যে কারণে সামুদ্রিক মাছ খাবেন!

বলা হয়ে থাকে, মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালির খাবার পাতে ধোঁয়াওঠা গরম ভাতের সঙ্গে মাছের কোনো পদ না থাকলে খাবার জমে না যেন। তবে মিঠা পানির মাছের তুলনায় সামুদ্রিক মাছের পুষ্টিগুণ বেশি। এটি খুব কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার। এখানে স্বাদের চেয়েও বড় বিষয় হলো, উপকারিতার দিক দিয়ে এর গুরুত্ব।

সামুদ্রিক মাছে যে সব পুষ্টিগুণ

দ্রুত পরিপাকযোগ্য
সহজে হজমযোগ্য আমিষ সামুদ্রিক মাছের আমিষ সহজে পরিপাকযোগ্য। এ ছাড়া দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয়রোধে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন বি-এর উৎকৃষ্ট উৎস।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিট থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রেটিনার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ঘাটতি পূরণ
এসব মাছে প্রচুর সিলেনিয়াম রয়েছে, যা দেহে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। স্যামন, ম্যাকরেল মাছ থেকে ভিটামিন-এ ও ডি পাওয়া যায়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন-এ ও ডি থাকে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হৃদরোগে আক্রান্ত ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সামুদ্রিক মাছ উপকারি।

মস্তিকের ক্ষমতা বৃদ্ধি
নিউরোলজিস্টদের মতে শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে থাকলে ব্রেনের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। প্রতিদিন সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরে ডিএইচ এ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
লো ফ্যাট ডায়েট অনুসরণ করার পাশাপাশি প্রতিদিন যদি সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যায়, তাহলে প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

আরো পড়ুন:
ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে: ঢাবি চ্যান্সেলর
যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন ২৩ জানুয়ারি

রোগ প্রতিরোধ
এতে জিংক ও আয়োডিন আছে। জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ
সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি এসিড যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারি। এই ফ্যাটি এসিড হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

নার্ভের উন্নতি
সামুদ্রিক মাছ খেলে নার্ভের রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে। এতে হাতপায়ের অসারতা, হঠাৎ ক্লান্তি এবং পেশির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ডি থাকে। যা অনেক জটিল রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে। নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খেলে বেশ কিছু সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – ইলিশ, কোরাল, রূপচাঁদা, বাইলা, চিংড়ি, ফোঁপা, লইট্টা ও লাইখ্যাসহ প্রভৃতি। এগুলোতে আছে প্রচুর মিনারেল ও ভিটামিন।

লেখক: সৈয়দা আফসারা তাসনিম, শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি

ডিসেম্বর ০১.২০২১ at ১৯:৩৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