এযুগের হাতেম তাঈ দানবীর মহিউদ্দিন তালুকদার

একজন জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী, নিঃস্বার্থ সমাজ সেবক পরোপকারী মহিউদ্দিন তালুকদার (মোহন মেম্বার)। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত, দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেন। পরিণত হয়েছেন অসহায় মানুষের বন্ধু হিসেবে।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১ নং রাজানগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জমিদার মরহুম রহম আলী তালুকদার বাড়ীতে জন্মগ্রহন তিনি। তার পিতার নাম মরহুম আবুল হাসেম তালুকদার। তিনিও এলাকার দানবীর হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। আবুল হাশেম তালুকদারও অসহায় ব্যক্তিদের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।

একমাত্র পুত্র সন্তান মোহন তালুকদার রাঙ্গুনিয়ার সম্ভান্ত্র পরিবারে জন্ম নিয়ে বিদেশে ব্যবসা করে শহরের অট্টালিকায় বসবাসের সুযোগ থাকলেও মিশে গেছেন যে মাটিতে বড় হয়েছেন সে গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে। আলোর কোন সীমানা নেই। অন্ধকার দুর করাটাই আলোর ধর্ম।

তেমনি পূর্বপুরুষের ন্যায় উত্তরসূরীর সূত্র ধরে নিজ এলাকায় শিক্ষা বিস্তার ও সমাজ সেবায় ব্রত হয়ে নিজ কর্ম গুনে সমাজের নারী পুরুষ সব বয়সের মানুষের কাছে সমান প্রিয় মোহন মেম্বার। দলমত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের জন্য অবদান রেখে নিজেকে সব সময় জড়িয়ে রাখেন।

একদিন অন্ধকার দুর হয়ে সমাজ আলোকিত হবে, সব মানুষ একসাথে হাসবে। সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষের জয় হবে এমনই স্বপ্ন দেখেন এ গুনী মানুষটির। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অসহায়, দরিদ্র, অবহেলীত মানুষ ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। নিজ ভূমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন শতাধিক ভূমিহীন পরিবারকে। অসহায় মানুষরাও বিপদে পড়লে ছুটে আসেন তার কাছে।

দানের মাধ্যমে সমাজের মানুষের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব নয়। এ কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলছেন তিনি। মনিষীদের বানী ‘আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেবো’। এ শিক্ষিত মা তৈরির জন্য তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাসজিদ, মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া মক্তবখানা, গরুর বাজার ও পাঠাগার স্থাপন করেছেন। যেগুলোর দেখাশোনা করছেন তিনি নিজেই।

আরো পড়ুন :
যেসব খাবার বাদ দিলে চুল পড়া বন্ধ হতে পারে
শিক্ষার্থী থাকলেও নেই স্কুলভবন-শিক্ষক

তাদের স্থাপিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বাৎসরিক পড়া লিখার খরচ চালিয়ে আসছেন তিনিই। প্রতিষ্ঠা করেছেন রাণীরহাট আল আমিন হামেদিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা। রাণীরহাট আর এ বি এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী রহম আলী ইসলামী সমাজ কল্যাণ পাঠাগার, মঘাছড়ি হাজী রহম আলী ও তামান্না খাতুন ফোরকানীয়া মাদ্রাসা, রাণীরহাট হাজী রহম আলী জামে মসজিদ, মঘাছড়ি হাজী রহম আলী জামে মসজিদ, রাণীরহাট হাজী রহম আলী গরুর বাজারসহ একাধিক ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উপ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদকসহ ১৩ নং ইসলামপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের দায়িত্বে রয়েছেন।

২০১০ সালে সমাজসেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় দাদা রহম আলী তালুকদারের পক্ষে ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার সন্মাননা পদক’ গ্রহণ করেন তিনি। পিছিয়ে পড়া অবহেলিত জনপদের অসচ্ছল, অসহায় জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে তাদের এগিয়ে নিতে মঘাছড়ি এলাকায় পিতা মরহুম আবুল হাশেম তালুকদারের নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এছাড়াও মোহন তালুকদার নিজ তহবিল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদান, এলাকার গরীব মেয়েদের বিয়েতে আর্থিক সহায়তা, মেধা বৃক্তির মাধ্যমে প্রতিভাবান গরিব ছাত্র- ছাত্রীদের লেখা পড়ার খরচ প্রদান, দুস্থদের আর্থিক সহায়তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান অনুদানের মাধ্যমে সহযোগীতা করে আসছেন।

এসবের লক্ষ একটাই দারিদ্রতা, যৌতুক ও মাদকের ছোবল থেকে এলাকার মানুষকে মুক্তির পথ দেখানো এবং ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়া। কোন মানুষ সমস্যা ও সহযোগীতার জন্য তাঁর কাছে গিয়ে কোনদিন খালি হাতে ফেরেনি। মসজিদ, মাদ্রাসা ছাড়াও তিনি মন্দির, অসহায় মানুষের চিকিৎসা, গরীব মেয়ের বিয়েতে অনুদান দিচ্ছেন নিয়মিত। এককথায় প্রচার বিমুখ এ মানুষটি নিজের নাম প্রকাশ না করে আড়ালে থেকে নিরবে নিভৃর্তে কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন।

মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য এ বাস্তব উপলব্ধী তিনি মনে প্রাণে লালন করেন। যারা শত কোটি টাকার মালিক তারাও যেন সেবার মানসিকতা নিয়ে তাঁর মত সমাজের হত দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিভাবান ফুলের মত শিশু গুলোকে ঝরে পড়ার আগে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে এগিয়ে আসেন ।

মহিউদ্দিন তালুকদার বলেন, জীবনে পরিশ্রম, কর্মনিষ্ঠা, একাগ্রতা আর মনোবল আজকে আমাকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন তাই আমি সমাজের অসহায়, অস্বচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।

তিনি আরো বলেন, সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষ গুলোর মলিন চেহারা আমাকে কষ্ট দেয়। সমাজের সেই সব মানুষ গুলোর হাতে কিছু টাকা দিলে হয়তো একবেলা ভালো করে বাজার করে পরিবার নিয়ে খাবে। কিন্তু পরদিন থেকে আবার অভাব তাদের পিছু নিবে। এভাবে সমাজে কোনদিন পরিবর্তন আসবেনা। যদি একজন একজন করে প্রতিটি পরিবারে শিক্ষার আলো পোঁছানো যায়।

তা হলে একটি পরিবার, একটি গ্রাম একটি ইউনিয়ন এভাবে একদিন সমগ্র রাঙ্গুনিয়া শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে। অভাব- দারিদ্রতা, মাদক, যৌতুক ও অপসংস্কৃতি এসব অন্ধকার দুর হয়ে যাবে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব এ সমাজের অবহেলিত ও দরিদ্র মানুষের কল্যাণে নিজেকে উজাড় করে দেব।

সেপ্টেম্বর  ১৩.২০২১ at ১৫:২০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমম/রারি