বাবা-মায়ের’ অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধাশ্রম

শৈশবে মা তোমার কোলে হইলাম আমি লালন আদর যতœ ভালোবাসায় করলে আমায় আপন, জীবনে যখন পায়নীগো মা সাফল্যের দেখা তুমি আমায় দেখালে পথ সেথায় ছিলো আলোয় ভরা।আদর্শলিপি বইটি আমার ছিলো জীবনের সেরা যেথায় যাই মনে পরে মা তোমার পড়িয়ে দেওয়ার কথা।লিখতে যখন যেতাম আমি হাতটি যেত বাঁকাতুমি আমায় শিখালে মা চক সিলেটে লেখা।

“যখন আমার কেউ ছিলোনা তখন ছিলে তুমি, এখন আমার সব হয়েছে মা পর হয়েছো তুমি”।

আমার ছোট্ট খোকা আজ অনেক বড়
দেখতে তাকে লাগছে ভালো
কিন্তু মায়ের জন্য একটু সময় হয়না যে খোকার।

জীবন যেখানে যেমন-আজও আমরা সেই কিছু নিষ্ঠুর বাস্তবতার হাত ধরে আছি তেমন। শৈশবে সন্তানের একমাত্র ভরসাস্থল ও এক মাত্র আশ্রয়স্থল তার বাবা মা।বাবা বাবা মায়ের হৃদয়ের মনি কোঠায় ঠাই পায় সন্তান, আদর স্নেহ মায়ায় ঘেড়া থাকে তাদের বাধন। পৃথিবীর সকল সন্তানের ক্ষেত্রেই এমন। সন্তান পৃথিবীতে আসার পরে তার মায়ের কোলেই লালিত পালিত হয়, বড় হয়বাবার আদর, স্নেহ, শাসন, আশ্রয় প্রশ্রয় আর মমতায় মাখা ভালোবাসায় তার প্রিয় সন্তান। ছোট্ট খোকা থেকে সময়ের সাথে সাথেই বাবা মায়ের স্নেহ, ভালোবাসা, শাসন নিয়ে বড় হয়ে উঠে সন্তান। কিন্তু দেখা যায় যে! বাবা মা তাদের সন্তানকে লালন পালন, স্নেহ, মায়া মমতা দিয়ে বড় করেছেন! স্বপ্ন দেখেছেন- তার খোকা একদিন বড় হবেন মানুষের মতো মানুষ হবেন, ক্রমষেই ভেঙ্গে যায় সেই স্বপ্ন। যে সন্তানের কাছে তার বাবা মা ছিলো এক মাত্র আশ্রয়স্থল একসময় সেই বাবা’’ মা’’কে বৃদ্ধ বয়সে ত্যাগ করে চলে যান সন্তান, এভাবে হাজারো ঘটনা ঘটে আমাদের এই সমাজে। শতবর্ষী বাবা মা’’কে ফেলে যায় সন্তান রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, কিংবা কোন এক হাসপাতালের সামনে। সেই বাবা’’ মা’’ অবশেষে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেখা যায় অবুঝ শিশুর মতো পেটের দায়ে ভিক্ষা করে নয়তো ঠাই মিলে কোন এক বৃদ্ধাশ্রমে। ঘটে যায় জীবনে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা। এটাই কি বাস্তবতা?

আজ বাবা মা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সন্তানের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করে, বৃদ্ধ বয়সে সন্তান তার বাবা মায়ের কতটুকু প্রত্যাশাই বা করতে পারি?আজীবনের শেষ প্রান্তে এসে বাবা মায়ের কতটুকুই বা চাওয়ার থাকে তার সন্তানের কাছে-?? প্রশ্ন রেখে গেলাম।

