রাঙ্গুনিয়া থানায় জিডি করেছেন মিতু হত্যার আসামি মুছার স্ত্রী পান্না

চট্টগ্রামের আলোচিত পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকান্ডে দায়ের হওয়া নতুন মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন পান্না আক্তার। তিনি মিতু হত্যার অন্যতম আসামি কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুছার স্ত্রী।

গতকাল (৩১ মে) সোমবার তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিতু হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া নতুন মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। এতে অজ্ঞাত কোনো ব্যক্তি তার ক্ষতিসাধন করতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার একদিন পর এবার নিজের জীবনের এবং পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার।

আজ (১ জুন) মঙ্গলবার দুপুরে তিনি রাঙ্গুনিয়া থানায় উপস্থিত হয়ে এই জিডি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া থানার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব মিল্কি।

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে সংগঠিত পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডের পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পান্না আক্তারকে বিভিন্ন মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করে হুমকি দেন। তখন তিনি ওই নম্বরগুলো সংরক্ষণ করতে পারেননি।
গতকাল সোমবার (৩১ মে) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার একদিন পর তিনি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আজ রাঙ্গুনিয়া থানায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। এই হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মামলার ২ নং আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা। আদালতে এ হত্যাকান্ডে মুছার জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কিলিং মিশনে অংশ নেয়া কারাগারে থাকা মমলার অন্য দুই আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার। মুছা ছিলেন মামলার প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সোর্স। তবে মিতু হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন সোর্স মুছা। বর্তমানে মুছা কোথায় আছেন তা বলতে পারছে না পুলিশ।

এদিকে মুছার স্ত্রী পান্না আকতার শুরু থেকেই দাবী করে আসছেন মিতু হত্যাকাণ্ডের পর কিছুদিন পালিয়ে থেকে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁর স্বামী মুছা। যেদিন মুছা আদালতে যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেদিনই (২২ জুন) সকালে বন্দর থানা এলাকার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন লোক তাঁকে আটক করে নিয়ে যান।

অন্যদিকে পুলিশ বলছে মুছাকে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে মুছার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আছে।

আলোচিত মিতু হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ৫ বছর পর হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে ফেনী কারাগারে আছেন তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার। আর মিতু হত্যার কিলিং মিশনের সময় ঘটনাস্থলে থেকে খুনিদের সহযোগিতা করায় আগেই অন্য ২ আসামি রাশেদ ও আহমদ নবী ১৬ সালের (৫ জুলাই) মঙ্গলবার ভোরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ঠান্ডাছড়ি এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।