ধরিত্রী দিবসে সুন্দরবনকে বাঁচার অঙ্গীকার হোক

পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের জন্য আমরা মানব জাতি দায়ি। পরিবেশের গাছ- পালা পাহাড় পর্বত,পশু পাখি, জীব জন্তু এবং প্রাণি নিয়ে আমাদের বাস্তুতন্ত্র। ফলে এগুলো একটি উপদান ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাস্তুতন্ত্র নিয়ম শৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, মেরু অঞ্চলের গলছে বরফ। সেই বরফ গলা তরল এক সময় প্রাণির জীবন মৃত্যুর মুখে ধাবিত হবে।

২২ এপ্রিল, বিশ্ব ধরিত্রী দিবস। পরিবেশ সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে ‘রিস্টোর আওয়ার আর্থ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস। পৃথিবীকে নিরাপদ এবং বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু সংকট এবং পরিবেশ দূষণ রোধে তাতক্ষণিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সারা বিশ্বের পরিবেশ সচেতন মানুষ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে।

এমন সময় দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন করোনা ভাইরাসে পৃথিবীতে মৃত্যু ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে যার কারণে পুরো বিশ্বই থমকে আছে। পৃথিবীর প্রায় সব মানুষের জীবনযাপন যখন এক প্রকার থমকে আছে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের দাপটে। ১৯৭০ সালের ঘটনা। জলবায়ু সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই কোটি মানুষ। সেই থেকেই দিবসটির সূত্রপাত। ১৯৭০ সালে মার্কিন সিনেটর গেলর্ড নেলসন দিবসটির প্রচলন করেন। এ কারণে পরবর্তীকালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করা হয়।

পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে কলে কারখানা থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া যাতে উৎপন্ন না হয় সে দিকে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে৷ শিল্পায়নের জন্য শিল্প দরকার, অর্থনৈতিক উন্নায়ণ প্রয়োজন তাই বলে প্রাণ প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নয়। সকল দেশের মধ্যে বাংলাদেশের দায়িত্ব পৃথিবীকে বাঁচানোর আর বাঁচাতে চাইলে আমাদের দেশের ফুঁসফুঁস ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন” কে বাঁচাতে কার্যকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এই বনের পাশে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ স্থাপনের ফলে বন ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কারন এই কারাখানা থেকে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণের ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ধারনা। আর প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসের ফলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। সময় এসেছে আরেকবার এই ধরিত্রী দিবসে শপথ নেওয়ার সময়।

দেশ বাঁচাতে হলে প্রাণ প্রকৃতি বাঁচাতে হবে।
পরিবেশ বিধ্বংসী সকল প্রকার প্রকল্প বাতিল করতে হবে।

পরিবেশের কথা চিন্তা করে অযথা পাহাড় সমতলে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। নিজ উদ্যোগ বা সরকারি উদ্যোগে প্রতি বছর গাছ লাগাতে হবে।

প্রাণ প্রকৃতি তথা পৃথিবী ভালো থাকলেই মানুষ ভালো থাকবে। মানুষের চেষ্টায় পারে পৃথিবীকে ভালো রাখতে। করোনা কাটিয়ে পৃথিবী আবার সুস্থ ও স্বাভাবিক হোক সেই প্রত্যাশাই থাকবে।

লেখকঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ
শিক্ষার্থী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