লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিকদের ধর্মঘট।

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে লোড-আনলোডের কাজ করা শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে দীর্ঘদিন থেকে অনিয়ম ও দূর্নীতি করা হচ্ছে অভিযোগ করে তাদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি নিয়ে সকাল থেকে ধর্মঘট ও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করলে স্থবির হয়ে পরে স্থলবন্দরের কার্যক্রম।বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করা হবে এমন আশ্বাসে আন্দোলন তুলে পূণরায় কাজে ফিরে শ্রমিকরা।তবে ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে পূণরায় বৃহৎ আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন শ্রমিকরা।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিক অফিসের সামনে এ আন্দোলন শুরু হয় যা চলে দুপুর পর্যন্ত। এতে বুড়িমারি স্থলবন্দর মহাসড়কে প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধে সৃষ্টি হয় ভোগান্তির। দীর্ঘদিনেও নিয়মানুযায়ী মজুরি না পাওয়া এবং বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে শ্রমিকদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একাধিকবার আলোচনা করে সমাধান না পেয়ে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছে জানিয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট ৭ দফা দাবি জানায় শ্রমিকরা।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী মজুরী প্রদান না করার পাশাপাশি ২০১০ থেকে ডাম্পার গাড়ির লোড আনলোড ও ছুটির দিনে বাংলা গাড়ি লোড-আনলোডে টাকার হিসাবপদ্ধতি কিভাবে করা হয়েছে তা শ্রমিকরা জানেন না। এছাড়া পেলুডার মালিককে দেওয়া ২০০ টাকার হদিস মিলেনি দীর্ঘদিনেও। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিক সাইফুল আলম জানান, পণ্য লোড-আনলোডে প্রতি ১ টাকা করে সংগঠনের শ্রমিকদের চিকিৎসা বাবদ রাখা হলেও এ পর্যন্ত কোন শ্রমিক সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি।
শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি তিনবছর পরপর সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ২০০৯ সালের পরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দূর্ণীতি করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছে কেউ কেউ। শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, কোন সর্দারের বয়স বেশি হলে বা কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবর্তে সর্দারে সন্তানকেই সর্দার নিয়োগ দেওয়া হয় যা নিয়মের বাহিরে। আন্দোলনরত সকলের দাবি দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির উপর লক্ষ্য রেখে নতুন বছরের টনের রেট বৃদ্ধি করে শ্রমিকদের মজুরী প্রদানের।
শ্রমিকনেতারা দূর্নীতি করেনা দাবি করে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সফর উদ্দিন জানান, ২০১০ সাল থেকে ডাম্পার গাড়ি থেকে প্রাপ্ত টাকার হিসাব চেয়েছেন শ্রমিকরা। বর্তমানে ডাম্পার গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া শ্রমিকদের নিকট টাকা না নিয়ে জমানো টাকা দিয়ে সংগঠনের নামে ১৩শতক জমি ক্রয় করা হয়েছে। আরো জমি ক্রয় করা হবে। কয়েকজন শ্রমিক আছে যারা স্থায়ী নয় তারা সংগঠনের স্থায়ী সম্পদ করায় পক্ষে নয়। শ্রমিকদের দাবি অনুয়ায়ী মজুরী বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে।
সিএনএফ এজেন্ট ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাহাজুল ইসলাম মিঠু বলেন, কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখে তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেছিলো। শ্রমিকদের সাথে কথা বলে বলেছি সন্ধ্যায় শ্রমিকদের গ্রুপ নেতা ও অন্যান্যদের সাথে কথা বলে সৃষ্টি সমস্যা সমাধান করা হবে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সমাধানের আশ্বাসে শ্রমিকরা পূণরায় কাজে ফিরেছেন।

ফেব্রুয়ারি ০৪.২০২৩ at ১৯:১৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/কআখ/এমএইচ