যবিপ্রবির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

অবিলম্বে সামঞ্জস্য রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভর্তি পরীক্ষার পারিতোষিকের হার বৃদ্ধিসহ আটটি দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দাবি পূরণ না হলে আগামী শনিবার থেকে কর্মবিরতিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তারা।

আজ বুধবার সকালে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এ অবস্থান ও ধর্মঘট পালন করে। বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনিছুর রহমানকে স্মারকলিপি তুলে দেন। তখন তিনি জানান, বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য দেশের বাইরে, তিনি দেশে ফিরলেই এ সকল দাবির বিষয়ে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

স্মারকলিপিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের ভর্তি পরীক্ষার পারিতোষিক একই সাথে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা না করলে তারা কাজ করার উদ্যম হারিয়ে ফেলবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পারিতোষিকের বরাদ্দের বিষয়ে কোন কিছু না জানিয়ে হিসাব দপ্তরকে চাপ প্রয়োগ করে ব্যাংকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারিতোষিক প্রদান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারিতোষিক দেওয়ার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সমিতিকে অবহিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যশোরে গ্রন্থগারিক দিবস পালিত

স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, বিশ^বিদ্যালয়ের সম্মানিত রেজিস্ট্রার যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি সংক্রান্ত আদেশ দিচ্ছেন। তাঁর এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে বদলির ক্ষেত্রে কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতিকে অবহিত করতে হবে। যে সকল পদে বিজ্ঞপ্তি দিলে আপগ্রেডেশনের কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত রেজিস্ট্রার মাননীয় উপাচার্য মহোদয়কে প্রভাবিত করে ওই সকল পদে নিয়োগ বোর্ড দিতে বাধা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ডিউ ডেট হলেও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপগ্রেডেশন বিলম্বিত হচ্ছে। বি ত হচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। দায় পোহাতে হচ্ছে সর্বোচ্চ প্রশাসনকে। অবিলম্বে এ সকল জট ছাড়াতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের অতিদ্রæত আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় অ্যাক্ট ২০০১-এর ১৫ নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত রেজিস্ট্রার একজন আবাসিক কর্মকর্তা হবেন। কিন্তু তিনি অফিস টাইম ব্যতিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি ছুটি ব্যতিত বিশ্ববিদ্যালয়ে না অবস্থান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম দারুনভাবে বিঘœ ঘটছে। তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের আশু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় অ্যাক্ট ২০০১-এর (খ) নম্বর উপধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, সম্মানিত রেজিস্ট্রার মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল গোপনীয় প্রতিবেদন, রেকর্ডপত্র, দলিলপত্র ও সাধারণ সীলমোহর রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গোপনীয় প্রতিবেদন, রেকর্ডপত্র ও চিঠি ফাঁস হয়েছে। ফলে সবার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ভ‚লুণ্ঠিত হয়েছে। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের দপ্তর থেকে এ ধরনের কর্মকাÐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টের সুস্পষ্ট লঙ্ঘণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট লঙ্ঘণ করার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

স্মারকলিপিতে আরও দাবি করা হয়, রেজিস্ট্রার দপ্তরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিশ^বিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অসাদাচরণ করছেন। তিনি কাউকে কাউকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করছেন, প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় কদর্যপূর্ণ গালিগালাজ করেছেন। যা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপীল সংক্রান্ত বিধির ৫ নম্বর ধারার (ঠ) উপধারার সুষ্পষ্ট লঙ্ঘণ। চাকরি সংক্রান্ত এ বিধি লঙ্ঘণ করায় জনাব মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।

দেশদর্পণ/আরএ/এসজে