সাতক্ষীরার তালায় শালিখা খাল পুনঃখননের ফলে চলমান পাকা রাস্তা ভেঙে খালগর্ভে বিলীন হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মানুষ। ভাঙা রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ এর আওতায় “সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং- ১,২,৬-৮ এবং ৬-৮(এক্সটেশন)এর নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন”শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ১০.৫৫০ কিঃমিঃ শালিখা খাল(দলুয়া-শালিখা) পুনঃখনন কাজ পান মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স। যার কার্যাদেশ পান ৬ নভেম্বর ২২।কাজ শুরুর তারিখ ৮ নভেম্বর ২২ এবং কাজ শেষের তারিখ ২৫শে জুন ২০২৩ তারিখ।কার্যাদেশ পেয়ে মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স দলুয়া এলাকা থেকে খাল পুনঃখনন কাজ শুরু করেন।
সরেজমিনে উপজেলার দলুয়া এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, কার্যাদেশ পেয়ে মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স দলুয়া এলাকা থেকে খাল পুনঃখনন কাজ শুরু করেছেন। খালেরে দুপাশে এলজিইডির পাকা রা¯তা।যার এক পাশে দলুয়া টু মেশেরডাঙ্গা পিচের রাস্তা অন্য পাশে দলুয়া টু শুকতিয়া পিচের রাস্তার কাজ চলমান।খাল খননের ফলে চলমান পাকা রাস্তা ভেঙ্গে খালগর্ভে বিলীন হয়েগেছে।
চলমান পাকা রাস্তাটি ভেঙে খালগর্ভে চলে যাওয়ার ফলে জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষসহ যানবাহন চলাচল করছে। মৎস্য ও কৃষি প্রধান এলাকার সরকারি রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
এসময় ন্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন,একটি উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে যেন আরেকটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে টেকসই উন্নয়ন করতে হবে।কিন্তু শালিখা খাল খননের ক্ষেত্রে তার বিপরীত ঘটনা ঘটেছে। চলমান পাকা রাস্তার উপর দিয়ে ড্রেজার মেশিন চালিয়ে রাস্তার পাস থেকে মাটি কেটে উপরে ফেলার কারণে রাস্তাটি ভেঙে পড়েছে । রাস্তার ঠিকাদারসহ স্থানীয়রা ম্যাশিন চালককে বারন করলেও তিনি কোন কথা শোনে নি। যার ফলে চলমান পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়েছে।
স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ বাহারাম এ প্রতিনিধিকে জানান, দলুয়ায় খাল খনন করতে গিয়ে এলজিইডি কতৃক নির্মিত চলমান পাকা রাস্তাটি নষ্ট করে দিয়েছে। ভাঙনের ফলে রাস্তাটি সম্পূর্ণ খালগর্ভে বিলীন হয়েছে।ফলে এসকল এলাকায় মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সেদিন রাতে বাড়ী ফেরার সময় ভাঙ্গা রাস্থায় পড়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন তিনি। ভাঙ্গা রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে খাল খনন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তিনি।বিল্লাল হোসেন জানান,এই রাস্তা দিয়ে তারা প্রতিদিন চলাচল করেন।এখন চলাচল করতে পারছেন না। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। শিক্ষার্থীসহ গ্রামের মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় নদীতে পড়ে যাচ্ছে। রাস্তাটি নিয়ে বিপদে আছেন তারা। তারা চান দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হউক।
এবিষয়ে রাস্তার ঠিকাদার মাজেদুল ইসলাম এপ্রতিনিধিকে জানান, রাস্তাটিতে পিচ দিলেই কাজ শেষ হয়ে যেত। খাল খননের ফলে চলমান পাকা রাস্তাটি ভেঙে পড়েছে।রাস্তা ভাঙ্গে যাওয়ার কারণে রাস্তার কাজ এখন বন্দো।একে তো রাস্তা ভেঙ্গে তার কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার উপর কাজ বন্দো এখন তিনি কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। এসময় এই ক্ষতিগ্রস্থ পাকা রাস্তা দায় ভার কে নিবে? পানি উন্নয়ন বোর্ড ,নাকি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মেসার্স শহীদ ব্রাদাস, নাকি সংশ্লিষ্ট শাখা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এমন জিজ্ঞাসার করেন তিনি।
খাল খননের সংশ্লিষ্ট শাখা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এপ্রতিনিধিকে জানান, খাল খনন করেছি পরে দেখি রাস্তা ভেঙে পড়েছে এখন কি আর করার।রাস্তাটি সংস্কার করে দেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলতে হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি তালা রথীন্দ্র নাথ হালদার এ প্রতিনিধিকে বলেন,খাল খনননের ফলে প্রায় ৬শ মিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিষয়টি তিনি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে জানালে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা বাদে বাকী রাস্তার কাজ শেষ করতে বলেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটি দ্রæত সংস্কারের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী গোকুল চন্দ্র পালের ব্যবহারিত ০১৩১৮২৩৫৬৯৩ মোবাইল ফোনটি বন্দো থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মার্চ ০১, ২০২৩ at ১৮:১৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রটি/মমেহা