মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান এবং আটক সু কিসহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তির জন্য রাজধানী নেপিদোসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এ সময় প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আন্দোলনকারীরা হাতে ‘সেনাশাসন মানি না’, ‘সেনাকে নয় মিয়ানমারকে সমর্থন দাও’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভে যোগ দেন দেশটির প্রখ্যাত অভিনেতা পাইং তাখোনসহ অনেক মডেল ও অভিনেতা-অভিনেত্রী। গিটার হাতে রাস্তায় নামেন শিল্পীরা। প্রতিবাদী গান গেয়ে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বিভিন্ন শহরে বৈদ্যুতিক মোমবাতি হাতে রাতেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আন্দোলনকারীর।
১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতার দখল নেয় সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থান রক্তপাতহীন হলেও এখন গণবিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ শুরু করেছে জান্তা। মঙ্গলবার নেপিদোয় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে মিয়ানমার পুলিশ প্রথমে জলকামান এবং পরে রাবার বুলেট ব্যবহার করে। নেপিদোর বিক্ষোভে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক নারী।
এদিকে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশ ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাইডেন এই প্রথম নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ প্রয়োগ করলেন। বাইডেন ঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সামরিক কর্মকর্তা, তাদের পরিবারের সদস্য ও সেনাবাহিনীসংশ্লিষ্ট ব্যবসা। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এক বিলিয়ন ডলারের সরকারি তহবিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যাতে ব্যবহার করতে না-পারে, সে জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাইডেন জানান, তার প্রশাসন এ সপ্তাহেই নিষেধাজ্ঞার প্রথম লক্ষ্যগুলো ঠিক করবে।
বাইডেন বলেন, আমরা মিয়ানমারের ওপর কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমার সরকারের সম্পদ জব্দ করতে যাচ্ছি। তবে স্বাস্থ্যসেবা, সুশীল সমাজসহ যেসব ক্ষেত্রের সঙ্গে মিয়ানমারের জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার বিষয় জড়িত রয়েছে, সেগুলোর প্রতি আমরা সমর্থন জানাব। মিয়ানমারের জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের এ প্রতিবাদ পুরো বিশ্ব দেখছে। এ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বাড়ছে। যারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করছে, তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান বাইডেন।
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১ at১০:২৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভিকে/এমআরএইস