সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কন্টেনার ডিপোতে শনিবার রাতের ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত ও দগ্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান রোববার (৫ জুন) দুপুরে জানান, উদ্ধার কাজ চলছে। তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও বারবার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ডিপোতে রাসায়নিক থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে।

বিএম ডিপো নামে ওই কন্টেইনার টার্মিনালে শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আগুন লাগে। পরে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দ প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায়। কেঁপে উঠে কয়েক কিলোমিটার এলাকা।

চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে জানিয়েছেন রাসায়নিকের কারণে পুরো এলাকায় বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে।

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, রোববার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত মোট ৩২ জনের মরদেহ মর্গে এসেছে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার জানান,  মৃতদের মধ্যে পাঁচজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।

নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মনিরুজ্জামান(৩২), একই উপজেলার নাপোরা এলাকার মহিউদ্দিন(২৪), ভোলার হাবিবুর রহমান(২৬) ও রবিউল আলম (১৯)। এদের মধ্যে মহিউদ্দিন নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আহত ও দগ্ধদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন পুলিশ রয়েছেন। এদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মেডিকেলের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন বেরসকারি হাসপাতালেও আহতদের নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস রাতেই আহতদের সেবায় নগরীর চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

রোববার (৫ জুন) সকালে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন ঘটনাস্থলে যান। তিনি এসময় সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার ও আহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীর ১ ইঞ্জিনিয়ার কোরের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিরা সুলতানা বলেন, সমুদ্রে যাতে রাসায়নিক না যায়, সেটা প্রটেক্ট করাই এখন আমাদের মূল কাজ। সে লক্ষে কাজ চলছে। কিন্তু কয়টা কন্টেইনারে রাসায়নিক ছিল তা এখনো জানা যায়নি।