বৃদ্ধাশ্রম ও বৃদ্ধের শেষ আশ্রয়স্থল-

বৃদ্ধাশ্রম কিছুসময় হয়ে উঠে একজন বৃদ্ধের বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়স্থল হাজারো কষ্টের মাঝেও পরম মমতায় যে ঘর গড়ে তোলেন বাবা, মাস্বপ্ন দেখেন তাদের সন্তানদের কে নিয়ে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকবেন বলে এক সময় সেই সন্তানরা পিতা-মাতাকে পাঠিয়ে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে। যার কারণে বাবা-মাকে সেই আপন নিবাস ছেড়ে শেষ বয়সে এসে চলে যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রম। নিজের তৈরি আপন বাসস্থানে তারা হয়ে যান পর। যে বয়সে নাতি-নাতনী ছেলে মেয়েদের সাথে হেসে-খেলে সময় কাটানোর কথা, সেই সময় তাদের কাটে, বৃদ্ধাশ্রম বা প্রবীণ নিবাসের অঐ ছোট্ট ঘরে। ভেঙ্গে যায় সন্তানদের কে নিয়ে দেখা সেই সাজানো স্বপ্ন গুলো, বোনা স্বপ্ন গুলোই হারিয়ে যায় কোন এক মায়ার টানে, যে সন্তানদের কে ছোট বেলা থেকে লালন পালন করে বড় করছেন সেই সন্তানরাই তাদের কে পঠিয়ে দেয় আশ্রমের অঐ ছোট্ট ঘরে। খোজ রাখেনা বাবা-মায়ের। একটিবার ভাবেনা বাবা-মায়ের কথা যে কাদের উছিলায় এই পৃথিবীতে এসেছি। আজ কোন স্বার্থের টানে তাদের কে পর করে দিচ্ছি।

◆কিছু প্রশ্নের উত্তর তারা করে ফিরে-যার উত্তরের আমরা দেখা পাইনা-

◆কেন বাবা মায়ের শেষ আশ্রয় স্থল এই বৃদ্ধাশ্রম?
◆কেন বাবা মা’’ তাদের আপন নিবাস ছেরে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যায়?
◆কেন সন্তান তার বাবা মা’’কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠান?
◆ কেন সন্তানের আজ এই নিষ্ঠুর ব্যবহার?
◆ যেই বাবা-মা ছোট বেলা থেকে লালণ পালণ করে বড় করলো সেই বাবা মা’’কে কেন আজ তোমরা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাও?
◆ তবে কি আমরা বিবেকের কাছে হেরে গেছি?এই প্রশ্নের উত্তর কোথায় জানেন?

আমাদের কাছেই এই প্রশ্নের উত্তর- আমরা তো মানুষ-না হয় একটু ভাবুন! চিন্তা করুন।নিজেকে বিবেকের কাঁঠগড়ায় দার করুন, যে কেন এই উপরক্ত প্রশ্ন?সুস্থ মন মানুসিকতা তৈরি করুন, অসুস্থ মন মানুসিকতা নিয়ে সমাজে বসবাস করা যায় ঠিকিই, কিন্তু মানুষের মূল্যায়ন পাওয়া যায়না। যদিও এ প্রশ্নের উত্তর বড়ই করুণ। তার পরেও ভাবুন উত্তর পেয়ে যাবেন।

◆বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসার অভাব-

যে সন্তান বাবামাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারত না, মাবাবাই ছিল যার কাছেসারা জীবনের আশ্রয়স্থল, তাদের মাথা গোজার ঠাই, দেখা যায় বাবা’ মা’’ যখন বৃদ্ধ হয় তখন সে তার বাবা-মাকে নিজের কাছে রাখার প্রয়োজন বোধ মনে করেনা, বাবা-মাকে বোঝা মনে করছে। তাঁদেরকে রেখে আসছে বৃদ্ধাশ্রমে। অথবা অবহেলা ও দুর্ব্যবহার করে এমন অবস্থার সৃষ্টি করছে যেন তারা নিজেরাই ভিন্ন কোনো অবলম্বন করেন। এমনটা কি হওয়া উচৎ বাবা মায়ের সাথে। আপনারা কি বলেন?

