ভাতিজাদের ফাঁসাতে মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন বাবা

অভিযুক্ত বাবা সোলেমান

কুমিল্লার চান্দিনায় কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় বাবা সোলেমান মিয়া জড়িত বলে জানিয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম.তানভীর আহমেদ।। সাত শতক জমির লোভে ভাতিজাদের ফাঁসাতে বাবা তার মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন বলে জানা যায়।

চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

গত ২ অক্টোবর চান্দিনা উপজেলায় গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মাদ্রাসাছাত্রী সালমা আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, বছর খানেক আগে সোলেমান মিয়ার সঙ্গে সাত শতক জমি নিয়ে তার ভাতিজা শাহ আলম এবং শাহ কামালের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনও মীমাংসা হয়নি। পরে উভয়পক্ষ মামলা করে।

মেয়ের মতো বাবাকেও গলা কেটে হত্যার চেষ্টা পরে ওই সাত শতক জমির লোভে ভাতিজাদের হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে আপন মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করে সোলেমান। এ নিয়ে তার ভাই লোকমান হোসেন, আবদুল বাতেন, প্রতিবেশী আবুল হোসেন, আবদুর রহমান, সফিউল্লাহ ও খলিলের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার আগের দিন সোলেমান তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরে রাতে বাবা ও চাচারা মিলে প্রথমে শ্বাসরোধ করে সালমাকে হত্যা করে। পরে লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়ার আগে গলা কেটে এবং কুপিয়ে লাশ ক্ষতবিক্ষত করে। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সোলেমান বাদী হয়ে এ ঘটনায় তার ভাতিজাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্ত অবস্থায় পুলিশ খলিল এবং আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলে সোলেমান পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য রাতের আঁধারে নিজের গলা ও শরীরে রক্তাক্ত জখম করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোলেমান জানায় তার মেয়ের মতো তাকেও হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা এম তানভীর আহমেদ আরও বলেন, তদন্তে বাদী, সাক্ষী ও আসামিদের অবস্থান এবং বাদীর এজাহারের বক্তব্যের সঙ্গে তথ্যের গরমিল পাওয়া যায়। এছাড়া বাদীর পক্ষের সাক্ষীদের কথাবার্তা ও ঘটনার রাতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরস্পরবিরােধী বক্তব্য ও তথ্য পাওয়ায় সন্দেহ বাড়ে। এ অবস্থায় প্রতিবেশী আ. রহমান ও মো. খলিলকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা সালমা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।

আরো পড়ুন:
মধুখালীতে শিশু কন্যা ধর্ষনের অভিযোগে আটক-১
সদ্যোজাত সন্তানকে ফেলে প্রেমিকের সাথে উধাও মা!

পরে রহমান ও খলিলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, সোলেমান বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাকেসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজল হোসেন, চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান, ডিআইওয়ান মনির আহমেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অক্টোবর ০৬.২০২১ at ১৬:২৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বাটি/জআ