পাইকগাছায় তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

চৈত্রের শেষ, বৈশাখের শুরুতে আরো তেতে উঠছে সূর্য। কয়েক দিন ধরে দেশের বড় অংশজুড়ে প্রচ- গরম পড়েছে। দিনে আগুনে রোদ ও গরমে খাঁ খাঁ করে চারদিক। রাতেও তাপমাত্রা কমে না। আর সেই সাথে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গরমের কারণে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

পাইকগাছার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘাম ঝরিয়ে ছুটতে হচ্ছে তাদের।

আরো পড়ুন :
> ক্ষেতলালে মডেল মসজিদ উদ্বোধন
> পাবনায় হাজার পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ

সাধারণত কোনো এলাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেখানে মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেখানে মাঝারি তাপদাহ এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তীব্র তাপদাহ চলছে বলে ধরা হয়। খুলনায় ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হযেছে। তবে উপকূল এলাকা পাইকগাছায় ৪১-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে।

বৈশাখ মাসের তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। পাইকগাছার সাধারণ মানুষসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জনজীবন গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের প্রখর তাপদাহে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রাণিকুল। উপজেলার বোয়ালিয়া ফার্মের সেচ পাম্পের পানিতে ও সেচের ড্রেনে প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে এক দল শিশু গরম থেকে বাচতে ড্রেনেই হাবু-ডুবু খেতে দেখা গেছে।

এ উপজেলা প্রচন্ড তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মানুষে জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে রোধের প্রখর তাপ অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন তেলেশমাতি মানুষের জনজীবনে দুর্ভোগের নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচন্ড রোদের গরমে সাধারণ হতদরিদ্র মানুষরা জীবিকা নির্বাহের জন্য রাস্তায় বের হতে পারেনা। দুপুর হলে রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা একেবারে কমে যায়। তীব্র গরমের কারণে দিনমজুর শ্রমিকরাও সহজে কাজে যেতে চায়না। পৌরশহরের ফজলু মিয়া, রোজা রেখে এই তীব্র গরমে মাঠে কাজ করতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। মনে হচ্ছে শরীরে আগুন লেগেছে। গোপালপুর গ্রামের ভ্যান চালক নুর ইসলাম বলেন, বেশি তাপের কারণে দুই-তিন ঘন্টার বেশি ভ্যান চালাতে পারছি না। রাস্তা থেকে গরম তাপ এসে যেন মুখে লাগছে।তাপ ও রৌদ্রের কারণে রাস্তায় বেশিক্ষণ থাকতে পারি না।

প্রচন্ড গরমের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে রোগীদের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ নিতিশ চন্দ্র গোলদার বলেন, গরমে শিশুদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, শরীরে ঘাম বসে নিউমোনিয়া, ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর ও প্রস্রাবে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে । এসব রোগ নিয়েই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে রোগীরা । আমরা শিশুকে ঘরের বাইরে বের হতে না দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি অভিভাবকদের । সেই সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি ও টাটকা খাবার খাওয়াতে ও ফ্যানের নিচে রাখতে বলছি ।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিভিন্ন সবজি তরমুজ, করলা,কুমড়া ক্ষেতে কৃষকদের পানি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । তবে বৃষ্টির অভাবে আম, লিচু, কাঁঠালের মতো মৌসুমি ফলগুলোরও ক্ষতি করতে পারে বলে তিনি মনে করছেন । আর বৃষ্টি না হলেও এ উপজেলায় বোরো আবাদসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়বে না ।

এপ্রিল ১৭, ২০২৩ at ২০:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইহ/ ইর