এত উন্নতমানের শিক্ষা অর্জন করে, এত শতশত ডিগ্রি সার্টিফিকেট অর্জন করে আমরা কি শিখলাম?আমরা লেখাপড়া শিখে অনেক জ্ঞান অর্জন করি অনেক কিছু জানি আবিস্কার করি, কেউ বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হই, কাদের জন্য? সেই বাবা মায়ের জন্যই তো-কিন্তু সেই ভালো শিক্ষা বাবা মায়ের সাথে কতটুকু আমরা বাস্তবায়ন করি।অর্জন করি সঠিক শিক্ষা কিন্তু বাস্তবতায় পূর্ণতা পায় ভিন্ন দ্বারা, যা বাবা-মা আমাদের কাছে কখনোই প্রত্যাশিত নয়। তারা আমাদের কাছ থেকে পায় একটি অপ্রত্যাশিত বাস্তবতার গল্প।

আমরা যারা বৃদ্ধ পিতামাতাকে অবহেলা করছি, তাদেরকে বোঝা মনে করছি, বৃদ্ধাশ্রমে তাদেরকে ফেলে রেখেছি, আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি? যে মা ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারণ করলো, আমাকে পৃথিবীর মূখ দেখালো গর্ভধারণের কষ্ট সহ্য করলো। রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিলো এতো প্রাথমিক কষ্ট এরপর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত মা আমাদের জন্য কত যে কষ্ট করেছেন, এর কোনো হিসেব নেই। সেই মাকে কি করে বৃদ্ধাশ্রম পাঠাও সন্তান? একটি বার ভেবে দেখেছি- যে মা আমাকে শত যন্ত্রনা সহ্য করে দুনিয়ার মূখ দেখালো, শত কষ্টের পরেও সন্তানের অঐ মলিন মূখ টি দেখে সকল দুঃখ কষ্ট ভূলে গিয়ে, সন্তানের মূখের দিকে চেয়ে পরম মমতায় সন্তানকে আপন করে বুকে জরিয়ে ন্যায়।নিজে ভিজা কাথায় শুয়ে যে সন্তানকে শুকনা কাথায় রাখলো, যে মা তোমাকে ছোটবেলায় বুকে আগলে রেখেছেন, যে মা তোমার বিপদের সময় সারা রাত চোখের পানি ছেরে রাত জাগ্রত থেকে মহান আল্লাহর কাছে কান্না করছে তোমার বিপদ দুর করার জন্য।যে মা তুমি সন্তান অসুস্থ হলে ঘুমান নাই, সারা রাত তোমার খেদমত করেছেন, সেই মায়ের বৃদ্ধ বয়সে তাকে কি করে অবহেলার পাত্র বানিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে ঠেলে দেও? সেই মাকে ভূলে যাও কি করে? বিবেক কে জাগ্রত করো হে আদম সন্তান।

◆ভূলে যাই বাবা-মায়ের কথা-

যে বাবা সারা জীবন স্বপ্ন দেখেছে তার সন্তানের মূখে বাবা ডাক শুনবে বলে, সন্তানের সুখের কথা ভেবে সারা জীবন অনেক কষ্টে উপর্জন করেছেন, দিন রাত প্ররিশ্রম করেছেন, সন্তানকে লেখাপড়া শিখেছেন, সন্তানের ভবিষ্যত গরেদিবেন বলে। ভূলে যাই কি করে সেই বাবার কথা?

◆একজন মা সন্তানকে বুকে জরিয়ে স্বপ্ন দেখেন-

মা ভাবেন, আমার সন্তান আজ পৃথিবীতে আসলো আমার সকল কষ্ট বুঝিশেষ হয়ে যাবে, আমার সন্তান আমাকে মা বলে ডাক দিবে, অনেক স্বপ্ন সাজায় সন্তানকে নিয়ে, আজ আমার সন্তানের ০১ বছর পুর্ণ হলো-আজ আমার সন্তানের মূখে ভাত তুলে দিবো, আজ আমার সন্তানের ০৫ বছর পূর্ণ হলো, আমার সন্তান স্কুলে যাবে। লেখা পড়া শিখবে মানুষের মতো মানুষ হবে, বড় হবে, লেখা পড়া শিখে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে, বড় চাকরি করবে, প্রতিষ্ঠিত হবে।কিন্তু দেখা যায় সেই সন্তান বড় হয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বড় চাকরী জিবি হয়ে বাবা মায়ের খোঁজ রাখেনা।

