বিএনপি ঘনিষ্ঠতা ছাড়তে জাবি প্রশাসনকে ছাত্রলীগের আলটিমেটাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনকে বিএনপি ঘনিষ্ঠতা ছাড়তে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে একজন অধ্যাপকের নিয়োগকে কেন্দ্র করে এই হুশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের বাসায় তিন শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী উপস্থিত হয়। সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিএনপিপন্থীদের অপসারণের জন্য ৭২ ঘন্টা সময় দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, গত ১লা জানুয়ারি রেজিষ্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দিনকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অধ্যাপক সালাহউদ্দিন বিএনপিপন্থী হওয়ায় এই নিয়োগে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অফিস আদেশ এ উল্লেখ করা হয়, ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা জনাব মো. মাসুদুর রহমান ৩১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ অপরাহ্ন থেকে প্রস্তুতিমূলক অবসর গ্রহণের ছুটিতে থাকায় অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে সাময়িক দায়িত্ব প্রদান করা হলো। তিনি প্রচলিত নিয়মে দায়িত্ব ভাতা ও অফিস প্রধানের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন।

আরো পড়ুন:
>নাশকতার মামলায় ফখরুল-আব্বাসের জামিন
>লালপুরে ঘনকুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্থ জনজীবন

জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১শে মে প্রকাশিত ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তি দাবি’ শীর্ষক জাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিতে অধ্যাপক মো: সালাহউদ্দিনের নাম দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের এক নেতা বলেন, ‘অধ্যাপক সালাউদ্দিন একসময় আমাদের সাথে ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। আমরা তার নেতৃত্বে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের উন্নতি প্রত্যাশা করি।’

এব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘যারা এদেশের স্বাধীন সত্তা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করা তাদের কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় তা বোধগম্য নয়। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ৭২ ঘন্টার মধ্যে যেনো মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যোগ্যতম যেকোন ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করা হয়।

আরো পড়ুন:
>নাশকতার মামলায় ফখরুল-আব্বাসের জামিন
>লালপুরে ঘনকুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্থ জনজীবন

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একাধিক শিক্ষক জানান, অধ্যাপক সালাউদ্দিন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক রাজনীতি করতেন। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিসহ বিএনপিপন্থীদের বিবৃতিতে তাঁর নামও ছিলো। অথচ বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থীদের কোণঠাসা করতে দলবদলকারী সুবিধাভোগীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।

এসব বিষয়ে অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আমি কখনও বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম না। তবে বিএনপির কয়েকটি বিবৃতিতে আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে শুনেছি। যখনই জানতে পেরেছি, তখনই মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়েছি। ছাত্রলীগের আল্টিমেটাম এর বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, এব্যাপারে আমার কোনো অভিমত নেই।

জানুয়ারি ০৩.২০২৩ at ১৫:৫২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর