সরকারি টাকা ও বিশেষ ওএমএস কার্ড বিতরণের নামের তালিকা প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ভাবে অসহায় মানুষের জন্য ২৫০০ টাকা বরাদ্দ ও বিশেষ ওএমএস কার্ড বিতরণের তালিকা অনলাইন ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করার দাবিতে, মাগুরা জেলা করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় গণ কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় । মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গণকমিটির আহ্বায়ক কাজী ফিরোজ ও পরিচালনা করেন যুগ্ম সদস্য সচিব শম্পা বসু । এ সময় বক্তব্য প্রদান করেন যুগ্ম আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী , বিশিষ্ট সমাজ সেবক কামরুজ্জামান চপল, এ এফ এম বাহারুল হায়দার বাচ্চু।

আরো পড়ুন :
১২ দিনে ৫টি খুন, আটক হচ্ছে না আসামিরা
দেশে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’
মঙ্গলবার থেকে যশোরে ফের বন্ধ হচ্ছে দোকান ও মার্কেট

এ সময় বক্তারা বলেন, গত ১৪ মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবারকে ঈদের আগে ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মানববন্ধন থেকে মাগুরা জেলার ক্ষেত্রে ২৫০০ টাকা বরাদ্দ ও বিশেষ ওএমএস কার্ড বিতরণের তালিকা অনলাইন ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করার দাবি জানান বক্তাগণ ।

ত্রাণ বা কোন কার্ড বা বরাদ্দ বিতরণের নিয়ম হচ্ছে অতি দরিদ্র, তারপর দরিদ্র, তারপর নিম্নবিত্ত এভাবে পর্যায়ক্রমে দিতে হবে । কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না । মেম্বার বা কাউন্সিলরগণ যারা বিতরণের দায়িত্ব পালন করছেন তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী পরিচিত বা দলীয় পরিচয় দেখে ত্রাণ বা বিশেষ ওএমএস কার্ড দিচ্ছেন বলে অনেকক্ষেত্রে অভিযোগ রয়েছে ।

বক্তাগণ আরো জানান, গত ১০ মে থেকে সারাদেশে সীমিত আকারে বিপনীবিতান চালু করা হয়েছে । মাগুরা জেলায় এটা সীমিত আকারে নেই, মার্কেটগুলোতে রীতিমতো ভীড় জমে যাচ্ছে এবং কোন স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না। মাগুরায় এখন করোনা রোগী ১৯ জন। এই পরিস্থিতিতে রোগী অনেক বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু অনেক দাবি জানানোর পরও করোনা চিকিৎসা সেবার কোন আয়োজনই করা হয়নি, নমুনা পরীক্ষাও বাড়ানো হয়নি।

সাধারণ ছুটির গত প্রায় দেড় মাসে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ তার সামান্য যে সঞ্চয় ছিল তা শেষ বা তার যে সম্পদ ছিল তা বিক্রি করে বা ধার দেনা করে তারা চলেছে ।যদিও দোকানপাট খুলে গেছে তবু পেশাগত ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস জনিত প্রভাব থাকবে দীর্ঘ দিন। মেসে রান্না, গৃহকর্মী, হোটেল কর্মী, পরিবহণ শ্রমিক, সেলুন কর্মী, নন-এমপিও শিক্ষক এমন অনেক পেশাজীবীর পক্ষেই স্বাভাবিক সময়ের উপার্জনে আসতে সময় লাগবে।

এ পরিস্থিতিতে ১১ দফা দাবি নিম্নরূপ:

১। ত্রাণসামগ্রীর পরিমাণ বৃদ্ধি, ত্রাণের আওতা ও ত্রাণ বিতরণের জন্য গ্রহীতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। যেন কেউ ত্রাণ বঞ্চিত না হয়।

২। ২৫০০ টাকা বরাদ্দ ও বিশেষ ওএমএস কার্ড বিতরণের তালিকা অনলাইন ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে । ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় দলীয়করণ বাদ দিয়ে সর্বদলীয় গণকমিটি গঠন করতে হবে।

৩। দরিদ্র, নিম্নবিত্ত কর্মহীন শ্রমজীবী প্রতিটি পরিবারকে একটি বিশেষ ওএমএস কার্ড প্রদান করতে হবে।
৪। দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, কর্মহীন শ্রমজীবী প্রতিটি পরিবারকে ন্যূনতম ৬ মাস আর্মি রেটে রেশন বরাদ্দ করতে হবে।

৫। মাগুরা জেলা সরকারি হাসাপাতালে অবিলম্বে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে, আইসিইউ ও কমপক্ষে ৫টি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬। সরকার নির্ধারিত দামে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে।

৭। ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিতদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

৮। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সচল না হওয়া পর্যন্ত মাগুরা জেলা সকল মেস ভাড়া মওকুফ করতে হবে।

৯। গর্ভবতী মা ও ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য শিশুখাদ্য, ওষুধসহ বিশেষ বরাদ্দ করতে হবে।

১০। নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী, গৃহকর্মী, সেলুন কর্মী (নরসুন্দর), হোটেল কর্মী, হস্তশিল্পী, স্বর্নকার, দর্জি শ্রমিক, পরিবহণ শ্রমিকসহ দুর্যোগে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পেশাজীবীদের বরাদ্দ দিতে হবে।

১১। মাগুরা টেক্সটাইল মিলের ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের আর্থিক বরাদ্দ ও পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে ।

মে ১৭, ২০২০ at ২১:২২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএম/এএডি