কারন অহংকারে আমরা পিছু ফিরে তাকাই না। কারন আজ আমি বড় হয়েছি, উচ্চতর সার্টিফিকেট অর্জন করেছি, আমার একটা স্টাটার্স আছে, আমার বাবা-মা তো অশিক্ষিত মূর্খ, এই অবস্থায় আমার বাবা’’ মা’’ আমার সাথে থাকলে আমার মান সম্মান থাকবে না। আমি কারো কাছে আমার বাবা মায়ের পরিচয় দিতে পারবো না।এই ধরনের চিন্তা ভাবনা যাদের তাদেরকে আমি বলবো- ভূল আপনার ভাবনা, উচ্চতর সার্টিফিকেট অর্জন করেও আপনি মূর্খ রয়ে গেছেন।

ভূলে যাবেন না আপনিও কোন একদিন সন্তানের বাবা হবেন আপনার স্ত্রীও সন্তানের মা হবেন, একদিন আপনিও বৃদ্ধ হবেন, একটি ছোট্ট শিশুর মতো কাজ করার শক্তি সামর্থ হারিয়ে ফেলবেন, তখন আপনার সন্তান যেন আপনাদের কে বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠায়।

★আসুন একটু ভাবি হয়তো বদলাতেও পারি-

আজ বাবা-মা বৃদ্ধ তারা তো বৃদ্ধ হয়ে পৃথিবীতে, আসেন নি, শিশু হয়েই এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করেছেন, হে সন্তান ঠিক তোমার মতো যেমনি ভাবে তুমি এই পৃথিবীতে আসছো। তারা তো আমাদের বোঝা ছিলেন না। বরং আমরা সন্তানরাই তো তাদের ‘বোঝা’ ছিলাম। তারা তো কখনো আমাদেরকে বোঝা মনে করেননি। ছোট্ট বয়সে যখন সরিলে শক্তি ছিলো না অর্থ উপার্জন করার সামার্থ ছিলো না, আমাদের কে বোঝা মনে না করে, বুকে পরম মমতার ছায়ায় আগলে লেখেছেন।আমাদেরকে বড় করে তোলার জন্য তারা বিন্দু পরিমাণ কমতি করেননি।
আমি সন্তানের জন্য ঘড় তৈরি করেন, বৃদ্ধ বয়সে সন্তানকে নিয়ে পরিবারের সকলেকে নিয়ে থাকবেন বলে। অথছ সেই ঘড়েই ঠাই পায়না বাবা, মা’ বৃদ্ধাশ্রম হয়ে উঠে থাকার শেষ আশ্রয়স্থল।

কেন?নিজের বিবেকটাকে প্রশ্ন করো?

কিন্তু দেখা যায় অনেকেরই সে সন্তানের
কাছে আশ্রিতা না হয়ে আশ্রয় হয় আপনজনহীন এক বৃদ্ধাশ্রমেশেষ বয়সে মস্ত ফ্ল্যাটের ঘরের কোণেও জনমদুঃখীমা-বাবার এতটুকুও জায়গা মিলে না।

আসলে আমাদের সন্তানদের কাছে বাবা মায়ের বেশি কিছু চাওয়ার থাকে?না।খুব বেসি একটা চাওয়ার থাকেনা যেটা থাকে সেটা হলোশেষ বয়সে আদরের সন্তানের পাশে থেকে, সুখ-দুঃখ ভাগ করার ইচ্ছাআর এ ইচ্ছা নিয়েই প্রতিটি মাবাবা প্রহর গুনতে থাকেন।এক সময় দেখা যায় এই প্রহর গুনতে গুনতেই জীবনের শেষ সময় টুকু চলে যায়। বৃদ্ধ হয়ে গেলে কত বছরই বা বেঁচে থাকেন এই সময় টুকু কি তার আমাদের কাছে ভালো কিছু পেতে পারেন না? এই বৃদ্ধ বয়সের জ্বালা টুকু আপনি সন্তান হয়ে যদি নিতে না পারেন তাহলে ভেবে দেখেছেন কি আপনার বাবা মা’ কি করে আপনার শৈশবে দেওয়া কষ্ট গুলো মেনে নিয়েছেন কার মুখের দিকে চেয়ে স্বপ্ন বুনেছেন? আজ সন্তান হয়ে যে বাবা মা’’কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়েছেন।আপনার বাবা মা কখনোই আপনাদের কাছে এটা প্রত্যাশা করেনি এটা তাদের জন্য একটি অপ্রতাশিত বাস্তবতার গল্প।

