ঢাকায় পাঁচ বাড়ির মালিক নুরুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ চায় সিআইডি

রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটিতে নুরুল ইসলামের বাড়ি। এই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।

আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা করে ঢাকায় পাঁচটি বাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক নুরুল ইসলামের তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আবেদন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আবেদন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া হয়।সিআইডি ও আদালত সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ী নুরুল অবৈধ আয়কে বৈধ করতে কাগুজে প্রতিষ্ঠান খুলে টাকা লেনদেন করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুটি বেসরকারি ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় তাঁর ও প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা তিন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আবেদন করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:
> গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই দেশে উন্নয়ন হচ্ছে
> এলজিইডি’র সার্ভেয়ারকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দিলেন পুলিশ সদস্য

সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান আজ প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল ইসলামকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বৈধ আয়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোর ঠিকানাও দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আদালতে তাঁর তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আবেদন করেছি।

আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অনুসন্ধানকালে নুরুল ইসলামের আয়কর বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৯ সালে তাঁর কোনো স্থাবর সম্পত্তি ছিল না। অস্থাবর সম্পত্তি বলতে ছিল সাড় আট লাখ টাকা। ১১ বছর পর তাঁর আয়কর বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫ হাজার ৬৩১ টাকা দেখানো হয়েছে। আর ২০২১ সালে তাঁর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার সম্পদ দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৬ হাজার ৫১ টাকা।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, ২০০১ সালে টেকনাফ বন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক মাত্র ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। চাকরি ছাড়েন ২০০৯ সালে।

নুরুল ইসলাম

এর পরের ১৪ বছরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবরে তাঁর পাঁচটি বাড়ি হয়েছে। সামান্য বেতনে টেকনাফে চাকরি শুরু করার সময়ই জড়িয়ে পড়েন ইয়াবার কারবারে। মূলত ইয়াবা ব্যবসার টাকা বৈধ করতেই আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার কাগুজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। নুরুল ও তাঁর স্ত্রীর নামে মোট ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ওই সব হিসাবে গত এক যুগে ১৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে মাদক, জাল টাকাসহ ঢাকার আদাবর এলাকা থেকে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

পরে র‍্যাব তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অনুসন্ধানের জন্য সিআইডিকে চিঠি দেয়। দীর্ঘ ১৫ মাস অনুসন্ধান করে সিআইডি ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় তাঁর পাঁচটি বাড়িসহ ১৩ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে। মাদক মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তিনি আর প্রকাশ্যে আসছেন না।

জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ at ১৫:৩৯:০০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ/এমএইচ