কেমন আছেন উত্তরার ফুটপাতের হকাররা

দিন আসে দিন যায়। সরকার আসে সরকার যায়। রদবদল হয় এমপি মন্ত্রীর। কিন্তু ভাগ্য বদল হয়না ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের। সারাটা বছর দৌড়ের উপর থাকতে হয় তাদের। যদিও কোন ভাবে পুলিশ প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি করে ২ এক ঘন্টা দোকানদারি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন।

বর্তমানে উত্তরার প্রতিটি রাস্তায় একেবারে নির্মুল করা হয়েছে ভ্যান মার্কেট থেকে শুরু করে পান দোকান পর্যন্ত। এক সমীক্ষায় দেখা যায় রাজলক্ষী মার্কেটের আশে পাসে আজমপুর থেকে রবীন্দ্রসরনীর শেষ মাথা পর্যন্ত প্রায় হাজার খানিক ভ্যানে বিভিন্ন রকমের জিনিস পত্রের পসরা বসতো দৈনিক। আবার কসমো ফিলিং স্টেশন থেকে শুরুকরে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং মাসকাট প্লাজার সামনে থেকে শুরু করে সোনারগাঁ জনপথের জমজম টাওয়ার ও তার আশেপাশে প্রায় আট থেকে নয় শত কাপড় ও জুতার ফুটপাত দোকানীকে দেখা যেত। বর্তমানে এসকল দোকানীরা কোথায় আছে কেমন আছে তাদের খোঁজ কেউ রাখে না।

তারাও এদেশের নাগরিক তারাও ভোটার। বেশকিছু দিন আগেও মানিক- মোস্তফা নামে দুই ভাই রাজলক্ষ্মীর তাকওয়া মসজিদের সামনে ভাজাপোড়ার দোকান করতেন দোকানগুলো উঠিয়ে দেওয়ার পর তারা অসহায়ত্বের মত জীবন যাপন করছেন বলে জানান মোস্তফা। অপরদিকে ভুষের মেয়ে জামাই আলমগীর ও সাংবাদিক খোকনের ছোট ভাই ছোটন বলেন সামান্য একটা পান সিগারেটের দোকান দিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে কোনভাবে জীবনটা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। দোকান উচ্ছেদের নামে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি শিকার হচ্ছি আমরা। জনৈক ভ্যান ফল ব্যবসায়ী বলেন একবার কল্যান সমিতি ধাক্কাধাক্কি করেন আবার পুলিশ এসে লাথি মেরে সব ফেলে দেন এর মধ্য দিয়েই আমাদের জীবন।

আরো পড়ুন :
>> ক্ষেতলালে মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেন ইলিয়াছ হোসেন
>> ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলো শিশুসহ ৪০ তরুণ- তরুণী

অপরদিকে আজমপুর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন রাস্তায় যানজট সৃষ্টির কারণেই উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই আমরা ফুটপাত উচ্ছেদ করেছি। তিনি আরো বলেন আপনি যেমন ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দুঃখ-কষ্ট বুঝতেছেন আমরাও বুঝতে পারি তাদের দুঃখ। আমরা নিরুপায়। হুকুমের গোলাম। ফুটপাতের দোকানদারদের মধ্যে অনেকেরই সন্তান-সন্ততি আছে যারা বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। অর্থের অভাবে বর্তমানে তাদের লেখা পড়া বন্ধ হবার উপক্রম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যবসায়ী বলেন হয় আমাদেরকে ব্যবসা করতে দেওয়া হোক নতুবা গুলি করে মারা হোক। আবার কেউ কেউ বলেন আমাদেরকে নির্দিষ্ট একটা স্থানে বসার ব্যবস্থা করা হোক।

কিছু ফুটপাত ব্যবসায়ীরা বলেন সরকারদলের মিছিল মিটিংয়ে আমরাই অংশগ্রহণ করি সবার আগে। যেই এলিট পার্সনদের চলাচলের সুবিধার্থে আজকে হকার উচ্ছেদ করা হচ্ছে তাদের কয়জনই বা ভোটকেন্দ্রে যায় সমাবেশে অংশগ্রহণ করে। এটা সরকারি দলকে মাথায় রাখতে হবে। হকারদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সাথে কথা হলে তরা বলেন আসলে বিষয়টি দুঃখজনক। তাদের পুনর্বাসন করা দরকার। হকারদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নেতারা বড় বড় বক্তৃতা দিয়েই পার পেয়ে যান। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মতে ভ্যান মার্কেট থেকেই আমরা নিত্যদিনের ব্যবহার্য সামগ্রী কিনে যাও চলতে পারতাম তারও বারোটা। মধ্যবিত্তদের দাবি অনতিবিলম্বে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

জুলাই ২১, ২০২৩ at ১৬:২৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রমি/শাস