জমে গিয়েছে আমেরিকা, তাণ্ডব চালাচ্ছে বম্ব সাইক্লোন

ছবি- সংগৃহীত।

বম্ব সাইক্লোনের তাণ্ডব অব্যাহত। আমেরিকা এবং কানাডায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-এ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, লক্ষাধিক বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বর্ষশেষের মজা বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। জায়গায় জায়গায় কেবল বরফ ঢাকা। হাওয়া, তুষারঝড় আর কনকনে আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত সাধারণ জীবন।

চার দিকে কেবল বরফ আর বরফ। যত দূর চোখ যায় সাদা আস্তরণে ঢেকেছে বাড়িঘর, রাস্তা, গাছপালা। রাস্তার পাশে দাঁড়ানো গাড়িও ঢেকে গিয়েছে বরফের পুরু আস্তরণে। ‘ফ্রস্ট বাইট’-এর হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে ঘরের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। আমেরিকা এবং কানাডার বিভিন্ন রাস্তা ঢাকা পড়েছে ৮ ফুট থেকে ১০ ফুট পুরু বরফের আস্তরণে। আমেরিকার নানা প্রান্ত হিমাঙ্কের ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে তাপমাত্রা। ঠান্ডায় প্রায় জমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাস্তাঘাটের অবস্থা এমন যে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারে বাধা পাচ্ছে।

ছবি- সংগৃহীত।

দুর্যোগে আমেরিকার অন্তত ২ লক্ষ মানুষ বড়দিন কাটিয়েছেন বিদ্যুৎহীন অবস্থায়। বিদ্যুৎ পরিষেবা কবে, কখন স্বাভাবিক হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুতের খুঁটি ডুবে গিয়েছে বরফের আস্তরণে। দেশে যাতায়াত ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। ক্রমেই বেড়ে চলেছে বম্ব সাইক্লোনের পরিধি।

এখন তা কানাডার কাছে গ্রেট লেক থেকে মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর রিও গ্র্যান্ডে পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে বলে জানাচ্ছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলি। বম্ব সাইক্লোনে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা নাকি নিউইয়র্কের। বাফেলোর তাপমাত্রা এখন মাইনাস ১০ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। শহরটাই মুড়ে গিয়েছে তুষারের চাদরে। আমেরিকার মন্টানা স্টেটের পরিস্থিতিও ভয়াবহ।

ছবি- সংগৃহীত।

তীব্র তুষার ঝড়ের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলির মধ্যে এই অঞ্চল একটি। এখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, নতুন করে তুষারঝড়ের কবলে পড়তে পারেন ৮০ লক্ষ আমেরিকাবাসী।

নিউ ইংল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যার কবলে পড়েছেন অনেকেই। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা আবার সিয়াটল এবং পোর্টল্যান্ডের বরফমোড়া রাস্তায় স্কেটিংয়ে নেমেছেন। বিমান বন্দরের নাইট ল্যান্ডিং সিস্টেম অকেজো হয়ে পড়েছে।

রানওয়েতে জমে গিয়েছে পুরু বরফের স্তর। বিশেষ পদ্ধতিতে রানওয়ে থেকে বরফ গলনোর কাজ শুরু করছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে আবহাওয়া যা, তাতে এখনই উড়ান পরিষেবা চালুর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

ছবি- সংগৃহীত।

কত দিন এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাটাতে হবে? আমেরিকরা সংবাদমাধ্যমগুলি জানাচ্ছে, এখনই নিস্তার মিলছে না ঠান্ডা এবং তুষারপাত থেকে। দিন কয়েক প্রবল শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারপাত চলবেই। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

সূত্র – আনন্দ বাজার

ডিসেম্বর ২৭.২০২২ at ১১:০২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর