চোখের সামনে বউ-বাচ্চা ভাইসা গেল, কিছুই করতে পারলাম না

ছবি- সংগৃহীত।

পদ্মা নদীতে ঘুরে বাড়িতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। আমাদের ট্রলারটি বাড়ির দিকে ফিরছিল। এমন সময় বাল্কহেডটা সরাসরি ট্রলারে আঘাত করে। আমি একজনের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কথা বলছিলাম। আমার স্ত্রী ও দুই সন্তান কিছুটা দূরে ছিল। আমি দুইটা লাফ দিছি, নাগাল পাইনি। আমার চোখের সামনেই বউ-বাচ্চা পানিতে ভাইসা গেল। কিছুই করতে পারলাম না’

স্ত্রী পপি বেগম (৩০) এবং ছেলে সাকিবুল ইসলাম (১০) ও সজিবুল ইসলামকে (৪) হারিয়ে একমাত্র বেঁচে থাকা ছেলে রাফিকুল ইসলামকে নিয়ে রোববার (৬ আগস্ট) দুপুরে বিলাপ করতে করতে এভাবেই ঢাকা পোস্টকে দুর্ঘটনার কথা জানাচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন।

আরো পড়ুন :

> ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২৭৬৪
> রাণীশংকৈলে মাদকসম্রাট শাহাজাহান আটক

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে দুই সন্তানকে দাফন করেছেন। এখন মর্গে থাকা স্ত্রীর মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন জাহাঙ্গীর। এছাড়া গতকালের দুর্ঘটনায় মারা গেছে জাহাঙ্গীরের শ্যালিকা এপি আক্তার। নিখোঁজ রয়েছে স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে মাহিন (১১)। একই পরিবারের পাঁচজনকে হারিয়ে শোকের মাতম চলছে সিরাজদিখান উপজেলার খিদিরপুর গ্রামে।

নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে নদীতে বাল্কহেড চলাচল বেআইনি। প্রশাসন যদি ঠিকমতো নজর রাখত তাহলে হয়তো এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। আমরা স্বজনদের হারাতাম না। আমরা স্বজন হারানোর বিচার চাই।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শনিবার সকালে লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৬ জন ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। রাত ৮টার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে তিন শিশু।

আগস্ট ০৬, ২০২৩ at ২১:১৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ঢাপো/ইর