ও একের পর এক প্রমাণ প্রকাশ হওয়ায় তাকে বিদায় নিতে হয়। কিন্তু, হায়, চাঞ্চল্যকর জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের রক্ত যার হাতে লেগে আছে, তাকেই কি না উল্টো পুরস্কৃত করা হচ্ছে পদ্ধতিগত ফাঁকফোঁকর সৃষ্টি করে!

বিবৃতিতে জাবির সাবেক শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এ ধরনের অনৈতিক সিদ্ধান্তকে কোনোভাবেই সমর্থন জানাতে পারছি না। তাই অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগের সুপারিশ অবিলম্বে বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করে এমন শিক্ষকদের নিয়োগের সুপারিশ করার দাবি জানাচ্ছি।’

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক থেকে ইমেরিটাস অধ্যাপক সব নিয়োগের প্রক্রিয়াকে দলীয়করণমুক্ত করে একাডেমিক যোগ্যতার ভিত্তিতে করার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

আগস্ট ১৯, ২০২৩ at ১৬:৫২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নাউ/ইর