থানচিতে পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থান “তমা তুঙ্গী”

বান্দরবানে থানচিতে নতুন সড়কে চার কি.মি. নামক স্থানে তমা তুঙ্গী একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। নবীনতম পর্যটন তমা তঙ্গী আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর এক মাস পার না যেতেই স্থানীয় কিংবা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের স্থানে পরিণত হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের (ইসিবি) উদ্যোগে উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে তমা তুঙ্গী নামে পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। থানচি-রেমাক্রী-মদক-লিকক্রে নতুন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করার সময় তমা তুঙ্গী পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলেন সেনাবাহিনীর ইসিবি ব্রিগেড। কয়েকমাস আগে তমা তুঙ্গী পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও এটি ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বরের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করা হয়।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, যাতায়াতের সুবিধা থাকায় পর্যটকেরা সহজেই তমা তুঙ্গীতে যেতে পারেন। তমা তুঙ্গী পর্যটনের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে থানচিতে ভ্রমনে আসার পর্যটকেরা ছুটে যান।

তাঁরা আরো বলেন, থানচি সদরে সবচেয়ে নিকটতম গড়ে তোলা তমা তুঙ্গী পর্যটকদের মন কেড়েছে। এই পর্যটনের মনোরম পরিবেশের বিকেলে আড্ডার জন্যও উপযুক্ত স্থান হওয়াই তমা তুঙ্গী থানচিতে অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ট্যুরিস্ট ভিউ পয়েন্ট-১ ও ট্যুরিস্ট ভিউ পয়েন্ট-২ নামে পাশাপাশি দুটি স্থান রয়েছে তমা তুঙ্গীতে। এরই মধ্যে ট্যুরিস্ট ভিউ পয়েন্ট-১ এ গেলে সেখান থেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তজিংডং, ২য় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং ও ক্রাউডং (ডিম পাহাড়) অবলোকন করা যায়।

দিক নির্ণয়ের জন্য সেখানে তিনটি ভিউ পয়েন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটকরা সেখানে গেলেই এ তিনটি স্থান দেখার সুযোগ পায়। বসার কয়েকটি বেঞ্চ নির্মাণ করে দেয়ায় পর্যটকরা সেখানে বসে চারদিকের মনোরম পরিবেশ দৃশ্যটি দেখতে পারে। রয়েছে ছোট্ট পরিসরে একটি পানির ফোয়ারা, ঘুরে বেড়ানোর বিশাল পরিসর।

আরো পড়ুন :
নারায়ণগঞ্জে স্কুলের সীমানা প্রাচীর ধসে শিশুসহ আহত ৩
অবশেষ ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বিধবা ভাতা পেলেন, অঞ্জনা বালা

অন্যদিকে ট্যুরিস্ট ভিউ পয়েন্ট-২ এ গেলে সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে বিশাল একটি বৃক্ষ ছায়া দিয়ে রাখছে পুরো পর্যটন এলাকাকে। পর্যটকরা বেড়াতে গেলে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে অন্যরকম আনন্দ সাথে পাহাড় আর প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হচ্ছে সকলেই। তাই পর্যটনকেন্দ্রটি নতুন হলেও দিন দিন পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে থানচির তমা তুঙ্গীতে ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটকরা জানান, তমা তুঙ্গী পর্যটনকেন্দ্রটি দু,টি ভাগে বিভক্ত করে গড়ে তোলা এ পর্যটনের চারপাশেই সবুজ পাহাড়ের সমারোহ। এখানে সবচেয়ে আকর্ষনীয় হলো তমা তুঙ্গী থেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তজিংডং, কেওক্রাডং ও ক্রাউডং (ডিম পাহাড়) দেখার সুযোগ হয়।

তাঁরা আরো জানান, দেশের রাজধানী ঢাকা শহরসহ দেশের যে কোনো শহর থেকে বান্দরবান হয়ে থানচির যাতায়াতের জীপ, মাইক্রো বা বাস কিংবা মোটরসাইকেল চড়ে তমা তুঙ্গীতে এসে পৌচ্ছালে মনটা জুড়িয়ে যায়। এই পর্যটনের সুপ্রশস্ত ঘুরে বেড়ানোর স্থানসহ মনোরম পরিবেশের উপভোগ করতে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে।

থানচির তমা তুঙ্গীতে যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম বা দেশের যেকোনো স্থান থেকে বান্দরবান (বান্দরবানের আলীকদম হয়েও) থানচি উপজেলা যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বান্দরবান জেলা সদর থেকে বাস, জীপ ও মাইক্রো, মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে থানচি সদরে যাওয়া যায়। জেলা থেকে সড়কপথে তিন ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে থানচি সদরে পৌচ্ছালে সেখান থেকে নতুন সড়কে চার কিঃমিঃ নামক স্থানে গেলেই তমা তুঙ্গী পর্যটনকেন্দ্র।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গণি ওসমানী বলেন, বান্দরবানে যে কয়েকটি উপজেলা রয়েছে তার মধ্যে থানচি অপূর্ব কেননা? এখানে সব কিছুই রয়েছে অর্থাৎ পর্যটকদের বেড়ানো আর উপভোগের জন্য পর্যটনের পথে প্রান্তরে রয়েছে মেঘ, পাহাড়, নদী আর ঝর্ণাসহ অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র।

তিনি আরো বলেন, তমা তুঙ্গী চালু হওয়ায়তে থানচিতে পর্যটক আগমনে সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে এবং পর্যটকরা নিরাপদে ভ্রমন করতে পারে সেদিকে উপজেলা প্রশাসনসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ নজর রেখেছে বলে জানান তিনি।

জানুয়ারি ১৫.২০২১ at ২১:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/চিঅমা/রারি