শীতে থাকুন সুস্থ ও সুন্দর

ছবি- সংগৃহীত।

শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে প্রাকৃতিক রুক্ষতা। পরিবেশে ধুলাবালির পরিমাণও পাল্লা দিয়ে বাড়ে। যার ফলে ত্বক হয় রুক্ষ, শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল। দেখা দেয় নানা ধরনের চর্মরোগ। যেহেতু শীতে শরীর আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। কিশোরীদের বয়ব্রণ, নারীর হাত-পা-ঠোঁট ফেটে চৌচির হতেও খুব বেশি সময় নেয় না। এক কথায় শীতে ঠান্ডার পরতে পরতে উঁকি দেয় নানান রকম শারীরিক সমস্যা। যদি শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেকে একটা সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে রাখা যায় তা হলে এসব সমস্যা থেকে অনেকখানিই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

সমস্যা ও সমাধানের পথ

ত্বকের যত্ন

আমাদের দেশে শীতের পরম বন্ধু বলা যায় ময়েশ্চারাইজারকে। প্রতিদিন গোসল শেষে ও প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থাতেই নিজের ত্বকের উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের অভ্যাস করা ভালো। তবে শীতকালে অয়েল বেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উত্তম। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। শীতে মুখ ও শরীরের মরা চামড়া খুবই সাধারণ ঘটনা। এর থেকে মুক্তি পেতে স্ক্রাবিং করতে পারেন সপ্তাহে ২/৩ দিন। গোসলের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে ঠা-া পানি বা অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার না করে উষ্ণ গরম পানিতে স্বল্প সময়ে নিয়মিত গোসল করা উচিত। কেননা, অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের ফলিকলগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে ত্বক আর্দ্রতা হারায়। তবে গোসলের সময় পানিতে সামান্য পরিমাণে এসেন্সিয়াল অয়েলও মেশাতে পারেন। এতে করে ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে।

ঘুম

সুস্বাস্থ্যের অন্যতম চাবিকাঠির নাম হলো ঘুম। সুস্থ থাকতে, সুস্থ জীবন যাপন করতে পরিমিত ঘুমের যে কোন বিকল্প হয় না তা সবাই মানবেন। দৈনিক সাত থেকে আট ঘন্টার ঘুমের আদর্শ হিসেব বছরের অন্যান্য সময় ঠিক না থাকলেও শীতকালে একটু বেশি ঘুমিয়ে পুষিয়ে নিতে পারেন সেটা। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এমনিতেই ঘুমঘুমভাব থাকে বেশি, তাছাড়া দিন ছোট আর রাত বড় হয়ে যায় বলে ঘুমের সময়টা দীর্ঘ হয়ে আসে প্রকৃতির নিয়মেই। তাই শীতকালে মনের আনন্দে ঘুমান, একটু বেশিই, আপনার শরীর খুশী থাকবে।

আরো পড়ুন:
>>>যে কারণে নিয়মিত খালি পেটে পেঁপে খাবেন
>>>ছেলেকে নিয়ে যে আবেগঘন বার্তা দিলেন রাজ

দুধ 

দুধের সাথে খুব বন্ধুত্ব থাক বা চরম শত্রুতা, শীতকালের জন্য দুধকে জায়গা করে দিন আপনার নিত্যের খাদ্যতালিকায়। এমনি এমনি তো আর নয়! কারন হলো, এই সময়টায় আমাদের শরীর যেকোন অসুখবিসুখে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা রাখে বেশি। আপনি যতোই শক্তসমর্থ মানুষ হন, শীতের মৌসুমে হুট করেই বিচ্ছিরি ঠান্ডা বাঁধিয়ে বসবেন না যে এই কথা হলপ করে বলতে পারেন না। দুধ এই নাজুক সময়টায় ভীষণ উপকারী বন্ধু হয়ে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অটুট থাকতে সাহায্য করবে। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে আস্থা রাখুন তাই। এসব খাদ্যবস্তু প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ভিটামিনের বিশাল ভান্ডার।

আরো আছে ফল ও সবজি

যাবতীয় ফল এবং সবজি, যা যা হাতের কাছে পাবেন, বিনা ভাবনায় পেটে চালান করুন। শীতের সবজি তো খাবার টেবিলে অবশ্যই থাকতে হবে। সাথে ফল এবং ফলের তৈরি ভিন্ন ধরনের কোন খাবারে নাশতার চাহিদা মিটিয়ে নিন। এসব খাবার আপনার শরীরকে ভেতর থেকে মজবুত রাখবে শীত মোকাবিলা করার জন্য।

স্নান

 স্নান করুন মধ্যবেলা থাকতেই। দিনের শেষভাগে অথবা রাত করে যাদের গোসল করার অভ্যাস তারা এই মৌসুমে অভ্যাস পাল্টানোর জন্য প্রস্তুত থাকুন। দিনের পূর্ণ আলোয় গোসল সারুন, শরীরে হালকা রোদের ছাঁট লাগতে দিন, তবেই না শরীর আপনার প্রাণবন্ত থাকবে!

পরিচ্ছন্নতা

এই বিষয়ে খেয়াল রাখুন একটু বেশি। বাতাসে কতো কতো রোগজীবাণু ভেসে বেড়ায়, তাদের থেকে বাহ্যিকভাবেও দূরে থাকতে সতর্ক থাকুন। সবসময় ব্যবহারের জামাকাপড় নিয়মিত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখুন। ঘরদোরও জীবাণুমুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন যতোটা পারা যায়।

আরো পড়ুন:
>>>যে কারণে নিয়মিত খালি পেটে পেঁপে খাবেন
>>>ছেলেকে নিয়ে যে আবেগঘন বার্তা দিলেন রাজ

একটু বাড়তি যত্নে রাখুন নিজেকে ও আপনজনদের। এই শীতে সব দুশ্চিন্তা আর জড়তা ভুলে সুস্থ থাকুন, সতেজ থাকুন। শীতকালের এই ভিন্ন আমেজ উপভোগ করুন প্রাণ খুলে।

জানুয়ারি ০২.২০২৩ at ১০:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর