পর্যটনের নতুন আকর্ষণ বদলে যাওয়া আসাম বস্তি-কাপ্তাই সড়ক

ছবি- সংগৃহীত।

পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির আসাম বস্তি-কাপ্তাই সড়কে ঘুরতে গেলে ঘাড়ের কসরৎ একটু বেশিই হবে। কারণ এই সড়কের এক পাশে কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশি, অন্য পাশে পাহাড়ের অদ্ভুত সবুজ।

এই সড়কটি দিয়ে স্বল্প সময়ে রাঙ্গামাটি থেকে কাপ্তাই উপজেলায় যাওয়া যায়। আর এর দু’পাশে গড়ে উঠেছে বড়গাঙ, রাইন্যা টুগুন, বেরান্নে লেক এবং বাগী লেক ভ্যালির মতো বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র।

সড়কের পাশ ঘেঁষেই বুদ্ধ গুরু মহাসাধক সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে) জন্মস্থান। সেখানে তার নামে প্রতিষ্ঠিত স্মৃতি মন্দিরে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থীর ভিড় জমে। এই সড়কে যেতে যেতেই চোখে পড়বে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসে সড়কটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে এটিকে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটিকে দুই লেনে উন্নীত করা হয়। নির্মাণ করা হয় তিনটি নতুন সেতু।

সদর উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তারা জানান, আগামী জুনের মধ্যে সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

তবে ইতিমধ্যেই সড়কটির সৌন্দর্য মন কাড়ছে পর্যটকদের। কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা শাফিন বলেন, “আমি এর আগেও রাঙ্গামাটি এসেছি। এই সড়কেও কয়েকবার আসা হয়েছে। এখানে এলে বিষণ্নতা কেটে যায়।”

ঢাকা থেকে সপরিবারে ঘুরতে আসা সালেহ হোসাইন বলেন, “রাঙ্গামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার আসাম বস্তি রাস্তাটি খুবই সুন্দর। সড়কের দুই পাশে পাহাড় এবং হ্রদের সৌন্দর্য সত্যিই উপভোগ করার মতো।”

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সাজিদ বিন জাহিদ বলেন, “২০১৭ সালে পাহাড় ধসের পরে রাঙ্গামাটিতে নতুন করে যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে সেগুলো দৃষ্টিনন্দন। বিশেষ করে আসামবস্তি-কাপ্তাই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।”

স্থানীয় বাসিন্দা রুপেন ত্রিপুরা বলেন, আসাম বস্তি হয়ে কাপ্তাই পর্যন্ত সড়কটির কারণে আমারা খুবই উপকৃত হয়েছি। এটি মাঝে কিছুদিন চলাচল অনুপযোগী ছিল। সংস্কারের পর সেই অসুবিধা দূর হয়েছে।

সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী প্রণব রায় চৌধুরী বলেন, “কাপ্তাই- আসাম বস্তি সড়কের ১৮ কিলোমিটার দুই লেনে উন্নীত হয়েছে। রাঙ্গামাটি এলজিইডির জন্য এটি একটি ট্রেডমার্ক। পর্যটকদের কাছে সড়কটি খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।”

এই প্রকৌশলী আরও বলেন, “এই সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বরাদম এলাকায় নির্মিত লাভ পয়েন্ট আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।”

এলজিইডি রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, “এটি একটি বিকল্প সড়ক। এটি রাঙ্গামাটি থেকে কাপ্তাইয়ের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমিয়ে এনেছে।”

তিনি বলেন, এই রাস্তাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এই রাস্তা। আগে এটি দিয়ে শুধু ছোট যানবাহন চলাচল করত। সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, চলাচলে সময়ও বেশি লাগত।

মে  ১৯, ২০২৩ at ১৭:২৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর