ঘোড়াঘাটে অপহরণের নাটক, অবশেষে ৮ বছর পর আটক আইমুদ্দিন

দিনাজপুরের ঘোড়াঘটে জমি ক্রয় বিক্রয়ের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা অপহরণ মামলা করে স্বেচ্ছায় দীর্ঘ ৮ বছর আত্মগোপন থেকে অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা খেলেন মো. আইমুদ্দিন(৬২) নামের এক ব্যক্তি।

২০১৩ সালের ১৮ মার্চ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রুপসী পাড়া (ভেকসি) গ্রামের মৃত কিসমতুল্লাহর ছেলে মো. আইমুদ্দিন একই গ্রামের মৃত তাছের আলী প্রধানের ছেলে মোজাহার আলী প্রধানের সাথে জমি বিক্রয় নিয়ে একটি দ্বন্দে নিখোঁজ হন।

মো. আইমুদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তার ছেলে মো. আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে মোজাহার আলী ও এক জন দলিল লেখকসহ তার দলবলের বিরুদ্ধে আদালতে একটি অপহরণ মামলা করেন।

এই মামলায় জামিনে এসে মো. মোজাহার আলী জমি ক্রয়ে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মো. আইমুদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করেন।

বিচার চলাকালীন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত আসামী মো. আইমুদ্দিনকে দুই বছরের সাজা প্রদান করে। দীর্ঘ ৮ বছর আত্মগোপনে থাকার পর সোমবার দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাখিমুজ্জামান রানা এবং কনস্টেবল শরিফসহ সঙ্গীয় ফোর্স মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার নয়াগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

মো. আইমুদ্দিন পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের কথা স্বীকার করেছেন। মো. আইমুদ্দিন আত্মগোপনের পর ঘোড়াঘাট থেকে পালিয়ে তিনি প্রথমে বগুড়া এবং পরে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকায় দীর্ঘদিন অবস্থান করেন।

সেখানে থাকাকালীন চর অঞ্চলের কিছু লোকের সাথে তার পরিচয় হয় এবং সেই সুবাদে তিনি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাকুটিয়া চরে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করে তিনি বসবাস করে আসছিলেন।

সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু হাসান কবির, পিপিএম (সেবা) সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ সালে আইমুদ্দিন তার প্রতিবেশী মো. মোজাহার আলীর কাছে ৪২ শতক জমি বিক্রয়ের জন্য চুক্তি করেন।

আরো পড়ুন :
জবি শিক্ষার্থীদের এনআইডি কার্যক্রমের উদ্বোধন
তৃতীয় বারের মতো জেলায় শ্রেষ্ঠ হলেন শিবচর থানার ওসি মিরাজ হোসেন

চুক্তি অনুযায়ী মোজাহার আলী ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মো. আইমুদ্দিনকে দেন। তবে জমি রেজিষ্ট্রি করতে গেলে মো. মোজাহার আলী দেখতে পান কাগজে ৪২ শতকের পরিবর্তে ৩৬ শতক লেখা। এ নিয়ে দুপক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। পরে জমির মালিক মো. আইমুদ্দিন কৌশলে তার জমি ছেলে-মেয়ের নামে লিখে দিয়ে আত্মগোপন করেন।

পরে তার ছেলে মো. আব্দুল আজিজ মো. মোজাহার আলীকে ফাঁসাতে আদালতে গিয়ে মিথ্যা অহরণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। ওসি আবু হাসান কবির আরো বলেন, অপর দিকে মো. মোজাহার আলী জমি ক্রয়ে জালিয়াতির অভিযোগ এনে যে মামলা করেছিলেন, সেই মামলায় আত্মগোপনে থাকা মো. আইমুদ্দিনের ২ বছর সাজা হয়। সাজ প্রাপ্ত আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে মো. আইমুদ্দিনকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অক্টোবর ২৬.২০২১ at ১৮:২৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাউআমা/রারি