তবুও আমাদের মাঝে বিন্দু পরিমান প্রতিবাদ দানা বাঁধে না- তাহলে হয়তো বাংলাদেশের বৃদ্ধাশ্রমে কোন বৃদ্ধ তার ছেলে সন্তান কে রেখে জীবন পার করতো না।আজ যারা বৃদ্ধ তারা নিজেদের জীবনের সব সময়, ধনসম্পদ বিনিয়োগ করেছিলেন সন্তানের জন্য, নিজের জন্য রাখেননি কিছুই কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের কাছ থেকে এর একটি ক্ষুদ্র অংশও তারা পাচ্ছেন না।

■ আপনাদের উদ্দেশ্যে:-

বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধা আমাদের এই বর্তমান সমাজের সম্মানিত নাগরিক। সুতরাং সেই বাবা মা’’ কে বোঝা মনে না করে সম্মান করতে শিখুন।তাদের কে ভালো বাসুন, আগলে রাখুন, যেমনি ভাবে তারা ছোট বেলায় পরম মমতায় তাদের স্নেহ ভালোবাসা, আদর যতœ করে আপনাদের কে বড় করেছেনসারা জীবনের কর্মব্যস্ত সময়ের পর অবসরে তালিকায় নাম লিখতে যখন বাধ্য হণ তখন তাদের একমাত্র অবলম্বন এই আনন্দটুকুই যে একটি পরিবারেই ছেলে, মেয়ে নাতি নাতনির সাথে আনন্দে দিন কাটাবেন। হয়তো এর জন্যই মানুষ সারা জীবন অপেক্ষা করে থাকে। বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় পাওয়া যায়, সঙ্গীসাথী পাওয়া যায়,বিনোদন পাওয়া যায়, কিন্তু শেষ জীবনের এই পরম আরাধ্য আনন্দটুকু পাওয়া যায় না যার জন্ তারা এ সময়ে প্রবল মানসিক যন্ত্রণা আর ভারাক্রান্ত ও আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন।

যে মাবাবা একসময় নিজে না খেয়েও সন্তানকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন, তারা আজ কোথায় ও কেমন আছেন সে খবর নেওয়ার সময় যার নেই তোমার কিন্তু মনে রেখ সময় অতি নিকটে তোমার নিজের সন্তানও হয়তো একদিন তার সঙ্গে এমনই আচরণ করতে পারে। সুতরাং সাবধান।

আমাদের প্রত্যেকটামানুষের মনে রাখা উচিত,আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের বাবা কিংবা মা।কারো কাছে শশুর কিংবা শাশুরি, আপনার কাছে আপনার শাশুরি যেমন মর্জাদা পাবেন তেমনি আপনার আপন মা’’ সেও আপনার ভায়ের বউরে কাছে তেমনি মর্জাদা পাবেন, সুতরাং- সে শাশুরি হোক, আর শশুর হোক, মা’’ হোক আর বাবা হোক বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধা সবাই কে সম্মান করুন।বৃদ্ধ বয়সে এসে মাবাবারা যখন শিশুদের মতো কোমলমতি হয়ে যান, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার মান ঠিক করুন, সুন্দরতম, পরিবেশ সৃষ্টি করাই আপনি সন্তান হিসাবে আপনার কর্তব্য।আর যেন কখনও কোনো মা-বাবার ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম না হয়, প্রত্যেক বাবা মায়ের ঠিকানা হোক নিজ আবাস স্থল- প্রত্যেক বাবা মায়ের প্রতি রইলো অন্তর অন্তরস্থল থেকে হাজারো সালাম। অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা থাকবে মা’’ বাবা প্রিয়, ভাই ও বোনের জন্য। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তৈরি করুন একটা নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী। এবং বাবা মায়ের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে এই সুন্দর পৃথিবীতে সাফল্যেময় পথে এগিয়ে যান। এটাই প্রত্যাশা। ধণ্যবাদ প্রিয়জন।

লেখক-ও বর্তমান প্রজন্মের সমালোচক
মো: হাসানাত খান

দেশদর্পণ/এইচকে/এসজে