চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গৃহবধূকে হত্যার পর আত্মহত্যা প্রচার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রোখছানা আক্তার মুন্নি (২৪) নামে এক গৃহবধুকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে রাত ৮ টার দিকে ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মুন্নী ওই বাড়ীর কাতার প্রবাসী মুক্তার হোসেনের স্ত্রী। আরাফাত হোসেন মাহিন নামে তাদের ৩ বছর বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে। মুন্নীর ভাই ফিরোজের দাবী তাকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার ( ৫ এপ্রিল) রাত ৮ টার সময় উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ঘোড়ামারা পশ্চিম অলিনগর গ্রামের মোহাম্মদ সওদাগর বাড়ীতে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে মুন্নির শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরের স্ত্রী (জা)সহ বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ঘোড়ামারা পশ্চিম অলিনগর গ্রামের মোহাম্মদ সওদাগর বাড়ীর কাতার প্রবাসী মুক্তার হোসেনের সাথে একই ইউনিয়ের রোখছানা আকতার মুন্নির বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে আরাফাত হোসেন মাহিন নামে ৩ বছর বয়সের একটা শিশু সন্তান রয়েছে।
নিহত মুন্নির ভাই ফিরোজ আলমের অভিযোগ বোনকে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার চালানোর জন্য লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফিরোজ আলম বলেন, ‘বিগত ৫ বছর আগে আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় (বর্তমানে কাতার প্রবাসী) মুক্তার হোসেনের সাথে আমার একমাত্র বোনের বিবাহ হয়। বিয়ের পর বছর খানিক তাদের সংসার ভালো চললেও পরে বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুক দাবী করে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরের স্ত্রী (জা) আমার বোনের ওপর বিভিন্ন ভাবে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। তাদের পারিবারিক কলহ নিয়ে একাধিক বার বৈঠকও হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল রবিবার বিকেলে আমার বোন আমাদের বাড়ি থেকে তার শ্বশুর বাড়িতে যায়। সন্ধ্যায় খবর আসে আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। আমরা গিয়ে দেখি তারা আমার বোনকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ফ্যানের সাথে তার  দেহ ঝুলিয়ে রাখে। আমরা গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
করেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জানান, মুন্নীর লাশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে লাশ থানায় নেওয়া হয়। পারিবারিক কলহে এমনটি হতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করলেও মুন্নীর পরিবার দাবী করছে শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে খুন করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতেছে। তবে লাশের ময়নাতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে জানান তিনি।
জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নিবাস কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘গতকাল রাতে (রবিবার) খবর পেয়ে আমরা নিহত রোখছানা আকতার মুন্নির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। আজ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মর্গে প্রেরণ করা হবে। ঘটনার পর থেকে মুন্নির শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।’
পলাতকদের আটক করতে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।