টিকিটের জন্য রাতভর লাইনে নারীরাও, সেহরি ও ইফতার লাইনেই

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় শনিবার। প্রথম দিন টিকিট না পেয়ে অনেকেই লাইন থেকে না সরে পরের দিনের অপেক্ষায় ছিলেন। অনেকে আবার দ্বিতীয় দিনের টিকিট পেতে রাতেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। লাইনে থাকা এসব টিকিটপ্রত্যাশীদের মধ্যে নারীরাও ছিলেন। প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ আনন্দ উপভোগ করবেন বলে টিকিট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নির্বিঘ্নে টিকিট পেতে ঘরমুখো মানুষ শুক্রবার রাত থেকেই অবস্থান করছিলেন কমলাপুর রেলস্টেশনে।কিন্তু টিকিট বিক্রি শুরুর পর দেখা গেল নানা জটিলতা। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে সার্ভার জটিলতা, নয়ত আসন স্বল্পতার কথা।

রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট কাটতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন স্মৃতি আক্তার। তিনি বলেন, রাত (শনিবার) ১০টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। সারা রাত লাইনেই ছিলাম। সেহরিও এখানেই করেছি।

একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে চারটি টিকিট দেওয়ার কথা থাকলেও কখনও কখনও সেটা পেতেও বেগ পেতে হচ্ছিল বলে জানালেন টিকিট কাটতে আসা মানুষ।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে। কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেতে রাত থেকেই অনেকে কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

তবে কাউন্টারের পাশাপাশি রেলওয়ে অনলাইনেও ৫০ শতাংশ টিকিট রেখেছে। তাই ‘সুযোগ’ হাতছাড়া না করতে লাইনে দাঁড়িয়েও অনলাইনে টিকিট কাটকে ঢুঁ মারছেন অনেকে।

শনিবার সকাল ৮টার কিছু সময় পর কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এ সময় অনেকের হাতে থাকা মোবাইল স্ক্রিনে রেলওয়ের ই-টিকিট ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে দেখা যায়।

টিকিটপ্রত্যাশী আয়েশা সিদ্দিকা এশা বলেন, গতকাল রাত ১১টায় মহাখালী থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখন সাড়ে ১০টা (সকাল) বাজে। এখনো বেশ কয়েকজন সামনে আছে। রংপুরে যাবো ঈদ করতে। কিন্তু টিকিট কাটতে এসেই এতো ভোগান্তিতে পড়েছি। সেহরি এখানেই করতে হয়েছে।

উপচে পড়া ভিড়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকিট পেয়ে অধিকাংশের মুখে ছিল হাসি। তবে কয়েকটি পথে চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কোচের টিকিট পাননি বলে অভিযোগ করেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।

টিকিট বিক্রিতে ধীরগতির জন্য কিছুক্ষণ পরপর টিকিটের সারিতে হইচই ও হর্ষধ্বনি শোনা যাচ্ছিল। যেমন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের টিকিট শেষ হয়ে যায়। তখন সারিতে থাকা অপেক্ষমাণ লোকজন টিকিটের জন্য চিৎকার শুরু করেন।

একই অভিযোগ জানিয়ে লাইনে থাকা আরেক নারী বলেন, স্বামীকে নিয়ে গতকাল রাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। নারীদের লাইনও এতো দীর্ঘ হবে জানতাম না।

কমলাপুর ছাড়াও রাজধানীর আরও ৪টি স্টেশনে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে টিকিট। শুধুমাত্র কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টিকিট কেনার চাপ কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে।

রাজশাহীগামী ধুমকেতু ট্রেনের টিকিট কাউন্টারের লাইনের সিরিয়ালে ৯৩ জনের পেছনে অপেক্ষা করছিলেন মনছুর আহমেদ নামের।

যাত্রার সময় যাত্রীর জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা হবে কি না, জানতে চাইলে স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারোয়ার বলেন, স্টেশনের কর্মকর্তারা, ট্রেনের টিকিট এক্সামিনাররা এটা নিশ্চিত করবেন। যে এনআইডি দিয়ে টিকিট কেনা হয়েছে, যাত্রীর সঙ্গে সে এনআইডি থাকতে হবে। ভ্রমণের সময় যাত্রীকে এনআইডির কপি রাখতে হবে।

এপ্রিল ২৪,২০২২ at ১২:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রানি/রারি